অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।  বুধবার (২১ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেই সময় ড. ইউনূস পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা চান।

  বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।  শফিকুল আলম বলেন, আমরা বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জানি যে শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর টাকা পাচার হয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাড়িঘর করেছেন। পাচার হওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায়, সেই বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ড. ইউনূস। সরকার পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এনে দেশ পুনর্গঠনের কাজে লাগাতে চায়।   বুধবার ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ছাড়াও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের মতোই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি  

বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, ড. ইউনূস যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, তা জাপানের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যে রিকনস্ট্রাকশন হয়েছে, সেটির সমতুল্য। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার পুনর্গঠন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।   বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হল দোয়েলে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব হিসেবে শফিকুল আলম। এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি যমুনায় ড. ইউনূসের সঙ্গে জাপানি রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎ করেন।   ৩টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অর্থনীতি। বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের অর্থনীতি ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে জাপানের মানুষের যে সম্পর্ক সেটি আরও মজবুত হবে।  এ সময় ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশকে রি-কনস্ট্রাকশন করতে প্রচুর ফান্ডিং দরকার। আশা করছি, জাপান বাংলাদেশকে বড় রকমের আর্থিক সহায়তা দেবে।   তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশকে বড় একটি পরিবারের মতো দেখি। মানুষের মধ্যে পার্থক্য আছে, তবে কেউ কারও শত্রু নয়। আমরা সবাই ভাই-বোন।  রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেখতে চাচ্ছে- ইনোভেটিভ কিছু আইডিয়া এবং রিয়েলস্টিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যবহার করতে, যাতে করে তাদের জীবন সহজ হয়। কিন্তু তাদের বিষয়ে মূল সমাধান হচ্ছে, তাদের ফেরত পাঠানো। যেহেতু তাদের ওখানে এখানো অস্থিরতা চলছে, তাই জাপানের কাছে আশা করছি, তাদের সাহায্য অব্যাহত থাকবে।