নানা ধর্ম,নানান বর্ণের মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের নিউইয়র্ক শহর। বহু ভাষা-ভাষির বৈচিত্রময় এই শহরে বাংলাদেশীদের অবদান অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। গত ২১ মার্চ নিজ বাসভবন ‘গ্রেসি ম্যানশনে’ বাংলাদেশি হ্যারিটেজ এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে নিউইয়র্কের মেয়র অ্যারিক অ্যাডামস একথা বলেন।নিউইয়র্কে আরও সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশীদের আরও বেশী করে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, আজকে এই দিনটিতে আপনাদের আমন্ত্রণ জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।
উপস্থিত সুধীজনের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন,আপনারা এখান থেকে ফিরে গিয়ে নিজেদেরকে কমিউনিটির সেবায় আরও বেশী করে আত্মনিয়োগ করুন।
অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য মেয়র তার বক্তব্যে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মানকে বিশেষ ভাবে অভিনন্দন জানান।
নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটির জন্য ইতিহাস হয়ে থাকলো একটি দিন। প্রথমবারের মতো মেয়রের এই আনন্দঘন আয়োজনে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
নিউইয়র্কে সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ৫ জন বাংলাদেশীকে সাইটেশন দিয়ে সম্মানিত করেন মেয়র।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, আজকে সকল বাংলাদেশিদের একটি গর্বের দিন। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি-আজ সেটি আরও বেশী মহিমান্বিত হলো।
এই দিনটিকে একটি বিশেষ দিন হিসেবে এটিকে আখ্যায়িত করে মেয়রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান বলেন, মেয়র অ্যারিক অ্যাডামস বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণ জানাতে পেরে বাংলাদেশিদের উচ্চতর আসনে নিয়ে গেলেন। তিনি বলেন,বাংলাদেশী বান্ধব মেয়র আমাদের কমিউনিটির নিউইয়র্ক শহরকে নতুন করে সাজাতে অত্যন্ত আন্তরিক। এ ব্যাপারে তার পাশে আমাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে।
নিউয়র্কের অ্যাসেম্বেলি উইমেন জেনিফার রাজকুমার বাংলাদেশিদের আনন্দঘন এই দিনে থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে বলেন,একমাত্র বাঙালিরাই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাদের দেশ স্বাধীন করেছে।
মেয়র অফিসের সহকারী পরিচালক উমিয়া হাসান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, এবারই প্রথম গ্রেসি ম্যানশনে মেয়র বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ এই আয়োজন করলেন মেয়র।
শাহ্ জে.চৌধুরী সাইটেশন পাওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া বলেন,দেশ-মাতৃকার জন্য লড়াই করা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এই সম্মান দেয়ায় নিজেকে গর্বিত বাবার গর্বিত সন্তান মনে করছি।
কমিউনিটির বিশিষ্ট সমাজসেবক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন,মেয়র আজ যে সম্মানে আমাকে ভূষিত করলেন,সেটি নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে নিউইয়র্কে অবদান রাখতে আরও বেশী করে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ব্যবসায়ি আসিফ বারী টুটুল বলেন, আমরা সত্যি আজ গর্বিত।
বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন পেশাজীবিদের নিয়ে এই আয়োজনকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করলে কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শাহনেওয়াজ।
বাংলাদেশি আমেরিকান সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকের দিনটি ইতিহাস হয়ে থাকলো।
কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য রুতবা তাবাসুম,রিমা বেগম,শাহ্ জে.চৌধুরী ও বাবু খানকে সাইটেশন প্রদান করেন মেয়র এরিখ এডামস।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী শিল্পীরা অংশ গ্রহন করেন।
নিউইয়র্কে এনওয়াইপিডির বাংলাদেশি পুলিশ অফিসাররা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সুধীজন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
ছবিগুলো তুলেছেন নিহার সিদ্দিকী