পেঁজা তুলো পালতোলা মেঘ-তরণী – আশ্বিন
- ফারুক সরকার প্রধান
অনিন্দ্য সৌন্দর্যে ধরা দিল প্রকৃতি এবার,
নমিত শিরে – আশ্বিন, ওগো তোমায় নমস্কার।
স্নিগ্ধ সিক্ত পৃথিবী ভুলে গেছে বর্ষার ধারা, মনোরমা
সবুজ প্রাণে হিল্লোলিত শ্বেতশুভ্র কাশে নৃত্যের প্রতিমা।
নীলাকাশ জুড়ে পেঁজা তুলো পালতোলা মেঘ-তরণী -
নিয়ে যায় আমার তরুণীর ভালবাসা-মন, রেখে যায়
জলতরঙ্গে ছলাৎ শব্দে শুধু তার অভিমানের ধন।
আশ্বিনা আম, বৈচি, বাতাবীলেবু
দশভুজার আরতি আর নিরঞ্জন শেষে,
ধনদাত্রী লক্ষ্মী এলো দীপাবলির বেশে।
আর দখিনা বাতাসে এনে দিলো
চাষী ভাইয়ের গোলাভরা নবান্নের আশা।
থই থই ঝিলের জলে নীল লাল নক্ষত্রের উঁকি
আমলকী জলপাই জগডুমুর অরবড়ই
সাথে নিয়ে করমচা চালতা ডেউয়া
রেখে যাবে আশ্বিনের স্মৃতি।
সাদা লাল শাপলা জবা হাতে, আলতা পরে
আলতো পায়ে শিশিরসিক্ত দূর্বা ঘাসে -
শিউলি তলায় যে বালিকা গেছে চলে,
গেয়েছে সে আশ্বিনা হাওয়ায় যৌবনের পদাবলী।
বেলি কুড়াতে এসে, নূপুর হারিয়ে শেষে
আব্দার নিয়ে কাঁদেনি সে তোমার মত।
আঁখিজল হীরকের আশ্বিনা গীতি আর
সব আকাশের নীল রঙ জমা রাখো এখন
স্মৃতির সিন্দুকে। মহালয়া মহাষ্টমী
অমাবস্যা না একাদশী পূর্ণিমা আবার?
সব পার্বণ আর পঞ্জিকার কথা ভুলে যাও।
ঘাসের পাখনার অবুঝ সবুজে ঢেলে দাও
আমার প্রেমের কবিতা সব।
পড়ে দেখো – সিঁদুরের চন্দ্রবিন্দু নিয়ে
সে আছে এখনো অপেক্ষায় তোমার ।
সিল্কেবোর্গ, ডেনমার্ক
১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২২