জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
ওয়াহিদুজ্জামান বকুল
স্মরণ করি এক মহান নেতার কথা,
বাংলাদেশের পিতা, জাতির প্রাণ,
১৯২০ সালের সেই মধুমাসে,
টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেন তিনি ঘাসে,
গোপালগঞ্জের ঘর, ছোট্ট সেই কুঁড়ি,
একদিন হবে যে বাঙালির মুকুটের মুক্তা চুঁড়ি।
শৈশব কাটে মধুময়, গ্রামীণ পরিবেশে,
প্রাণোচ্ছ্বল মুজিব, দুঃখে সবার পাশে,
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে, কলেজের পথে,
রাজনীতির হাতেখড়ি, জীবনের খাতে।
পাকিস্তানের শাসনে, জেগে ওঠে বঞ্চনা,
মুজিব জানতেন, এ শাসন আমাদের নয় সঠিক দৃশ্যপট?
৬ দফা দাবি, তুলে ধরলেন সবে,
স্বাধীনতার স্বপ্নে, বাংলার মানুষ রবে।
অবশেষে আসে ১৯৭০-এর নির্বাচন,
মুজিবের নেতৃত্বে, বিজয়ের গান,
২৬ মার্চ, ১৯৭১, স্বাধীনতার ডাক,
যুদ্ধ শুরু হয়, বুকের রক্তে মিশে যায় মাটির ফাঁক।
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, লক্ষ প্রাণের বলি,
১৬ ডিসেম্বর আসে, মুক্তি হলো, ধন্য মাটি,
বঙ্গবন্ধু মুজিব, স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরলেন,
বাংলার মানুষ তাঁর নামে আনন্দে মেতে উঠলেন।
কিন্তু ১৯৭৫-এর কালরাত্রি, ইতিহাসের কালিমা,
১৫ আগস্ট, এক দুঃখময় রাত,
নির্মমভাবে হত্যা করা হলো জাতির পিতাকে।
খুনি খন্দকার মোশতাক, ফারুক, রশিদ,
তারা সবাই মিলে, করলো নারকীয় কাজ,
তারা ভেবেছিল, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে থামবে সংগ্রাম,
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, রয়ে গেলো অমর প্রাণ।
তার রক্তের প্রতিটি বিন্দু, জাগিয়ে দিলো দেশ,
স্বাধীনতার মন্ত্রে, আমরা একতাবদ্ধ বেশ।
তাঁর সন্তানেরা, তাঁর আদর্শ ধরে,
স্বপ্ন দেখেছিলো এক নতুন ভোর,
বাঁচবে সবাই শান্তিতে, সুখের মোহনায়,
কিন্তু কী দেখলাম? ভেঙে চুরমার হলো এক নিমেষেই।
জাতির পিতার ভাস্কর্য দাঁড়িয়ে ছিলো,
তারই ভালোবাসার নীরব স্মৃতি,
কিছু দুস্কৃতকারী এলো, ভাঙলো সেই স্মারক,
এ কি তার প্রাপ্য ছিলো? এই বিশ্বাসঘাতকতা কেন?
জানতে চায় এ হৃদয়, জানতে চায় এ বেদনাময় জাতি।
এই বেদনাময় সময়ের শেষ প্রান্তে।
১৫ আগষ্ট কালো রাত
ওয়াহিদুজ্জামান বকুল
সেই কালোরাতে, আঁধার নামল ঘরে,
বাংলার বুক চিরে, বয়ে গেল রক্তস্রোতে,
নিষ্ঠুর হাত উঠল, নিঃস্ব করল জাতি,
১৫ আগস্টের রাতে, নিভল স্বাধীনতার বাতি।
বঙ্গবন্ধু, তোমার স্মৃতিতে জ্বলি,
বেদনায় ভরা এই দিন, কাঁদে বাংলা মাটি,
তোমার রক্তের ঋণ, শোধ হবে না কখনো,
তুমি থাকবে চিরদিন, আমাদের প্রেরণার আলো।
সেই ভয়াল রাতে, অশ্রু ভেসে গেল,
বাংলার মাটিতে, রক্তের ধারা বয়ে চলল।
নিষ্ঠুরতার ছায়া, ঢেকে দিল আকাশ,
হারালাম তোমায়, ভাঙল সবার আশা।
তুমি ছিলে স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীনতার মশাল,
তোমার কণ্ঠে শোনা যেত, মুক্তির জয়গান।
সেই ১৫ আগস্ট, আঁধারে ঢাকা রাত,
তোমার আদর্শে আমরা, গড়বো নতুন দিশা,
তোমার রক্তের ঋণে, জ্বলবে বাংলার মশাল।
তোমার স্মৃতি ধরে রাখি, হৃদয়ে অম্লান,
তুমি আছো আমাদের প্রতি শ্বাসে, প্রাণে।
তোমার মৃত্যুদিনে, কাঁদে আকাশ-বাতাস,
তুমি বেঁচে আছো, আমাদের হৃদয়ে উজ্জ্বল।