কুষ্টিয়ায় প্রতি বছরই ঈদ এবং ঈদ-পরবর্তী সময়ে বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সিফাতুল আলম সিপুসহ ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৩ এপ্রিল) শেষ রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে আরো পাঁচজন। এসব মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মৃত ব্যক্তিদের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা এলাকার মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে মো. শাহিন (৪৪), মিরপুর উপজেলার মশান বারুইপাড়া গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে মো. রতন (২১) ও ভেড়ামারা উপজেলার রকিবুল আলমের ছেলে সিফাতুল আলম সিপু (২৩)। জানা যায়, ঈদের আগের দিন রাতে কোনো এক সময় অ্যালকোহল জাতীয় বিষাক্ত পানীয় পান করেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও রুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৮ জন। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের রবিবার রাতে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে। সোমবার সকালে জানা যায়, এদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। বাকিরা গুরুতর অসুস্থ।
কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, রবিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন ৮ জন। তাদের সবার শরীরে বিষাক্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে অ্যালকোহল জাতীয় বিষাক্ত পানীয় পান করেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি শাহাদৎ হোসেন এ বিষয়ে জানান, বিষাক্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পান করে কুষ্টিয়ার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। কোথা থেকে কীভাবে অ্যালকোহল পান করেছেন তারা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সিফাতুল আলম সিপুর মরদেহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, সিফাত কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও রুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী। তিনি স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন। অ্যালকোহল পানে নয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা সিফাতের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার কুচিয়ামোড়া এলাকায়। ঈদের আগের দিন (চাঁদ রাতে) সিফাত গোলাপনগরের সোলাইমান শাহ্রে মাজার এলাকা থেকে অ্যালকোহল পান করে। তারপর থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রবিবার রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে।