দুই গুণী বন্ধু। দুই কৃতি খেলোয়াড় ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তাঁদের বন্ধুত্ব ছয় দশকেরও বেশি। উনিশশ' একাত্তরে 'স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল'-এর অধিনায়ক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক প্রথিতযশা খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠক মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ জাকারিয়া পিন্টু (বামে)। স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান ফুটবল দলে স্থান করে নিতে পারা অল্প কয়েকজন বাঙালি খেলোয়াড়ের মধ্যে অন্যতম তিনি। ১৯৯৫ সালে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা 'স্বাধীনতা পুরস্কার'-এ ভূষিত হন জাকারিয়া পিন্টু। তাঁর বর্তমান বয়স ৭৯ বছর। অপর জন পূর্ণকালীন ক্রীড়া সাংবাদিকতায় নিবেদিতপ্রাণ পথিকৃৎ ক্রীড়া সাংবাদিক ও সম্পাদক মুহম্মদ কামরুজ্জামান (ডানে)। ১৯৬৭ সালে 'দৈনিক পাকিস্তান' (পরে দৈনিক বাংলা) পত্রিকায় পেশাদার সাংবাদিকতার শুরু তাঁর। দীর্ঘ ৫০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি 'দৈনিক বাংলা' পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে অসংখ্য নারী ও পুরুষ ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সাংবাদিকের আলোকবর্তিকা হিসেবে অবদান রেখেছেন। আরও কাজ করেছেন 'বাংলা ভিশন' টেলিভিশন চ্যানেলে ক্রীড়া বিভাগের প্রধান হিসেবে এবং জার্মান বেতার তরঙ্গ ডয়চে ভেলে বাংলা রেডিও-র সংবাদদাতা হিসেবে। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ে যশস্বী ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড় ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি 'অনুষ্টুপ' ছদ্মনামে লিখে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু মুহম্মদ কামরুজ্জামান জাতীয় প্রেস ক্লাবের 'আজীবন সদস্য' সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তাঁর বর্তমান বয়স ৮৩ বছর। ১৯৭৮ সালে ক্রীড়া সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা পেশায় আমার যোগদানের সূচনা লগ্ন থেকে মুহম্মদ কামরুজ্জামান ভাইকে আমি 'মেন্টর' হিসেবে পেয়েছি। পেয়ে আসছি অবারিত স্নেহ। আগে থেকেই আমি তাঁর লেখার ভক্ত ছিলাম। বেশ পরে, ১৯৮১ সালে দুজনই জানতে পারি কামরুজ্জামান ভাই ও আমার জন্ম একই শহরে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মেহেরপুরে! অবশ্য দুই দশকের বেশি ব্যবধানে। এবছর ফেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলাদেশ সফরকালে তাঁর সাথে একাধিকবার আড্ডায় বসার সুযোগ হয়েছে। আর সাংবাদিকতা পেশার সূত্রে জাকারিয়া পিন্টু ভাইয়ের সাথেও পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা সেই ১৯৭৮ সাল থেকে। প্রায় ২০ বছর আগে আমি কানাডায় অভিবাসী হওয়ার আগে পিন্টু ভাইয়ের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। আমার সেই সময়ের কর্মস্থল ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনের বারিধারা কার্যালয়ে। আমার জন্য তাঁর স্নেহও অবারিত। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুই বন্ধুর প্রাণবন্ত এই ছবিটি তোলা হয়েছে আট বছর আগে। ২০১৪ সালে। ছবিটি তুলেছিলেন আমার সাবেক সহকর্মী, বর্তমানে প্রয়াত আলোকচিত্র সাংবাদিক মুহম্মদ লুৎফর রহমান বীনু। বাংলাদেশের দুই গুণী সন্তান জামান ভাই ও পিন্টু ভাইয়ের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। টরন্টো ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২