আজ শনিবার (১ জুন) বেলা ১১টায় ‘মোংলা কমিউটার’ ট্রেন খুলনার ফুলতলা হয়ে মোংলার উদ্দেশে যাত্রা করবে।থাকছেনা কোন আনুষ্ঠানিকতা। এতে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুলনা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত চলাচল করে "বেতনা এক্সপ্রেস" নামে একটি লোকাল ট্রেন। সেই ট্রেনটি ফেরার পথে খুলনার ফুলতলা জংশন থেকে মোংলার দিকে যাত্রা করবে। তখন ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ট্রেনটি ‘মোংলা কমিউটার’ নাম ধারণ করে চলবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ১ জুন সকাল সোয়া ৯টায় বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে মোংলার উদ্দেশে। ট্রেনটি পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে ট্রেন চলাচল করবে। এ রুটের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার।
বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা, দিগরাজ হয়ে মোংলায় যাবে। তবে খুলনা থেকে মোংলা অংশে যাত্রাবিরতি থাকবে ফুলতলা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি ও চুলকাটি বাজার স্টেশনে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ৯৬/৯৫ বেতনা কমিউটার ট্রেনটি ফুলতলা-খুলনা-ফুলতলা সেকশনে চলাচল করবে না। ট্রেনটি মোংলা কমিউটার নামে পরিচালিত হবে। ট্রেনটিতে দ্বিতীয় আসন ব্যবস্থা থাকবে। ট্রেনের আসন সংখ্যা ৬৭৬টি। বাংলাদেশ রেলওয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালকুদার জানিয়েছেন, আপাতত বেতনা কমিউটার ট্রেনটি বেনাপোল থেকে মোংলা কমিউটার ট্রেন হয়ে বেনাপোল-মোংলা রুটে চলাচল করবে। পরে আরেকটি রেক দিয়ে এ রুটে ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদনের পর প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। নানা জটিলতায় পাঁচ দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এল অ্যান্ড টি ও ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। দীর্ঘ ৯১ কিলোমিটার নতুন এ রেলপথে রূপসা নদীর ওপর ৫.১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রেলসেতু নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ১১টি প্ল্যাটফর্ম, ১০৭টি কালভার্ট, ৩১টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাসের নির্মাণ সম্পন্ন। এরই মধ্যে চার দফায় পরীক্ষামূলকভাবে চলেছে ট্রেন।