জওয়ান সিনেমাটাকে আমার মনে হয়েছে অনেকটা দেশি থালির মতো, রুচি অনুযায়ী স্বাদ মেটানোর জন্য এটিতে সব ধরণের উপাদানই ছিল।সেই সাথে রোমান্টিক ইমেজ থেকে অ্যাকশন হিরো এসআরকের পুনর্জন্ম মন কেড়ে নিবে সবার এই সিনেমা দেখলে! সবমিলিয়ে শাহরুখ ভক্তরা বা যারা তাকে পছন্দ করেন না তারাও নতুন করে নতুন ভাবে এই ভদ্রলোকের প্রেমে পড়তে বাধ্য!

পিতৃত্ব এবং নারী শক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে, জওয়ানের সবচেয়ে বড় রূপ হল তার ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিবৃতিগুলিকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা। ‘বেটে কো হাত লাগানে সে প্যাহলে, বাপ সে বাত কর। বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বিষযুক্ত এই ধারালো ডায়লগ তীরের মতই বেঁধে যাবে সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের বুকে।এই ডায়লোগ শাহরুখের ছেলে আরিয়ানের পক্ষে ও সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধেই যেন রুপঅর্থে স্হান পেয়েছে! সেজন্য সংলাপটা এত বেশী করে হৃদয়ে গেঁথে দিয়েছে ! এই সিনেমা দিয়ে একঢিলে শাহরুখ দুইপাখি মেরে দিয়েছেন।সমঝদারদের জন্য অনেক ম্যাসেজ ও ছুঁড়ে দিয়েছেন। শাহরুখই তাঁর সন্তানের রক্ষাকবচ হয়ে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন সাথে যুক্ত করেছেন শাহরুখের ছেলের মতই নোংরা মিথ্যা পলিটিক্সের শিকার হয়ে ফেঁসে যাওয়া বলিউডের সবচেয়ে দুর্দান্ত অভিনেতা আমার প্রিয় বাবা সন্জুবাবা! সিনেমায় গেস্ট হয়েও ওয়ান এন্ড অনলি সন্জয় দও বুঝিয়েছেন তিনি অনপ্যারাল্যাল! অন্য দিকে শাহরুখের কিলার লুক, অ্যাকশন দৃশ্য এবং আবেগে পর্দায় আগুন ধরিয়েছে! আমার কাছে সান্জুবাবাকে শাহরুখের সাথে একই সিনেমায় দেখে ভাল লেগেছে ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দের মত মনে হয়েছে! এই সিনেমার ক্যাসটিং দি বেস্ট ! সিনেমার নায়িকাকে দেখে মাথা ঘুরেছে এত স্মার্ট নায়িকা বলিউডে একটাও নাই ! দারুন সাবলীল অভিনয় নায়িকা পুরোই এই সিনেমার জন্যই পারফেক্ট! দিপিকা সবসময়ই দি বেস্ট এই সিনেমায় তেও ওর অভিনয় যেমন মন ছুঁয়ে গেছে তেমনভাবেই চোখ ঝলসে গেছে ওর দেখার মত চেহারা আর গেটআপ দেখে! ছবির গল্পে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা, শুধু দর্শক হিসেবে নয়, দেশের সাধারন নাগরিক হিসেবেও সকলকে মুগ্ধ করবে নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে শিখাবে !’জওয়ানের’ চিত্রনাট্যের প্রথম ৪৫ মিনিটে এত মনকারা গল্প রয়েছে, যা বহু ছবিতে তিন ঘণ্টা কাটানোর পরেও পাওয়া যায় না। শাহরুখের চরিত্রগুলিকে অ্যাটলি তাঁর ট্রেডমার্ক স্টাইলে পর্দায় দুর্দান্ত উপস্থিতি দিয়েছেন।

অবাক হয়েছি এতগুলো বছরে কেউ চিন্তাও করতে পারেনি শাহরুখকে এভাবে পর্দায় আনা যেত ! রবিচন্দরের প্রাণবন্ত সঙ্গীতের মাধ্যমে এই চরিত্রগুলি এমন উচ্চতা পায় যা, নায়ককে শুধু বাস্তবের চেয়ে বড় করে না, সিনেমার পর্দার চেয়েও বড় করে তোলে। জওয়ানের মত এমন সিনেম্যাটিক বিস্ময় দর্শকদের উপহার দিয়েছেন দক্ষিণের ফিল্মের ডিরেক্টর আ্যাটলি। ছবিতে একটি গানের সঙ্গে অ্যাটলিও নেচেছেন। জওয়ান কারও চোখ স্ক্রিন থেকে সরতে দেবেনা। এমন অভূতপূর্ব নির্মাণ অ্যাটলি কিভাবে করলেন সেটা ভাবতে গেলেই মাথা হ্যাং হয়ে যাবার যোগাড় হচ্ছে।জওয়ান মূলত হাই টোনড অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার ছবি।ইমোশনাল দৃশ্যে চোখ থেকে পানি এমনিতেই ঝরে পরবে।তবে সিনেমাটিতে প্রচুর গাঁজাখুড়ি গোঁজামিল ও আছে কিন্তু তাকেও সেই রকম হাই লেবেলের করেই তা দেখানো হয়েছে যা ট্রিপিক্যাল হিন্দি মুভিতে দেখা যায় না!

কোন সন্দেহ নাই সাউথের পারফরমাররা উচ্চমাত্রার ট্যালেন্টেড।ডিরেক্টরেরা হলিউডের মতই হাই ক্লাসের গাঁজা খাওয়াতে পারেন যা খেলেও অন্য রকমের আনন্দ পাওয়া যায় ! বলিউডের অন্যান্য সিনেমা বিশেষ করে কয়দিন আগে দেখে হতাশ হওয়া পাঠানের মত সস্তা লেবেলের গাঁজার প্রভাবে বদ হজম হয়নি একটা অদ্ভুদ ভাললাগার ঘোর নিয়েই বাড়ী ফিরে আসার এতক্ষণ পরও বারবার মনে হচ্ছে ইশ্ যদি ওই রকম একটা জেলে যেতে পারতাম সেই জেলে আজাদের মত জেলার থাকলে আমিও ওদের সাথী হতাম ! এধরনের ফিলিংস আমার ঘায়েল আর রং দে বাসন্তি দেখেও হয়েছিল। মাঝে মাঝে সস্তা প্রেমের চেয়ে সিস্টেমে অনিয়ম, করাপশন সমাজের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে বানানো যে কোন সিনেমাই আমাকে বেশী টানে ! জাওয়ান টু দেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম 🥰❤️💝❤️