এবারের বইমেলা হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উন্মোচন হয়ে গেলেও বইমেলার প্রথম দিন প্রস্তুতি শেষ করতে পারেনি সব স্টল। দিনভর কাজ করতে দেখা যায় সেখানে আনুষ্ঠানিক উন্মোচন হয়ে গেলেও বইমেলার প্রথম দিন প্রস্তুতি শেষ করতে পারেনি সব স্টল। দিনভর কাজ করতে দেখা যায় সেখানে বইমেলার প্রথম দিনই বৃষ্টির হানা। বিকেল থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, আর সন্ধ্যার পর এক পশলা বৃষ্টিতে শুরু হল এবারের বইমেলা। তবে ক্ষতি হয়নি এতে, বরং ধুলা দূর হওয়ায় উপকারই হয়েছে খানিকটা। প্রথম দিনই দর্শনার্থীদের আনাগোনা দেখা গেল। কোনো কোনো স্টলে বই বিক্রি হতেও দেখা যায়। তবে কেনার চেয়ে ঘুরে বেড়াতেই আগ্রহ বেশি দেখা গেল, স্টলে স্টলেও চলছিল গোছগাছের কাজ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার ৪০তম আসরের উদ্বোধন করেন। গতবারের মত এবারও মেলার প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত Collected Works of Sheikh Mujibur Rahman এবং প্রাণের মেলায় : শেখ হাসিনা (অমর একুশে বইমেলার ভাষণসংকলন), সংস্কৃতি ও সদাচার (প্রবন্ধ সংকলন), 1971 : A Dairy (কবি সুফিয়া কামালের স্মৃতিকথার অনুবাদ), Confessions of a Believer (মাহবুব উল আলমের বইয়ের অনুবাদ), Footfalls (সৈয়দ শামসুল হকের কাব্যনাট্যের অনুবাদ), Cluster Clouds (রাবেয়া খাতুনের উপন্যাসের অনুবাদ), An Untold Story (রিজিয়া রহমানের উপন্যাসের অনুবাদ), The Glorious Afternoon (সেলিনা হোসেনের উপন্যাসের অনুবাদ) এবং নজরুল ইনস্টিটিউট প্রকাশিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরুল-কথা বইসমূহের গ্রন্থ-উন্মোচন করা হয়। মেলা উদ্বোধন শেষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বীরমুক্তিযোদ্ধা এ কে এম বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলা ভাষা ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্টল গোছানোর ব্যস্ততা প্রধানমন্ত্রী যখন একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করছিলেন, তখন সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে স্টলের প্রস্তুতি শেষ করতে পারেননি বেশিরভাগ প্রকাশক। স্টল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময় স্বল্পতাই এর কারণ। পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্টল বরাদ্দ পাওয়ার পর মাত্র এক সপ্তাহ সময় পাওয়া যায়। এই স্বল্প সময়ে স্টল বানানো সম্ভব না। এজন্য আরও দুই একদিন সময় লেগে যাবে কোনো কোনো স্টলের। কেউ কেউ অবশ্য প্রথম দিনই বানিয়ে ফেলেছেন। এবার বাংলা একাডেমি কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব না দিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেলার আয়োজন করছে। একটু বিলম্বে গত ২৩ জানুয়ারি লটারির মাধ্যমে স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এক আয়োজনে এক মাসের বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এক আয়োজনে এক মাসের বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাম্রলিপি, পার্ল পাবলিকেশন্স, সময় প্রকাশনসহ অনেকে স্টলের কাজ শেষ করতে পারেনি। নবান্ন প্রকাশনীসহ কয়েকটির স্টল নির্মাণ শেষ হয়ে বই গোছানো চলছে। বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মোজাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা প্রকাশকদের বলেছি তারা যেন দ্রুত স্টলের কাজ শেষ করেন। আর তারা যদি নিজের স্টলের সামনের জায়গাটুকু পরিষ্কার রাখেন, তবে মেলায় লোক চলাচলে সুবিধা হয়। তারাও চেষ্টা করছেন, আশা করি আর হয়ত দুয়েকদিনের মধ্যেই মেলার সব স্টলে আলো জ্বলবে।”
এবারের বইমেলা হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সাপ্তাহিক শেষ কর্মদিবসে অফিস সময় শেষে অনেকেই ঢু মারেন বই মেলায়। তবে তারা বই কেনার চেয়ে ঘুরে দেখেছেন বেশি সাপ্তাহিক শেষ কর্মদিবসে অফিস সময় শেষে অনেকেই ঢু মারেন বই মেলায়। তবে তারা বই কেনার চেয়ে ঘুরে দেখেছেন বেশি মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে কথা হয় জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও জার্নিম্যান বুকসের কর্ণধার কবি তারিক সুজাতের সঙ্গে। টিএসসিতে দুদিনব্যাপি জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে। এই উৎসবে আট দেশ থেকে কবিরা এসেছেন। তাদের নিয়েই বইমেলায় ঘুরছেন। তারিক বলেন, “একুশে বইমেলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক একটি সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। অন্তত বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাদের এই বইমেলায় যুক্ত করা উচিত।” এবারের মেলায় জার্নিম্যান থেকে ৪০টির মতো নতুন বই প্রকাশ হবে বলেও জানান তারিক সুজাত। এবার মেলায় ৪৫ টির মতো নতুন বই নিয়ে আসছে বাতিঘর। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তো সারা বছরই বই প্রকাশ করি। গত মেলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০টির মতো বই প্রকাশ করেছি। বাকি বইগুলো চলে আসবে শিগগির।”
একুশে বইমেলার প্রথম দিন স্টলে স্টলে ঘুরে বই দেখছেন বইপ্রেমীরা।একুশে বইমেলার প্রথম দিন স্টলে স্টলে ঘুরে বই দেখছেন বইপ্রেমীরা। | বৃষ্টি থেকে বাঁচাল ধুলা মেলা মাঠের ধুলার বিড়ম্বনা নিয়ে প্রতি বছরই থাকে বিস্তর অভিযোগ। বৃষ্টিতে কয়েক মিনিটেই সব ধুলা উধাও হয়ে যায়। তবে ঝড়ো বাতাস হলে কী প্রস্তুতি থাকা উচিত, তার আগাম বার্তা দিয়ে গেল এই ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। ছোটকাগজ দোলন সম্পাদক কামাল মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাঠে অনেক ধুলা থাকার কারণে পানি জমেনি। তবে এবার বৃষ্টি ভালোয় ভোগাবে, তার আগাম বার্তা দিয়ে গেল।” শুক্রবার ছুটির দিন মেলায় লোক সমাগম বাড়বে। তার আগের দিন বৃষ্টি হওয়ায় ভালো হয়েছে উল্লেখ করে কামাল মোস্তফা বলেন, “লোক সমাগম বেশি হলে ধুলার ভোগান্তি বেশি হয়।” সন্ধ্যায় এক পশলা বৃষ্টিতে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা কিছুটা সমস্যায় পড়েন।
আবার সেই বৃষ্টি দূর করে ধুলাও সন্ধ্যায় এক পশলা বৃষ্টিতে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা কিছুটা সমস্যায় পড়েন। আবার সেই বৃষ্টি দূর করে ধুলাও বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মোজাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃষ্টির কথা চিন্তা করে প্রতি বছরই আমাদের প্রস্তুতি থাকে। এবারও আছে। দুটি শেল্টার সেন্টার আছে। বৃষ্টি হলে মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।” মেট্রোরেল স্টেশন পাল্টে দিল প্রধান গেইট মেলার বিন্যাস গতবারের মতই রাখা হয়েছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে এবার। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে মেলার বের হওয়ার পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির-গেইটের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট ৮টি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রাখা হয়েছে।