স্বাধীনতা দিবসের উপ্যাখান

- জাকিয়া রহমান 

 

সেদিন ছিল ২৫শে মার্চ! 

মধ্য রাতে আন্ধকার ভাঙ্গলো- 

আগুনের লেলিহান শিখার প্রদাহে  

চারদিকে বিস্ফোরিত আগ্নেয়াস্ত্রের আওয়াজ উৎকট!  

বাতাস আচ্ছাদিত ধূম্রজালে  

আর মানুষের পোড়া দেহের গন্ধ।  

মৃত্যুর ক্রোড়ে ঢলে শিশু শ্বাস কষ্টে-   

দিগন্ত বিদারী জুলুমবাজের রোষে।   

সন্তানহারা মায়ের মর্মভেদী ক্রন্দন!   

 

হানাদারের দূষিত কৌশল ফেলেছিল ফাঁদ 

কত ষড়যন্ত্রের- কেড়ে নিতে ভাষা, বাকস্বাধীনতা

আর মানুষের মতো বাঁচার অধিকার  

 

সেদিন ২৫শে মার্চ! 

হানাদারের লোভ পরিণত হয়েছিল জিঘাংসায়

এলো পাথাড়ি আগ্নেয়াস্ত্রের আক্রমণ- 

জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়েছিল নির্দোষ অসহায় মানুষ     

হেরে যাবার মুহূর্তে যেমন মাতে দিশাহীন আগ্রাসী!

 

সেদিন দেশমাতার আর্তচিৎকারে উচ্চারিত হয়েছিল, 

বাংলার সন্তান সামনে রুখে দাঁড়া! এরা নিমকহারাম! 

শুষেছে আমাদের দেয়নি সম অধিকার- 

কেড়ে নিয়ে সম্পদ বদলে দিয়েছে প্রভেদতা  

ওরা আমাদের কেউ নয়! ওরা ঘাতক!  

ওরা এসেছে আমাদের সব ছিনিয়ে নিতে 

সম্মুখে তোদের আত্নবিসর্জনের পরীক্ষা!  

 

সে আহ্বানকে আজ্ঞা মেনে গর্জে ছিল রাত ভোরে 

বঙ্গবন্ধুর উত্তর, 

আজ ২৬শে মার্চ! আমাদের দেশ আজ থেকে স্বাধীন!

স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হবেই নিশ্চিত!   

মায়ের সন্তানেরা নেমে পড়ো যুদ্ধে!   

দেব না ওদের ছিনিয়ে নিতে আমাদের দেশ!   

 

সে প্রাতে রক্তলাল সূর্যের অঙ্গীকার দিয়েছিল

আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার শক্তি  

বুঝতে পেরেছিল বাঙালি, সার্বভৌমত্ব কি?      

আমরা আমাদের মাটির কদর করতে চাই! 

আমার ভাষার কদর করতে চাই!  

আমাদের সবুজ বাংলাদেশ হাসিল করতে চাই!  

জেগে উঠবে বিশ্বের মাঝে আমার নতুন বাংলাদেশ!    

মুক্তি আমাদের আসবেই সে আশায় 

যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ছিল বাঙালির সমস্ত সত্বা