এম আব্দুর রাজ্জাক বগুড়া থেকে : নতুন ধানের মৌ-মৌ গন্ধে যেন মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। কেউ ধান কাটছে। আবার কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে। বগুড়ার শেরপুরে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা বলছে, ৪০ ভাগ ধানই কাটার উপযোগী হয়েছে। আর ১ সপ্তাহের মধ্যে আগে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে।তবে সার, কিটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে হতাশায় রয়েছেন কৃষকরা। এখন শ্রমিক পেলেও পুরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট নিয়েও ভাবছেন কৃষক। এমন পরিস্থিতে কৃষি বিভাগের ভাষ্য, যান্ত্রিক নির্ভর হলে শ্রমিক সংকট থাকবে না। পাশাপাশি খরচও কমে আসবে। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার হেক্টর ধান কাটা হয়েছে। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়। তবে ধান কাটা নির্ভর করে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের শ্রমিকের উপর। এই শ্রমিকরা এসে ধানকাটা মাড়াই শুরু করে এতে শ্রমিকের দাম কম পড়ে। ভবানীপুর ইউনিয়নের ধান চাষী মাহবুব জানান, ১২ বিঘা জমিতে মিনিকেট জাতের বোরো ধান চাষ করেছেন। কাটা মাড়াই শুরু করেছেন ৩ বিঘা কাটা মাড়াই সম্পূর্ণ হয়েছে প্রতি বিঘায় গড়ে ২৪ মণ করে ফলন পেয়েছেন। গাড়ীদহ মডেল ইউনিয়নের বাংড়া গ্রামের ধান চাষী মাহবুবুর রহমান বলেন, এবার পোকার মাকড় বেশি দেখা দিলেও কিটনাশক প্রোয়োগ করার পর তা সেরে গেছে। আমি এবার ৮ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। তবে খরচ বাদ দিয়ে ৩ হাজার টাকা জমিতে থাকবে।
মাগুর গাড়ি এলাকার আতাউর রহমান জনান, আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। তবে ধানের দাম বৃদ্ধি থাকায় প্রতি বিঘার ধান বিক্রি করা হচ্ছে ২২ হাজার থেকে ২৭ হাজার টাকা । গজীউর রহমান জনান ৫ বিঘা আবাদ করছে। ধান চাষে লাভের মুখ দেখেছেন। রংপুর পীরগঞ্জ থেকে আশা শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, ৪ হাজার ৮শ টাকা বিঘায় চুক্তি দিয়েছেন। তারা জমি থেকে ধান কাটা মাড়াই করে দেওয়া পর্যন্ত। ৫ জনে ১ বিঘা করে জমির ধান কাটা মাড়াই করতে পারে। উপজেলার বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিআর-২৮ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৩০ টাকা, মিনিকেট ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা এবং স্থানীয় কাটারী ১০২০ থেকে ১১৭০ টাকা, আতপ ৯০ (সুগন্ধী) ধান ১৯২০ টাকা মণ দরে।শেরপুর উপজেলা উপশহকারী কৃষি জিএম মাসুদ, সময়মত পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করায় ভালো ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দির্শেশনায় ১ ইঞ্চি জমি খালি থাকবে না। এরই লক্ষে কৃষি বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বোরো ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে মাঠে কৃষি কর্মীদের অনেক পরিশ্রম করছেন। এ ছাড়াও চাষীরা বোরো ধানের ফলন ভালো করার জন্য উঠে-পরে লেগেছিলেন। আশানুরুপ ফলন হয়েছে।