এবারও অসহায় আত্মসমর্পণ সাকিবদের পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রিকেট ম্যাচের বাইশ গজের লড়াইয়ে বাংলাদেশ জেগে উঠবে। অন্তত আর যাই হোক, দেওয়ালে ঠেকে যাওয়া পিঠ সরিয়ে সামনের পথে হাঁটবে সাকিবরা। সেই ক্ষীণ সম্ভাবনাও ডুবিয়েছেন বাংলার ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারল। এবারও ব্যাট, বল কিংবা ফিল্ডিং কোনটাতেই বাংলাদেশ মন সান্ত্বনা পায়, এমন খেলা খেলতে পারেনি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ৭ ম্যাচ শেষ। হাতে আছে ২ ম্যাচ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে হলে আগামী দুই ম্যাচ জিতেই হবে। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য সমীকরণে। পাকিস্তানকে হারাতে পারলে আর আগামী দুই ম্যাচ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করতে হতো না।কাল রাতে কলকাতায় ইডেন গার্ডেন্সের মাঠে বাবর আজমদের সামনে সাকিবরা অসহায় হয়ে গেল। টস জিতে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে ২০৪ রান করে, ৪৫ ওভার ১ বল খেলে অলআউট হয়। মাহমুদউল্লাহ এদিনও সফল, তিনি ৭০ বলে ৫৬ রান করেন। আর লিটন দাস (৪৫) ও সাকিব আল হাসান (৪৩) হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। পাকিস্তানের তিন পেসার বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিয়েছেন। ২০৫ রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই পাকিস্তানের দুই ব্যাটার ১২৮ রান করে খেলাটা জয়ের বন্দরে নিয়ে যায়। বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তান ছিল নড়বড়ে অবস্থানে। সেই পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারিয়ে এখন আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। খেলার শেষে অধিনায়ক বাবার আজমের মুখে হাসি দেখে ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা বলছিলেন, ‘অনেক দিন পর হাসছো।’     নিজেদের ব্যর্থতার কথা মেনে নিয়েছেন সাকিব। খেলা শেষে সাকিব বলেন উইকেটটা সত্যিই ভালো ছিল। তবে আমরা শুরুতেই উইকেট হারিয়েছি। কিন্তু বড় পার্টনারশিপ করতে পারেনি। আমাদের আরও ভালো বোলিং করা উচিত ছিল।পাকিস্তান প্রথম ১০ ওভারে ভালো করেছে, কৃতিত্বও তাদের। আমাদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ভাবতে হবে। আমি তাড়াতাড়ি ব্যাটিং করছিলাম, রান করতে পারিনি। আমার আত্মবিশ্বাসও কম ছিল। আমরা কিছু করার চেষ্টা করছি কিন্তু কাজ করছে না। এই মুহূর্তে, আমাদের একসঙ্গে পারফর্ম করতে হবে, কিন্তু সেটা পারছি না। কেন পারছি না তা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি তবে তার উত্তর পারছি না।’  অসহায় আত্মসমর্পণের আদর্শ উদাহরণ যদি দিতে হয় তাহলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইডেন গার্ডেন্স যে একপেশে ম্যাচের সাক্ষী থাকল, সেটা থাকবে ওপরের সারিতে। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত আশানুরূপ কিছু করেনি ঠিকই, কিন্তু মঙ্গলবারের বড় ম্যাচে অন্তত শাকিবরা জ্বলে উঠবেন—সেই আশায় ওপার বাংলার বহু ক্রিকেটপ্রেমীই বুক বেঁধেছিলেন।শহর কলকাতার কয়েক হাজার দর্শক এদিন গলা ফাটিয়েছেন বাংলার টাইগারদের হয়েই। ওপার বাংলা থেকেও এসেছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু হায়, কারো সমর্থন, কারো প্রাণ উজাড় করা ভালোবাসা, গলা ফাটানো কোনো কিছুই কাজে লাগল না। সাকিবরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে গেলেন। বলা ভালো, ডুবে গেলেন আরও অতল অন্ধকারে। পাকিস্তান শুধু জিতল তাই নয়, সেই সঙ্গে অনেকটা শুধরে নিলেন নিজেদের নেট রান রেটও।   এমনিতে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে খেলার অঙ্ক দুরূহ। যে দূরতম সম্ভাবনা আছে, সেটাও বেঁচে থাকবে নিজেদের শেষ সবকয়টা ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিতলে। সেই শুরুটা শাকিবদের বধ করেই করল বাবর আজম ব্রিগেড। পাকিস্তান জিতল ৭ উইকেটে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণভাবে ১০৫ বল বাকি থাকতে জয় ছিনিয়ে নিল পাক দল।