নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের নির্দেশে সম্প্রতি সংগঠনের কার্যকরী পরিষদের শূন্য আসন পূরণ করা হলেও দলের সমস্যার সমধান হয়নি। বরং দলের মধ্যকার বিবেধ-বিভক্তি যেনো আরো বেড়ে গেছে। যার বহি:প্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশে পরারাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি’র নিউইয়র্ক আগমনের দিন। তাকে অভ্যর্থনার সময় তার সামনেই জেএফকেতে চরম বাক-বিতন্ডা, হৈচৈ, ধাক্কাধাক্কি আর হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতে বিব্রত হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর ড. হাছান মাহমুদের এটাই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ সফর। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের শান্তি মিশনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার (২৯ মে) রাতে নিউইয়র্ক আগমন করেন। তার আগমন ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীরা মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জেএফকে আন্তজার্তিক বিমানবন্দরের ৮ নং টার্মিনালে সমবেত হন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ সহ দলীয় অন্যান্য ব্যানারে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী যোগ দেন।
ড. হাছান মাহমুদ টার্মিনাল দিয়ে বের হওয়ার সময় তাকে ফুল দেয়া আর কার আগে কে অভ্যর্থনা জানাবে তা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক বাক- বিতন্ডা, হৈচৈ আর ধাক্কাধাক্কি আর হাতাহাতির মতো ঘটনা ঘটে। এতে চরম বিব্রত হন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। মূলত: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতার শক্তি প্রদর্শনের মহড়া দেখাতেই এমন পরিস্থির সৃষ্টি হয় বলে সংগঠনের একাধিক নেতা এই প্রাতবেদনকে জানান। এসময় জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের শীর্ষ কর্মকর্তারও টার্মিনালে উপস্থিত ছিলেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ড.হাছান মাহমুদ জেএফকে থেকে গাড়ীতে উঠে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জেএফকে বিমানবন্দরের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নেতা- কর্মীদের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন সেখানে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইমাদাদ চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অপর একটি অংশের নেতা এবং দলের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর সহ তার সমর্থকরা। একে পর্যায়ে কোন কোন নেতা একে অপরকে উদ্দেশ্য করে নানা কথা বলেন, কটুক্তি করেন। জেএফকে বিমানবন্দরে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীর মধ্যে আরো ছিলেন সহ সভাপতি ডা. মাসুদুল হাসান, যুগ্ম সম্পাদক দুলাল মিয়া (হাজি এনাম), সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, চন্দন দত্ত, দরুদ মিয়া রনেল, নূরুল আমীন বাবু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শাহ বখতিয়ার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এম এ জাহাঙ্গীর, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ আতিক, কানেকটিকাট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমেদ চৌধুরী, যুবলীগ নেতা তারিকুল হায়দার চৌধুরী, সেবুল মিয়া প্রমুখ।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক ড. হাছান মাহমুদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠান নিয়েও দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ-এর আয়োজনে দলের পক্ষ থেকে ড. হাছান মাহমুদের সাথে মতবিনিময় হবে- এমন তথ্য জানানো হলেও নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী বলছে কেন্দ্র তাদেরকে মতবিনিময় অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছে। এব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানান, দলীয় সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নেতা। তিনি যা চাইবেন, তাই হবে। তাঁর নির্দেশের বাইরে কিছুই হবে নাম আমারাও তাঁর নির্দেশের বাইরে যাবো না। অপরদিকে ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজল জানান, কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই আমরা মেনে চলবো। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার এবং নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে মতবিনিময়ের ঘোষণা দেয় ৩০ মে বৃহস্পতিবার। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, ও নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ সিটির উডসাউডের গুলশান ট্যারেসে আর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার কুইন্স প্যালেসে অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা জানায়।