আমাদের বাংলাদেশের হাইকমিশন বা এমব্যাসি কোন দেশে বা কোন সমাজের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তার  সাথে মিলিয়ে সেই দেশের এবং সমাজের রীতি নীতি মেনে নিজেদের সংস্কৃতি বা ইতিহাসের  সবটা তুলে ধরতে পারার চেষ্টা বা  ইচ্ছার  পুরোটাই বোধহয় নির্ভর করে তার পরিচালক বা সেই হাইকমিশন বা এমব্যাসির প্রধানের উপর....

আমরা দুনিয়ায় অনেক অনেক দেশ ঘুরেছি আর যে দেশেই গেছি সেখানে নিজের দেশের এক টুকরো বাংলাদেশ খুঁজে বের করে দেখা করেছি সেখানে নিযুক্ত কর্ণধারের সাথে...

এবারে ব্রুনাই এসেছি আমাদের এক বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে যিনি বাংলাদেশের ব্রুনাই হাই কমিশনের হাই কমিশনার....

আর এই বিয়েতেই দেখা হয়ে গেল আমাদের একান্ত নিজের বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাননীয় হাই কমিশনার জনাব নাহিদা রহমান সুমনা আপার সাথে....

আমি প্রথম দেখাতেই আপ্লূত এবং তীব্র তুমুল  এক ভাললাগার ঘোরে ডুবে গেছি আপার শান্ত  এবং নির্মল স্নিগ্ধতার মিশেলে মাখানো কমনীয় এক ব্যাক্তিত্তের কাছে....

আজ আপা আমাদের জন্য উনার ব্যাস্ত সময়ের মধ্যে থেকেও এক ঘন্টার বেশি সময় দিয়েছেন এবং আমাদের কেটেছে চমৎকার আবেগতাড়িত একটা সুন্দর সময়....

এত সুন্দর রুচিসম্মত সাজ সজ্জায় আমাদের প্রানের হাই কমিশন অন্য অনেক দেশেই নেই....

অনেক দেশের হাই কমিশন ভবন সাজানো নেই দেশের প্রতি ভালবাসাময়  এমন অনন্যসাধারণ পেন্টিং দিয়ে যা এই ব্রুনাই হাই কমিশনে নাহিদা আপা করিয়েছিলেন এবং  সাজিয়েছেন....

অনেক দেশের হাই কমিশনে নেই এমন উদার ভংগিমার সাবলীল উচ্চারন "Mujib"s  Bangladesh "....

চোখের ভেতরটা  ভিজে একাকার হয়ে গেছে এক অনন্য ভালবাসা আর আবেগের জোয়ারে....

বিরাট হাই কমিশন ভবনে প্রবেশের পথে যেতেই চোখে পড়েছে একটা চমৎকার লাল সবুজ রঙ দিয়ে মোড়ানো নৌকা তাতে দুটো বৈঠাও আছে...

পরে নাহিদা আপার কাছে গল্পে জেনেছি এই নৌকা বানানো হয়েছিল হাই কমিশনের একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এর জন্য এখানকার লোকাল শিল্পীর দ্বারা....

এটা আরেক অপার মুগ্ধতা ছড়ায় যে কি করে এই দূর দেশে বসেও এই ভালবাসার প্রতীক বানানো হয়েছে তাও নিজের দেশের শিল্পী নয় অন্য দেশের মানুষকে কতটা উজ্জীবিত করতে পারা গেলে এটা সম্ভব হয়!

কমেন্ট বইতে লিখতে বসে দেখেছি আপা নিজেই আমার ছবি তুলছেন অন্তর ভরে গেছে অন্য আলোয়....

আসলে নাহিদা আপাকে নিয়ে বলতে গেলে পুরো একটা বই হয়ে যাবে তবে আমি লিখবো আপাকে নিয়ে কারণ আমার দেখা সব চাইতে সুন্দর মানুষ নাহিদা আপা.....

আমি এবং মূনির সত্যিই  আপার কাছে এসে পেয়েছি অন্য এক আলো এবং কমনীয়  স্নিগ্ধতা...

আপা পড়াশোনা করেছেন আমাদের মেলবোর্ন এর মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে..

নাহিদা আপার জন্য এত্তগুলা ভালবাসা আর শুভকামনা আপা যেন এই ভাবেই আরও অনেক দিন কাজ করে যেতে পারেন দেশের সুনাম বয়ে আনতে পারেন জগৎ সভায়.....

দেখা হয়েছে তন্ময় মজুমদার ভায়ের সাথে উনি কাউন্সেলর এবং দূতালয় প্রধান...

তন্ময় ভাই আমাদের  সিডনিতে পড়াশোনা করেছেন এবং আমাদের অনেক বন্ধুদেরকে চেনেন... 

খুব ভাল লেগেছে সবার আন্তরিকতা এবং আপ্যায়ন , আমাদের জন্য হাই কমিশনের অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার আনিস ভাইকে ডাকা হয়েছে আর তিনি আমাদের দারুন সুন্দর সব ছবি তুলে দিয়েছেন.....

সবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা আর শুভকামনা....

দেশের কথা মনে এলেই আমি মনে মনে আমার নিজের লেখা  যে লাইনটা  উচ্চারণ করে থাকি আজ যতক্ষণ ব্রুনাই এর বাংলাদেশ হাই কমিশনে ছিলাম আমি একান্তে আওড়ে গেছি....

চোখের কোণে জলের রেশ
ও আমার বাংলাদেশ....

আইভি রহমান
মূনির হোসেন
ব্রুনাই দারুসসালাম
১২ জুন ২০২৩