নাজিম উদ্দিন
ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশনে ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় যুক্ত করা হয়। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল,বলিভিয়ার মতো বিশ্বের মাত্র ৬ দেশের উৎসব এখনও পর্যন্ত UNESCO-র স্বীকৃতি পেয়েছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হল দুর্গাপুজো। ২০০১ সাল থেকে দেশের একাধিক রাজ্যের সংস্কৃতি ও উৎসব নিয়ে একটি সার্ভে শুরু করে ইউনেস্কো। সেই সার্ভে অনুয়ায়ী হেরিটেজের তালিকায় স্থান দেওয়া হল বাংলার দুর্গাপুজোকে। বাঙালির অন্যতম এক প্রধান উৎসব এই পুজো। গোটা দেশ থেকে মানুষজন পুজোর সময়ে চলে আসেন এই উৎসবে সামিল হতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, যেখানেই বাঙালি রয়েছে সেখানেও ছড়িয়ে পড়েছে এই উৎসব।
এবছর অগাস্ট মাসে দুর্গাপুজোকে হেরিটেজের স্বীকৃতি দিতে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন করে রাজ্য সরকার। বছর দুয়েক আগে বাঙালির এই উৎসবকে 'মেগা ফেস্টিভ্যাল' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল। এমনকী, ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’-র ভাবনা নজর কেড়েছিল UNESCO কর্মকর্তাদের। ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।” উৎসব চলাকালীন সব শ্রেণি, ধর্ম এবং জাতিগত বিভাজন ভেঙে দর্শকদের ভিড়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই গোটা প্রক্রিয়াই ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে UNESCO দরবারে। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১০ সালে পুরুলিয়ার ছৌ নাচকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। একইসঙ্গে স্বীকৃতি দেওয়া হয় কেরলের মুদিয়েট্টু লোকনৃত্যকে। এছাড়া ২০১৭ সালে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল এই বাংলার বিশেষ ধর্মীয় মেলা কুম্ভমেলাকে।