একুশের অর্ঘ

- জাকিয়া রহমান 

 

(১)

আমাদের বাংলা-বলা জিব্বাকে-

ওরা চেয়েছিল উপড়ে ফেলতে!

চেয়েছিল আমাদেরকে- 

বাংলা কবিতা ও গান ভুলে যেতে।

দেখো না! দেখো এখন এসে, 

আমাদের বর্ণাঢ্য ভাষাকে! 

শহিদ মিনার চত্বরের বইমেলায়,      

ডাকি জিন্নাহ তোমাকে।  

 

দেখ, বাংলা বর্ণমালা সারিতে সারিতে-

সাজানো মোদের প্রাণের ভাষা বাংলাতে।

সজ্জিত মাল্য জ্বলজ্বলে মলাটের অন্দরে-     

অর্ঘ নিয়ে এসেছে, একুশের শহিদের তরে!    

 

(২) 

এক সাগর বিষাদ অশ্রু ছিল সেদিন, 

রাজপথ রক্তে রক্তে রাঙা ছিল যেদিন।  

ঝরেছিল বরকত, সালাম, রফিক আর 

জব্বারের তরুণ নিষ্পাপ রক্ত কলিজার।  

 

কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি মুড়ষে পড়ে অতর্কিতে!  

মূর্ছিত রুদ্ধশ্বাস যত পলাশ শিমূল বনান্তে- 

রক্ত অধরে কালশিটে বেদনা, চোখে জল,    

আশোক ফুলের হৃদয়ে শোকের বিন্ধ্যাচল।

 

সন্তানহারা মায়ের রোদনে বাংলার মাটি সিক্ত,

ভাষা ও জীবন হারিয়ে কেউ হতে চায়নি রিক্ত।  

আজ সে রক্তের ঋণে জমিন হয়েছে উর্বর কত, 

বর্ণমালার আবাদে সেই রক্ত সমুদ্র রুপান্তরিত-

প্রাণবন্ত বর্ণমালার গর্বিত জৌলুষের জয় উৎসব!

চতুর্দিকে কাব্যকথায় ভাষা সৃষ্টির আনন্দ বৈভব।