মন্টুর ঈদের জামা
- জাকিয়া রহমান
চাঁদ রাতের কাজের তাড়া শেষ হলে-
মন্টু বড় আশায় বিছানায় ধায়, শান্ত ঘুমের তরে।
মা সাজেদা আসেনি তখনও শুতে,
ছেঁড়া কাঁথাটা পেতে রেখেছিল রাত দশটার পরে।
বারান্দার মেঝেতে কাঁথায় গা এলিয়ে,
মন্টু ঘুমাবে ক্লান্ত দেহে মায়ের বুকে মুখ গুঁজে।
ছেলেটার নেই কোন অবসর সারাদিন!
ক্লান্ত সে খেটে হাজার ফরমায়েশ, মায়ের সান্নিধ্য খুঁজে।
নেতিয়ে পড়ে ছেঁড়া কাঁথাটার ‘পরে,
মা সাজেদা বড় ব্যস্ত কাজে মন্টু ভাবে একাকী।
মনে এলো সবার ঈদের জামার কথা,
খুকু আপুর জামায় কত আছে তারা আর কত চুমকি!
আপুর জামাটা করছিল আলোয় ঝকমক!
খুকু আপু সে জামা পরবে খুশিতে ঈদের দিনে।
মন্টুর মনটা বড় ভারি নেইকো খুশি,
কেউ দিল না তাকে নতুন একটা ঝকমকে জামা কিনে।
মাকে জিজ্ঞাসিল, নতুন জামা কি পাব?
উত্তর পায়নি, শুধু দেখেছিল জমাট অশ্রু চোখে।
একাকী লাগে, মা এখনো আসেনা কেন?
চাঁদ রাত! কত কাজ! মায়ের কষ্ট দেখে মন কাঁদে দুখে।
মা সাজেদা এলো ঘুমাতে ভোর রাতে
বল মা, কি জামা পরবো ঈদে? জেগে উঠে মাকে বলে।
কয়েক মাস আগেই পেয়েছিস নতুন জামা,
যা আছে পরবি, আমাদের কি আর কিছু ভাবা চলে?
মা সেটার রং হয়েছে ফিকে, নয় ঝক ঝকে!
টাকা কি নেই মা তোর? আমার একটা নতুন জামা কেনার?
তোরও নেই নতুন শাড়ি তাহলে শুধু আমি!
নতুন জামা পরবো কেমন করে, তাই আমারো নেই দরকার।