বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক আজ (২৬ মার্চ ২০২৫) যথাযথ মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস দিবস উদযাপন করে। জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ৭১-এর সকল শহিদ, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, শহিদ বুদ্ধিজীবী ও ২০২৪ জুলাই-আগষ্টে সকল শহিদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং সকল বীরাঙ্গনা, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল স্তরের নেতা-কর্মীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি সকলকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। কনসাল জেনারেল বলেন, ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য, তথা একটি গণতান্ত্রিক ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, ন্যয্যতাভিত্তিক, মানবিক ও আধুনিক দেশ গড়ার জন্য সকলকে সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানান। বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি গতিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্ম যে স্বপ্ন দেখছে তা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবীতে অবস্থানকারী আমাদের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভাই-বোনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি তাদের এ সমর্থন এবং সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার অনুরোধ জ্ঞাপন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে 'বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে' মর্মে তিনি সুদৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ৭১-এর সকল শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২৪ এর জুলাই-আগষ্টে গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এর আগে গতকাল (২৫ মার্চ ২০২৫) কনস্যুলেট জেনারেলে "গণহত্যা দিবস" পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে অন্তবর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা'র সভাপতিত্বে এ বিশেষ দিবসটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কনসাল জেনারেল তাঁর বক্তব্যে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাত্রে ঢাকাসহ সারাদেশে ইতিহাসের যে নৃশংসতম ও বর্বরতম হত্যাকান্ড অনুষ্ঠিত হয়েছিল তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ২৫ শে মার্চের কালরাতে নিরীহ, নিরস্ত্র, শান্তিকামী সাধারণ মানুষের উপড় যে গণহত্যা সংঘটিত হয়, তা পৃথিবীর ইতিহাসে এক ন্যাক্কারজনক অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ২৫ শে মার্চের কালরাতে যে মানবতা বিরোধী অপরাধের সূচনা করা হয়, তারই ধারাবাহিকতায় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা।