৭০’র দশকে বাংলাদেশের ছায়াছবির দর্শক যখন ভারতীয় হিন্দি ছবি আর গানে দেশ পূর্ন নিয়ন্ত্রনে, ঠিক সে সময়টিতে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পে সঙ্গীত পরিচালক আলম খান এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলেন, তিনি তাঁর সৃস্ট সূর আর সঙ্গীত দিয়ে। সে সময়টিতে আলম খানের ভূমিকা বাংলা চলচিত্র শিল্পে বাংলাদশের সিনেমা প্রেমিক দর্শকরা, কোনদিনই ভূলবেনা।

আলম খান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে এক অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন, তার সৃস্ট অনন্য সঙ্গীত সৃস্টির মাধ্যমে। এমনি একজন বরেন্য সঙ্গীত পরিচালক কিছুদিন আগে লক্ষকোটি তারার মাঝে হারিয়ে গেলেন, বাংলাদেশে ৭ বার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত একজন প্রতিভাবান সংগীত পরিচালক আলম খান।

২০১১ সালে আলম খান ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং গেলো শুক্রবার, ৮ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৩২ মিনিটে, তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। একইদিনে আমরা হারালাম সংগীত পরিচালক আলম খান ও অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ এবং গেলো সপ্তাহে আরো হারালাম নজরুল গবেষক আসাদুল হককে। সকলের প্রতি রইলো আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ তিনিও ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ( ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।

আলম খানের সম্পূর্ন নাম, খুরশীদ আলম খান। ১৯৪৪ সালের ২২ শে অক্টোবর সিরাজগন্জে জেলায় তিনি জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক।অর্জনের তালিকায় বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার বিভাগে সাতবার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৬৩ সালে সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে তিনি ‘তালাশ’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। ৭০-র দশকে আবদুল্লাহ আল মামুন প্রযোজিত জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ নাটক ফতেহ লোহানী অভিনীত ‘সংশপ্তক'এর আবহসঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে প্রথমে টেলিভিশন আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৭০ সালে আবদুল জব্বার খানের ‘কাঁচ কাটা হীরে’ সিনেমার মাধ্যমে ছায়াছবিতে সঙ্গীত পরিচালক আলম খানের চলচ্চিত্রে প্রথম আত্মপ্রকাশ।

আলম খানের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ওরে নীল দরিয়া, চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘ হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস,‘ হীরামতি হীরামতি ও হীরামতি’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’, ‘বুকে আছে মন’, ‘ সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘আজকে না হয় ভালোবাসো আর কোনোদিন নয়’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’, ‘আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী’, ‘মনে বড় আশা ছিল’ ইত্যাদি অসংখ্য জনপ্রিয় গান তিনি সৃস্টি করেছেন। ১৯৭৬ সালে আলম খান হাবিবুননেসা গুলবানুকে বিয়ে করেন। স্ত্রী গুলবানু একজন গীতিকার ছিলেন এবং কয়েক বছর আগে তিনি স্ত্রী গুলবানুকে চিরতরে হারান। তিনি তাঁর স্ত্রীর স্মরনে একটি জনপ্রিয় গানের সুর তৈরী করেন। ‘তুমি তো এখন আমারই কথা ভাবছ’ এ গানটির গীতিকার ছিলেন আলম খানের স্ত্রী গুলবানু আর সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে আলম খানের সুরে গাওয়া গানটি যথেস্ট জনপ্রিয়তা লাভ করে। পরিবারর সদস্যদের মধ্যে রয়েছে দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান দুজনই সংগীত পরিচালক এবং একমাত্র মেয়ে আনিকা খান। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পপ সঙ্গীত শিল্পী আজম খান ছিলেন, তার ছোট ভাই। পাঁচ ভাই তিন বোনের মধ্যে আলম খান ছিলেন মেজো।

প্রয়াত সঙ্গীত পরিচালক আলম খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংযোগ:

প্রতি প্রয়াত আলম খানের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে ৭০’র দশকে ঢাকার সম্ভবত: ঈপ্সা রেকর্ডিং স্টুডিওতে। আমি তখন প্রয়াত চিত্র পরিচালক এজাজ খান পরিচালিত হাসির ছবি ‘ভাড়াটে বাডী’ ছায়াছবির প্রধান সহকারী চিত্র পরিচালক। ছবিটিতে অভিনয় করেন, উজ্বল, কবিতা, সুমিতা, সাইফউদ্দিন, হাশমতসহ আরো অনেকে। ছবির সম্পাদক ছিলেন, আবু তালেব আর সহকারী সম্পাদক ছিলেন আমিনুল হক মিন্টু।

স্বল্প পরিসরে ছোট ‘ঈপ্সা’ রেকর্ডিং স্টুডিওতে সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে ‘ভাড়াটে বাড়ী’ ছায়াছবির গান রেকর্ডিং চলছে। পরিচালক এজাজ খানের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসাবে আমিও উপস্হিত ছিলাম। প্রধান শব্দগ্রাহক ছিলেন, সে সময়টিতে অত্যন্ত দক্ষ শব্দগ্রাহক, প্রয়াত মফিজ ভাই। অত্যন্ত অমায়িক এবং একজন প্রকৃত ভদ্রলোক ছিলেন তিনি। আর সে গানের রেকর্ডিং স্টুডিওতে সঙ্গীত পরিচালক আলম খানকে আমি প্রথম দেখতে পাই। সুদর্শন আর বেশ লম্বা এবং ভারী গোঁফ হাস্যজ্জল একজন মানুষ। সার্বক্ষণিক মূখে সবসময় একটা হাসি লেগেই থাকে। দশজনের মধ্যে আলম খানকে সহজেই চেনা যাবে, এটা নিশ্চিত। পান্জাবী ছিলো আলম খানের প্রিয় পোষাক আর সিগারেট সেবন করতেন প্রচুর।

৭০’র দশকে এফডিসির প্রবেশ দ্বার অতিক্রম করার পরপরই হাতের ডান দিক পাকা দোতলা ভবন। নীচের তলায় কালার ল্যাব, যেখানে চলচিত্রের মূল পরিস্ফুটন কেন্দ্র। ঠিক ওপরের তলায় রয়েছে, এফডিসির প্রধান প্রক্ষেপন কেন্দ্র। শব্দের সংযোজন এবং আবহ সঙ্গীতের জন্য ব্যবহৃত প্রক্ষেপন কেন্দ্রটিতে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ভীষণ বেগ পেতে হতো কাজের তালিকায় নিজের ছায়াছবির নাম লিপিবদ্ধ করা। এফডিসিরঅবশ্য আরো একটি ছোটাকারে প্রক্ষেপন কেন্দ্র ছিলো, সেটি ছিলো স্টুডিওর ঠিক শেষপ্রান্তে চলচ্চিত্র সম্পাদনার কক্ষগুলোর পাশে।

রাতের শিফটে কাজ চলছে ‘ভাড়াটে বাড়ী’ ছায়াছবির ওপরের তলায় এফডিসির মূল প্রক্ষেপন কক্ষে। ছবির আবহ সঙ্গীত রেকর্ড করার প্রস্তুতি চলছে। প্রচন্ড ঠান্ডা আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে এফডিসির শেষ প্রান্তে সম্পাদনা কক্ষ থেকে ৩৫ মিলিমিটারের সে ছবির বেশ কিছু দৃশ্যের অংশবিশেষের ভারী রিল হাতে বয়ে হেটে চলেছি, প্রধান প্রক্ষেপন কেন্দ্রের দিকে। চিত্র প্রক্ষেপনে সেদিন দায়িত্ব প্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন নান্নু ও সুরেশ নামে দূ’জন কর্মকর্তা। প্রধান সহকারী পরিচালক হিসাবে আমার দায়িত্ব ছিলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবহ সঙ্গীতের কোন অংশবিশেষ ব্যবহার করা হবে, সে সব রিলগুলোর প্রক্ষেপন কক্ষে কর্তব্যরত কর্মীকে বুঝিয়ে দেয়া। আর এছাড়া রেকর্ডিং চলাকালে বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করা এবং রেকর্ডিং শেষে সে রিলগুলো বুঝে নেয়া।

সঙ্গীত পরিচালক আলম খানকে ঘিরে সকল বাদ্যযন্ত্র শিল্পীরা ঘিরে বসে আছেন। পরিবেশ, সময় আর পরিস্হিতির ওপর পর্দায় ছবির দৃশ্যটুকু কয়েকবার দেখে সময়ের সাথে সামন্জস্য রেখে, আবহ সূর তৈরী করছিলেন আলম খান তাৎক্ষণিক অবস্হায়। সকলেই ছবির একটি বিশেষ দৃশ্যের সুর অনুশীলনে ব্যস্ত। তাদের বাদ্যযন্ত্রগুলো শেষবারের মত পরখ করে নিচ্ছেন রেকর্ড করার পূর্ব মূহুর্তে। সামনে একটা হারমোণিয়াম রাখা। ‘ভাড়াটে বাড়ী’ ছবির ‘থিম মিউজিক’ তৈরী করছিলেন। চলচ্চিত্রে এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কেননা, এই সুরটি মূলত: ছবির বহুলাংশে জুড়ে বার বার ব্যবহার করা হবে গল্পের আনন্দ, বেদনা আর নাটকিয় দৃশ্যে ব্যবহার করার জন্যে। যখন তিনি মনে করছেন সূরটা কেমন যেনো তাঁর পছন্দ অনুযায়ী হচ্ছে না, তখনই তিনি কিছুক্ষনের জন্য হলেও বাইরে চলে য়েতেন, একটু বিরতি নিয়ে। ফিরে এসে আবার হারমোনিয়ামে সূর তুলছেন। মাঝেমধ্যে উচ্চস্বরে প্রক্ষেপন কক্ষের উদ্দেশ্যে আলম ভাই বলছিলেন “ নান্নু রিলটা আরেকবার চালাওতো ভাই” ! । সে দৃশ্য পর্দায় প্রক্ষেপনের পরপরই বাদ্যযন্ত্র শিল্পীরা আবার তৎপর হয়ে উঠতেন অনুশীলনের জন্য। সেদিনের ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে ছিলো, বেহালা, সন্তুর, বাঁশী, সেতার, একোর্ডিয়ান,তবলা, কঙ্গো, ভাইব্রোফোন, কীবোর্ড সহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র। সময় এখানে একটা মূখ্য বিষয়। কেননা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো শেষ করতে হবে। তা’না হলে সবকিছুই পিছিয়ে পড়া ও সম্ভাব্য বিপদে পডার সমূহ সম্ভাবনা। আমি অনেক বিস্ময়ের সাথে এ জটিল কার্যক্রমগুলো লক্ষ্য করছিলাম। এ এক অত্যন্ত জটিল কর্মপদ্ধতি।

৭০’র দশকে ছায়াছবিতে গান রেকর্ড করার পদ্ধতি আর ছবির দৃশ্যের সাথে কাহিনীর সামন্জস্য রেখে আবহ সঙ্গীত সম্পূর্ন ভিন্ন। সেটির অভিজ্ঞতা আমার কখনোই সমপন্ন হতো না, যদি না আমি চলচ্চিত্র নির্মাণের সাথে আমি সরাসরি জড়িত না হবার সুযোগ পেতাম। প্রয়াত পরিচালক এজাজ খানের কাছে, আমি সত্যি কৃতজ্ঞ সে সুযোগটি আমাকে দেবার জন্য। প্রয়াত আলম খানের সাথে শেষ দেখা ঢাকার একটি সিডি মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিচালক আলম খানের সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিলো ২০১৭ সালে ঢাকার শাহবাগ এলাকা পাবলিক লাইব্রেরীর একটি মিলনায়তনে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ইবিএস -র অঙ্গসংঠন ‘বাংলা ঢোল’র নির্বাহী পরিচালক ও স্বত্বধিকারী এনামূল হকের বিশেষ আমন্ত্রণে একটি সিডি মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো। আলম খান, আলাউদ্দিন আলী, আইয়ূব বাচ্চু সহ বেশ কিছু স্বনামধন্য তারকাদের আমার দেখা হবার সুযোগ ঘটে। কন্ঠতারকা সৈয়দ আব্দুল হাদীর কন্যা তনিমা হাদির একটি একক সিডি আইয়ূব বাচ্চুর সঙ্গীত পরিচালনায় ‘এইতো জীবন’ গানের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সেদিন সবাই এসেছিলেন।

অনুষ্ঠান শুরু হতে কিছু সময় বাকী। সকলেই আইয়ূব বাচ্চুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বাইরে সেদিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো। তাই অনুষ্ঠান বিলম্বিত হবার কারণে আলম ভাই, আইয়ূব বাচ্চু, গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, ফাতেমাতুজ্জ জোহরা-সহ অনেকের সাথে আলাপ পরিচয়ের, এ দূর্লভ সুযোগটি পেয়েছিলাম, এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবার সুবাদে। মিলনায়তনে সবার সাথে কথা বলার ফাঁকে হঠাৎ লক্ষ্য করলাম, সাদা একটা সবুজ রঙের ছাপা পান্জাবী পড়ে মিলনায়তনে প্রবেশ করলেন, প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক আলম খান। আয়োজকদের সকলেই এগিয়ে যেয়ে স্বাগত জানালেন। আমার নিজের মনে একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিলো, এ বরেন্য শিল্পীর সাথে দেখা করার। আর সে সুযোগটাই পেলাম- এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

আলম খানকে দেখে আমার ৭০’র দশকে ‘ভাড়াটে বাড়ী’ ছায়াছবির কথা মনে পড়ে গেলো। ছবিটি তেমন ব্যবসা সফল ছবি ছিলো না। আমি কাছে এগিয়ে পরিচিত হলাম এবং স্মরন করিয়ে দিলাম বহুদিন আগে নির্মীত ‘ভাড়াটে বাড়ী’ ছায়াছবির কথা। মুখে একটু স্মীত হেসে আমার দিকে লক্ষ্য করে বললেন, “ ও, তাই নাকি! বুঝলাম অসংখ্য ছবির মাঝে তারই সুরারোপিত ‘ভাড়াটে বাড়ী’ এ ছবির নাম এ মূহুর্তে হয়ত মনে পড়ছে না। এত ছবির ভীড়ে অনেক ছবির নাম, মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক । তাই প্রশ্নটা পাশ কাটিয়ে অন্য বিষয়ে আলম ভাইয়ের সাথে অনেক কথা হলো। আমার আগ্রহ দেখে জানতে চাইলেন, আমার সম্পর্কে। চলচিত্র পরিবারের পরিচালক, প্রযোজক ও পরিবেশক আজিজুর রহমান বুলী এবং নায়ক মাহমুদ কলির আপন চাচাতো ভাই জেনে খুশী হলেন। আলাপ প্রসঙ্গে ভাড়াটে বাড়ী’ ছবির আবহ সঙ্গীত তৈরী করার আমার কিছু স্মৃতিতারনের কথা শুনে তিনি হেসে উঠলেন। “ এতদিন আগের কথা, আপনার এখনো মনে আছে …আমার কিন্তু কোন কিছুই মনে নেই?” ঢাকার শাহবাগ এলাকা পাবলিক লাইব্রেরীর মিলনায়তনের সেদিনের সে স্মৃতি- আজও আমার স্মৃতিতে চির ভাস্বর হয়ে জেগে আছে। এতবড় একজন গুনী সুরকার আলম খানের কাছে দীর্ঘ আলাপে, কখনোই মনে হয়নি কোন ধরনের দম্ভ আর অহমিকার ভাব। অত্যন্ত আন্তরীক আর সাধারণ ভদ্র মানুষ বলে মনে হয়েছে আমার। কোন ধরনের অহমিকার রেশ আমি খুঁজে পাইনি। আলম খান আমার প্রিয় সঙ্গীত পরিচালকের মধ্যে একজন। তাঁর সূরের মধ্যে একটা ভিন্নতা আমি খুঁজে পাই।

আলম খানের মৃত্যুতে আমার সকলেই শোকাহত এবং সে সঙ্গে আমি নিজেও। তাঁর মৃত্যু সংবাদ আমাদের সকলের কাছে ছিলো একেবারে অপ্রত্যাশিত। তিনি আমাদের দৃস্টির আড়াল হলেও, তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের সকলের হৃদয়ে তার সৃস্ট সুরের অসংখ্য গানের মাঝে। তার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০১৭ সালে আমার ক্যামেরায় সেদিনের কিছু স্মরনীয় ছবি সংযুক্ত করা হলো। দোয়া করি, আল্লাহ যেনো ওঁনাকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেন।আমিন।