জনপ্রিয় ভারতীয় লেখক পৃথ্বীরাজ সেনের ৬৭ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালী। কলকাতার গোলপার্কে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অব কালচারের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত পৃথ্বীরাজ সেনের ৬৭ তম জন্মবার্ষিকীর সাহিত্য উৎসবের অনুষ্ঠানমালা চলছে ৫দিন ব্যাপী। ১৩ ডিসেম্বর ছিল সাহিত্য উৎসবের ২য় দিন। উল্লেখ্য, পৃথ্বীরাজ সেন পশ্চিমবঙ্গের একজন সব্যসাচী লেখক। নানা বিষয়ে লিখেন। মৌলিক ও অনুবাদ মিলিয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুই হাজারের কাছাকাছি।
জন্মদিনে লেখকের সাথে হুমায়ূন কবীর ঢালীর কথা হলে পৃথ্বীরাজ সেন জানিয়েছেন, আসন্ন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা উপলক্ষে তাঁর ১২৫ টি বই বেরুচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, অনুবাদ, ছোটদের ও বিজ্ঞানের বই। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে একজন লেখকের পক্ষে এত বই লেখা কী করে সম্ভব! সম্ভব। কেননা, তাঁকে বলা যায় লেখালেখির একজন ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালিস্ট। তিনি প্রতিদিন টানা ৬ ঘণ্টা ল্যাপটপ খুলে লেখা বলে বলে রেকর্ড করেন। সেই মুখে বলা লেখার রেকর্ডিং শুনে স্ক্রিপ্ট লেখেন নির্বাচিত প্যানেলে থাকা পাঁচজন কলমচি। এরপর ছাপতে যায়। ‘গিনেসে নাম প্রত্যাশী’ লেখক পৃথ্বীরাজ সেনের এটাই রোজকার রুটিন।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে যদি তালিকাভুক্ত হয়ে যান, তাহলে একজন বাঙালি লেখক হিসেবে তাঁর নাম প্রথম ঠাঁই পাবে। বর্তমানে আমেরিকার জনৈক লেখক ১০৮৪টি বই লিখে গিনেসে নাম রয়েছে। পৃথ্বীরাজ সেন ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় বই থেকেই টেপ রেকর্ডারে লেখা রেকর্ড করেন। এরপর কখনও নিজে লিখতেন, কখনওবা লিখিয়ে নিতেন। ২০১৪ সাল থেকে ল্যাপটপে লেখা রেকর্ড করেন। লেখা ছাড়া সে অর্থে তাঁর অন্য কোনও বিনোদন নেই। তাঁর কথায় ‘টিভি সিরিয়াল দেখি না। চা বা অন্য কোনও নেশা নেই। বলতে পারেন সাধনার জীবন।
আমার নানা বিষয়ে বই ছাপেন ৪০ জন প্রকাশক। হুমায়ূন কবীর ঢালী এই প্রতিবেদককে জানালেন, ‘আমার জন্য আনন্দের বিষয় হচ্ছে, আজকের অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলাম আমি। আমার জন্য এ এক অনন্য প্রাপ্তি। আজকের অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল ‘’আলোকিত অন্দরমহল’। ৩০জন নারীর জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার গল্প। এঁদের সবাই শিল্পসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতের। নারীদের জীবন সংগ্রামের গল্প শুনে আবেগআপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক, গুণী এই লেখকের সান্নিধ্য লাভ ও তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানের একজন সারথী হতে পেরে আমার লেখক জীবনের একটি অনন্য উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে। শ্রদ্ধেয় পৃথ্বীরাজ সেন ও কবিবন্ধু মানিক পণ্ডিতসহ অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা।’