মধ্যপ্রাচ্যে তিন দিনের সফরের অংশে হিসেবে সৌদি আরবে পা রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি হতে পারে। সেসব চুক্তির মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের একটি অস্ত্র চুক্তি রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ট্রাম্পের এই সফরে সৌদি আরবের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের মার্কিন অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম কেনার চুক্তি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার সিস্টেম ও পরিবহন বিমান এই প্যাকেজের অংশ। দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবের অন্যতম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ আমেরিকা। কিন্তু ২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসন সৌদি আরবের প্রতিবেশী ইয়েমেন যুদ্ধে দেশটির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিয়াদের আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিলে সেই সম্পর্ক ভেঙে পড়ে। ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডও সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার একটি কারণ। কেননা মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই হত্যাকাণ্ডের অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌদি আরব এটিকে ‘মিথ্যা’ বলে আখ্যা দিয়ে আসছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলছে, এবার সৌদি সফর থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ অর্জনের আশা করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট’-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক অর্থনীতিবিদ ক্যারেন ইয়ং বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ সফরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আরও বেশি বিনিয়োগের ঘোষণা প্রত্যাশা করছেন। তিনি বৈঠকের সময় একটি বড় পোস্টার রাখতে চান, যেখানে বিনিয়োগগুলো কোথায় হতে পারে, তা লেখা থাকবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ঘরোয়া শিল্পের ওপর এই বিনিয়োগের প্রভাব কী হতে পারে, তার কিছু অনুমানও তিনি পোস্টারে তুলে ধরতে চান।’
ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে উপসাগরীয় অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে যে খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা তার এ সফরের মধ্য দিয়ে আবারও স্পষ্ট হলো। এবারের সফরে দেখা গেছে ধনকুবের ইলন মাস্ককেও, যিনি ট্রাম্পের অন্যতম সহযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। উপসাগরীয় দেশগুলোর বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তহবিল থেকে আমেরিকার জন্য নতুন বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে সেটাকে বিশেষ অর্জন হিসেবে প্রচার করবেন ট্রাম্প। দেশে ফিরে তিনি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সাফল্যের কথা প্রচার করতে পারবেন। বিবিসি জানিয়েছে, আগামীকাল বুধবার সেখানে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতাদের এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন তিনি। সেদিনই কাতার সফরে যাবেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরের মধ্য দিয়ে তাঁর তিন দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হবে।