এম আব্দুর রাজ্জাক,বগুড়া থেকে:
মাওলানা নামের কিছুু ধর্মান্ধরা বলে থাকেন নবান্ন হচ্ছে হিন্দুদের জন্য। মুসলমান ধর্মের মানুষদের এটা পালন করা জায়েজ নয়। ওদের এ ধরণের কথা যে মন গড়া এবং ধর্মবিদ্বেসী তার প্রমান মেলে বাংলা অগ্রহায়ন মাসের প্রথম দিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে স্বচক্ষে দেখলে। (১৬ নভেম্বর শনিবার )সকাল থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নিমাইদীঘি, শালগ্রাম, কালাইকুড়ি, সাগরপুর, কাল্লাগাড়ী, কৈকুড়ি, চক সোনার, কোমারপুর, কোমারভোগসহ বেশ কিছু গ্রামে ঘুরে দেখা গেল এ সব গ্রামে কোন হিন্দু ধর্মাম্বলী নেই। কিন্তু আছে বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব।
এ উৎসব পালন উপলক্ষে প্রতিটি বাড়ীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি ও আত্মীয়-স্বজন। উৎসবটি পালন করা হচ্ছে ঈদের আমেজের আদলে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ী থেকে বাতাসে ভেঁসে আসছিল উন্নত মানের খাবার বিশেষ করে মহিষ ও গরুর গোস্ত রান্নার সুবাস। নবান্ন উৎসব পালন উপলক্ষে ওই সব গ্রাম সহ আশপাশের বেশ কিছু গ্রামে প্রতি বছরের মত এবারো জবাই করা হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক মহিষ, গরু ও খাসি। নবান্ন উৎসবকে ঘিরে শালগ্রামে গ্রামে রাস্তার মোড়ে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী চুড়ি-ফিতা, আলতা ও বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী এবং জিলাপী, রসগোল্লা, চমচম, বাতাসা ও পাঁপড় ভাজা সহ মূখরোচক নানান পন্যের পাশাপাশি বড় মাছের মেলা।
এ ব্যাপারে উপজেলার শালগ্রামে নবান্ন উৎসবের আয়োজক আলহাজ্ব শেফাউর রহমান সাবু বলেন, কিছুু ধর্মান্ধরা আসলে মিথ্যা কথা বলে ধর্মপ্রান মানুষকে বিভান্ত করে। নবান্ন কোন ধর্মের নয়, এটা বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। পূর্ব পুরুষেরা এ উৎসব পালন করেছে আমরাও করছি। ছেলে-মেয়ে সাথে জামাই আর নাতি-নাতনি ও নিকট আত্মীয়দের নিয়ে নতুন ধানের চালের ভাত গোস্ত খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম। এর সাথে ধর্মের লেজুর জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়। এ বিষয়ে ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও শালগ্রামের বাসিন্দা প্রবীন ব্যক্তি মহিউদ্দীন তালুকদার বলেন, পুর্ব পুরুষের আমল থেকেই এভাবে নবান্ন উৎসব পালন হয়ে আসছে। আর দিন দিন এ উৎসব পালনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোট কথা গ্রাম বাংলায় নবান্ন উৎসব পালন করা হয় অনেকটা ঈদের আমেজের আদলে।