সামিমুন নাহার হুসনার নতুন কবিতাগ্রন্থ সরোবরে ফোটে পদ্ম। একজন তরুণ কবির আবেগ ও উচ্ছ্বাস থাকে প্রবল। সে জীবন ও জগতকে ছুঁয়ে ছেনে দেখতে চায়। একজন নারী হিসেবে তার দৃষ্টিতে জগৎ ও জীবন, প্রকৃতি ও প্রণয় নতুন অনুভাবনায় ধরা দিয়েছে। নজরুল নারীর অধিকার প্রশ্নে অটল ছিলেন। ১০০ বছর আগে লেখা তার নারী কবিতাটি এখনো প্রাসঙ্গিক-বিশ্বে যাকিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। নরনারী যৌথ প্রযোজনায় পৃথিবী চলছে সামিমুন নাহার হুসনা সে কথা বিশ্বাস করেন মনে প্রাণে। তার কবিতার কয়েকটি লাইন - নারীরা মায়ের জাতি সম্মোহনী চোখের চাহনিতেচিরকাল দুলে ওঠে সন্তানের হৃদয় সন্তানের সত্তা, স্বপ্নের জগৎ।
এই চারটি চরণ আমাদের জানান দেয় হুসনা সন্তান সংসার, মাটি মানুষ, প্রেম ও প্রকৃতিকে গভীরভাবে ভালোবেসেছে। মাতৃভাষা, মাতৃহৃদয়, মাতৃভূমি- এই তিন পবিত্র শব্দে হুসনা দায়বদ্ধ। মাটিই মা। সন্তানই শস্য। মাতৃভূমিই ঈশ্বরী। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক অগ্রগতি সবকিছুর নিয়ামক প্রেম। চিরায়ত প্রেমের ফল্গুধারা হুসনুর কবিতাকে উৎকর্ষ দিক। বাংলার নদী মাঠ বনানী কবির আত্মজা। অনেক ত্যাগ ও আবেগের উৎসারণে কবিতার সরোবরে পদ্ম ফোটে।
-----
২১' আমার গর্ব
কোকিলের কুহু কুহু ডাক জানিয়ে দেয় বসন্ত এসেছে,
শিমুলের ডালে ডালে লাল রং জানিয়ে দেয়, বসন্ত এসেছে।
ভাই হারানোর ব্যথা আর বিসর্জনের সুখ জাগানিয়া
সেই একুশ ফিরে এসেছে
সংগীতের বিষাদময় সুর-মূর্ছনায়
রাতের নিস্তব্ধতা যখন ভেঙে যায়,
তখন হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়
ফাল্গুনের বাসন্তী মধ্যরাতে
শহীদ মিনারে নামে জনতার ঢল,
বসন্তের মৃদুমন্দ দখিনা হাওয়ায় প্রভাতফেরীর ফুলে ফুলে ঢেকে যায়
শহীদ মিনারের বেদিমূল।
মনে আসে বারবার গৌরব
আর বেদনা-বিদীর্ণ শোকের দিন আজ
সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করছে বীরত্বের উত্তরসূরিরা...
সালাম বরকত রফিক জব্বার
বাংলার আকাশে-বাতাসে
তোমরা থাকবে আজীবন।