এম আব্দুর রাজ্জাক,বগুড়া থেকে :
আসামি বগুড়ায় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পালিয়ে যাওয়া আসামি শাহাদত হোসেন কলম (৩৪) ও তাকে সহায়তাকারী শাকিলকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। (১৭ জানুয়ারি শুক্রবার) দিবাগত রাতে তাদের আটক করা হয়। (১৮ জানুয়ারি শনিবার ) বিকেল ৪টায় বগুড়া সদর থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া মুখপাত্র সুমন রঞ্জন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাথরুমে যাওয়ার নাম করে আসামি কলম পালিয়ে যান। আসামি কলমের নামে হত্যা, ডাকাতি সহ ৪টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। আসামি শাহাদত হোসেন কলম বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের আব্দুস সামাদ খোকার ছেলে ও সহায়তাকারী শাকিল একই গ্রামের বাবলুর ছেলে। বগুড়া সদর থানায় পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া মুখপাত্র সুমন রঞ্জন সরকার জানান, হাসপাতাল থেকে পালানোর পর আসামি কলম শহরের মালতিনগর গ্রেপ্তারকৃত শাকিলের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে হাতকড়া খুলে নওগাঁ জেলার নিয়ামত উপজেলার নেহেন্দা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ডিবি পুলিশ ও আদমদীঘি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পলাতক আসামি কলমকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় দায়িত্বরত পুলিশের এএসআই মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুলকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সময় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোর্শেদ পিপিএম, আদমদীঘি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মঈনুদ্দিন, আদমদিঘী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর হাইস্কুল পাড়ার এমরান হোসেন। বাড়ির কাছে পৌঁছামাত্র তিন ছিনতাইকারী তার হাতে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দৌঁড় দেয়। এ সময় তার চিৎকারে জনগণ এগিয়ে এসে বাঁধন নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়। অপর দুই ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা বিষয়টি মোবাইল ফোনে আশপাশের লোকজনকে জানালে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলার আদমদীঘির আমইল গ্রামের লোকজন বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ছিনতাইকারী রাজু পালোয়ান ও মো. কলমকে আটক করে বেধড়ক মারপিট করে থানা পুলিশকে দেয়। এ সময় ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ধারালো চাকু, ১৯ হাজার টাকা, বিকাশের জন্য ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসেট, ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যাংকের চেক উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে উন্নত চিকিৎসার বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত রাজু পালোয়ান ও মো. কলম বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিল। এদের পাহারায় দায়িত্বে ছিলেন বগুড়া পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ পুলিশের এএসআই মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হাতকড়া পরিহিত আসামি শাহাদত হোসেন কলম হাসপাতালের বাথরুম যাওয়ার নামে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।