জহির রায়হান তার উপন্যাসে বলেছিলেন, "আসছে ফাল্গুনে কিন্তু আমরা হবো দ্বিগুণ"...

বাহান্নর আন্দোলন দেখিনি, একাত্তরের আন্দোলনটাও তেমন করে দেখা হয়নি তখন খুবই ছোট। যতোটুকু দেখেছি নব্বই এর আন্দোলন.. তবে চব্বিশের আন্দোলন শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয় এশিয়ার অনেক বড় বড় আন্দোলনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে আজকের সন্তানেরা.. এদেরকেই বলে বাঙালি বীর সন্তান..

 সব সময় শুনে এসেছি ছাত্র রাজনীতির কথা কিন্তু সেই রাজনীতি দেখেছি বা জেনেছি শুধুই হাতিয়ারের ঝনঝনানি নীতির কথা তবে এই চব্বিশের আন্দোলনে দেখলাম এবং জানলাম ছাত্র রাজনীতি কেমন হয়!! তাই যখনই দেখেছি ছাত্র-ছাত্রীরা নিজ স্বাধীন দেশে নিজেদেরই ন্যায্য অধিকারের জন্য রাজপথে নেমেছে তখনই নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক ভেবে গর্বিত মনে করেছি. সাবাস আমাদের সন্তানেরা..

আবার মর্মাহত হয়েছি ছাত্র সাইদকে যেভাবে হত্যা করা হলো.. কতটা বিশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল স্বাধীন দেশে স্বাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে অথচ সেই রক্ষাকারীরা রক্ষার পরিবর্তে তার অদম্য বিশ্বাসকে ভেঙে দিয়ে সাইদকে মাটিতে মিশিয়ে দিল। অন্যদিকে এখনো কানে বেজে যাচ্ছে, "পানি লাগবে... পা--নি".. মুগ্ধ-এর এই মানবতাকে হত্যা করে সেই কারবালা প্রান্তরের কথা স্মরণ করিয়ে দিল..যাকে বলি ক্ষমতার লড়াই। তাই বলতে হচ্ছে দুঃখ করে, "হায়রে আমার মন মাতানো স্বাধীন দেশ.."

একটি স্বাধীন দেশে আবারও যখন স্বাধীনতা ও বিজয়ের পতাকা নিয়ে উল্লাস করা যায় তখনই বুঝতে হবে কতটা মনোবল এইসব  সন্তানদের আর একেই বলে ছাত্র রাজনীতি আর আমার সৌভাগ্য হলো এমন এক ছাত্র আন্দোলন দেখার....তাইতো৷ নিজেকে বাঙালি ভাবলেই খুশিতে ভরে উঠে মন..

এতোকিছুর পর শেষ মূহুর্ত ছিল আসলেই লজ্জাকর.. কি প্রয়োজন ছিল গণভবন লুট করা, ভাংচুর করা,অগ্নিসংযোগ করা.. কি প্রয়োজন ছিল সংসদভবনকে অসম্মান করা.. যেখানে রাষ্ট্রের পবিত্রতা থাকে..এগুলো  দেখে বারবার নিজেকে প্রশ্ন করেছি, এই সেইসব ছাত্ররা যারা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে আন্দোলন করেছে!!দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে!! তবে এইসব কান্ডকারখানা মনে করিয়ে দেয় সেই পুরানো নোংরা রাজনীতির কথা..

আজকের সন্তানেরাই আগামীকালের ভবিষ্যত তাই তোমাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ফ্যাসিবাদ  থেকে মুক্ত রেখে আমরা বয়স্করা যে ক'দিন বেঁচে আছি দেখে যেন যেতে পারি একটি চিন্তামুক্ত "বাংলাদেশ",একটি সুন্দর "বাংলাদেশ"...

আমার দেশকে যে বড্ড ভালবাসি..
I love Bangladesh, I love Barisal..