মতবিনিময় সভায় সম্মানিত প্রধান
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশ সরকারে
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গ্লোবাল টিভির প্রধান নির্বাহী
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে
ইউএন উইমেন বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ দিলরুবা হায়দার বলেন, বিকল্প রিপোর্টে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বক্তব্য উপস্থাপিত হয়েছে। সিডও বাস্তবায়ন দায় কেবল সরকারের মহিলা ওশিশু মন্ত্রণালয়ের নয় বরং সকলের মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে এই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি অর্থ বরাদ্দ –এর দিকটিতেও সরকারকে জোর দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সহায়তা দিতে ইউএন উইমেন সবসময় তৎপর থাকবে।
প্রতিবেদননের উপর সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। এতে সিডও সনদের সংরক্ষিত ধারার উপর সংরক্ষণ প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে, বৈষম্য মূলক আইন, প্রথাগত আচার, রীতিনীতি, প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার বিষয়ে,রাজনীতি ও জনপরিসরে নারীর সমতাপূর্ণ অংশগ্রহণ, পাচার ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর অর্থনৈতিক কর্মসংস্থান, এবং নারীর অগ্রগতিবিষয়ে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সুপারিশ উপন্থাপন করা হয়।
বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় বৈষম্যমূলক আইন ও জেন্ডার জাষ্টিস বিষয়ে আলোচনা করেন স্টেপস এর নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার। তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র সিডও সনদের উপর এখনো সংরক্ষণ বহাল রেখেছে। বলা হচ্ছে সমাজ প্রস্তুত নয় যা সংবিধান সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদনের মাধ্যমে সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে , নাগরিকদের নিকট দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি আহ্বান করেন।
পাচার এবং পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, সমাপনী মন্তব্যের আলোকে কমিটমেন্ট বাস্তবায়নে আমাদের জোর দিতে হবে, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাজে সমন্বয় থাকতে হবে, পাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
একশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণে এখনো নানা বাধা আছে। জনজীবনে ও রাজনীতিতে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকটি দেখতে হবে। সিডও সনদের উপর সংরক্ষণ থাকায় নারী এখনো দ্বিতীয় স্তরের নাগরিক। এই সংরক্ষন তুলে দিয়ে বাংলাদেশের আগামী উন্নয়ন পরিকল্পনায় এবং নারীর সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জোর দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন সিডও কমিটিকে প্রতিবেদন প্রদানে হালানাগাদ তথ্য উপাত্তের বিষয়ে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে। বিনিয়োগ যথাযথ হতে হবে। এজন্য সক্ষমতা তৈরি ও বৃদ্ধিতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। কোভিডে বাল্যবিয়ের কারণে ঝড়ে পড়া কন্যাশিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার্ উদ্যোগ নিতে হবে। সিডও সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নে সমাজকে প্রস্তুত করেই ছাড়বো- এমন মনোভাব নিয়ে সরকারকে সনদ বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
নারীপক্ষের সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুন-নাহার প্রথাগত আচরণের কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বলেন এর মাধ্যমে বৈষম্য জিইয়ে রাখা হয়েছে। প্রথাগত বৈষম্য বন্ধে আইন বাস্তবায়নে সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
ডিজএবলড ওয়েরফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা আহমেদ বলেন, বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন নারীদের শিক্ষা সম্পন্ন করতে ও চাকরির প্রস্তুতি গ্রহণে এবং কাজ করতে যেয়ে এখনো নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তারা সহিংসতার শিকার হলেও তারা সুষ্ঠু প্রতিকার পায়না। প্রতিবন্ধী গোষ্ঠীর নারীদের জন্য প্রদত্ত ভাতা এখনো সম্মানজনক না।
আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা বলেন, ২০১৬ থেকে ২০২২তে এর মধ্যে ভূমির কারণে আদিবাসীদের উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে আদিবাসীরা নানা হুমকির শিকার হচ্ছে। এর নিরসনে কাজ করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীউইমেন ফর উইমেনের সভাপতি, দীপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান ।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মো
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু সিডও সনদের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলেন, সিডও দলিলটি নারী আন্দোলনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার অষ্টম প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর সিআইসি বিডি ও নাগরিক সমাজের উদ্যোগে নবম বিকল্প প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের উপর সুপারিশ তৈরি করা করা হয়েছে। তিনি এসময় বলেন সকলের জন্য সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে , নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনে উপস্থাপিত সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন ।
উক্ত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, পররাষ্ট্রমন্ত্রণা
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।