সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের আমব্রেলা
সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির এক লাখ ৬৫ হাজার
ডলার হ্যাকের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বড় ধরণের চক্রান্তের শিকার হয়েছে
সোসাইটি। প্রথমে ৫ হাজার ডলারের চেক জালিয়াতির পর তাৎক্ষণিক
ব্যাংকে অভিযোগ জানানোর পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আরো দুটি চেকে
প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার হাতিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ কবল থেকে শেষ
পর্যন্ত সোসাইটি রক্ষা পেয়েছে এবং সোসাইটির একাউন্ট থেকে
প্রতারণার মাধ্যমে লোপাট করা অর্থ পুরোপুরি ফেরত পাওয়া গেছে।
এদিকে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সোসাইটির সকল ব্যাংক হিসাব বন্ধ
করে দেয়া হয়েছে। ফেডারেল গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এই ঘটনা
অনুসন্ধান করছে বলে সোসাইটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে টিডি
ব্যাংক ডিটমার্স বুলেভার্ড শাখা থেকে সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ
নওশেদ হোসেনের কাছে একটি ফোন কল আসে। ব্যাংকের একজন নারী
কর্মকর্তা জানান যে, জনৈক মামুন আবু ব্যাংকে ৫ হাজার ডলারের
একটি চেক জমা দিয়েছেন (চেক নম্বর ২৯০৩, তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর
২০২৩)। চেকের মেমোতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৭৩ স্ট্রিটে স্টেজ
প্রোগ্রামের জন্য। ব্যাংক থেকে এই তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে তিনি )
নওশেদ হোসেন) চেকটি পরিশোধ না করে বাহককে পুলিশে দেওয়ার
অনুরোধ জানান। ফলে ওইদিন চেকটি পরিশোধ করা হয়নি।
পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব
মিয়া ও কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সোসাইটর হিসাবের নিরাপত্তা নিশ্চিত
করেন। এরপর সতর্কতা অবলম্বন করতে নওশাদ হোসেন অ্যাপসের মাধ্যমে
ব্যাংকের হিসাবে নজর রাখছিলেন। কিন্তু এদিন বিকালে তিনি দেখতে
পান যে, ব্যাংক হিসাব থেকে ১৪ হাজার ডলার তুলে নেওয়া হয়েছে এবং
ব্যাংকের একাউন্টে জনৈক রফিক উল্লাহ’র নামে ১ লাখ ৪০ হাজার
ডলারের একটি চেক জমা করা হয়েছে (চেক নম্বর ২৯০৭, তারিখ ১৯
সেপ্টেম্বর ২০২৩)। চেকের মেমোতে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনোভেশন ও
কন্সট্রাকশনের জন্য)। পরবর্তীতে সোসাইটির কর্মকর্তারা ব্যাংকে
যোগাযোগ কওে সোসাইটি সংক্রান্ত ব্যাংকের সকল কর্মকান্ড বন্ধ
করে দেন এবং ব্যাংক ও পুলিশ প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার
অনুরোধ জানায়। ফলে সোসাইটির ফান্ড বড় জালিয়াতি চক্রের হাত
থেকে রক্ষা পায়।
এদিকে এই জালিয়াতির ঘটনায় স্থানীয় ১১০ প্রিসিঙ্কটে একটি
অভিযোগ দায়ের করেছেন সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন।
পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের পাশাপাশি এফবিআইও
ঘটনার তদন্ত করছে। প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এই চেক
জালিয়াতির সঙ্গে কোন বাংলাদেশী জড়িত এবং সে সশরীরে ব্যাংকে
গিয়েছিল। পুলিশ তার আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে চেক থেকে। তাকে
সনাক্ত করা গেছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ঐ বাংলাদেশীর পরিচয়
প্রকাশ করেনি গোয়েন্দারা।
অপরদিকে উল্লেখিত ঘটনার পর বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী
কমিটির জরুরি সভায় নিরাপত্তার স্বার্থে টিডি ব্যাংকে
সোসাইটির সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি নতুন
অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সোসাইটি সূত্রে জানা
গেছে।