'আমার জান্নাত-আলামিন এতিম হয়ে গেলো রে। আমি কার কাছে স্বামী হত্যার বিচার চাবো? তারে কেন গুলি করে মারলো? হোটেলে যাচ্ছিলো, সে তো আন্দোলনে যায় নাই' এ ভাবেই আহাজারি করছিলেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ঢাকায় নিহত আব্দুল গণি শেখের স্ত্রী লাকী আক্তার।      লাকী আক্তার বলেন, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) গুলশান-২ নম্বর শাহজাদপুর বাঁশতলা হয়ে তার স্বামী আব্দুল গণি শেখ (৪৫) কর্মস্থল সিক্সসিজন নামক আবাসিক হোটেলে যাচ্ছিলো। এ সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে পড়ে যায়। তখন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।   নিহত আব্দুল গণি রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে।

 জানা গেছে, শুক্রবার সকালে গুলশান ২ নম্বর এলাকার কর্মস্থল আবাসিক হোটেল সিক্সসিজন থেকে জরুরী ফোন পেয়ে গোপীবাগ উত্তর বাড্ডার বাসা থেকে বের হন আব্দুল গণি শেখ। যাবার পথে তিনি শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে তার মাথার ডান পাশে গুলি লেগে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। নিহত আব্দুল গণি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ঢাকায় হোটেলে কাজ করতেন।    

এ ঘটনায় গণির গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী লাকী আক্তারকে সান্ত্বনা দেওয়ায় ভাষা তারা খুঁজে পাচ্ছেন না স্বজনরা।  নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে এক স্বজন বাড়িতে ফোন করে জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল গণি মারা গেছেন। ওই দিন সকালে মোবাইল ফোনে তার স্বামী জানিয়েছিলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকার আন্দোলনের পরিস্থিতি ভালো না। তাই গ্রামের বাড়ী রাজবাড়ীতে চলে আসবেন। এ সময় দ্রুত হোটেলে যেতে তার অফিস থেকে ফোন করা হয়। আর তিনি হোটেলে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ হত্যার দায় কে নিবে, এখন আমার ছেলে-মেয়ে আর সংসারের দায়িত্ব নিবে কারা? আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।