কুকুর আমার ভেতরের কুকুরটাকে হয়তো দেখতে পায়;তাই আমাকে আপন মনে করে। চা খেতে যখনই গিয়ে বসি তখনই  এসে গা ঘসে। আমার খুব মজা লাগে বন্ধুদের ভয় দেখে। ওর ভয়ে ওই দোকানে গিয়ে বসতে চায় না। কুকুর আর আমার মানে দুজনের ওপরেই ওরা মহা বিরক্ত, আমাদের  গায়েপড়া স্বভাবের জন্য।
আমার বাসার লোকজনও আমাকে এড়িয়ে চলে। সবাই যে যার ঘরে দরজা এঁটে থাকে। আমি কারো সাথে গল্প ধরলে সে মাঝপথে উঠে চলে যায়। কিন্তু কুকুরটা ভালো মানুষ আমি গল্প ধরলে সে যায় না। আমার দিকে তাকায়। লেজ নাড়ে। আমার গল্প শুনে কী বোঝে সেই জানে,হয়তো  বোঝে আমি একা,আমার গল্প শোনাবার কেউ নেই।
আমি কুকুরটাকে লাইকার গল্প বলি। লাইকা ছিল আমার ভাইয়ের কুকুর। আমার বোনের ছিল একটা ছোট্ট ছাগল। নাম ছিল বুদনা। আর আমার টিয়া পাখি। ওর গা ছিল যেমন সবুজ ঠোঁটটা তেমন লাল,যেন আস্ত একটা বাংলাদেশের পতাকা। তবে তখন বাংলাদেশের জন্মই হয়নি। আমরা পতাকাও দেখিনি। একদিন পাখিটা পালিয়ে গিয়েছিল। কে যেন ওর খাঁচার দুয়ারটা খুলে দিয়েছিল। তখন বুঝিনি কাজটা কার। কিন্তু এখন মনে হয় ওর খাঁচা খুলে দেয়ার বুদ্ধিটা মায়ের। আমি পাখিটার জন্য রোজ খাঁচা খুলে বসে থাকতাম। কিন্তু সে আর ফেরেনি।
খুব ভালবাসলে হারানো জিনিস হয়তো অন্য ভাবে পাওয়া যায়। সে হয়তো অন্য রূপ নিয়ে ফিরে আসে। নতুন রূপের সেই তাকে কিন্তু আপনাকে তখন চিনে নিতে হবে।
আমি তাকে চিনতে পেরেছিলাম
মানে আমার টিয়াপাখিটাকে ফিরে পেয়েছিলাম 
সে-ও ভীষণ সবুজ আর টকটকে লাল
তবে তাকে আর কখনো খাঁচায় ধরে রাখতে পারবো না রাখতে হবে আকাশে বাতাসে
ওই পাখিটা আমার বাংলাদেশের পতাকা