বাংলাদেশ মনে হচ্ছে দুর্নীতির একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। হঠাৎ শুরু হয়েছে প্রচন্ড বিষ্ফোরণ। একটু-আধটু অগ্ন্যুৎপাত মাঝে মাঝেই চলেছে, কিন্তু এখনকার মতো এমন ভয়াবহ রূপ আগে দেখা যায়নি।
অবশ্য এতে আমাদের কি কিছু এসে যায়? এ সত্য তো আমরা মেনেই নিয়েছি, যে যেখানে যে কাজের জন্যই যান ঘুষ দিতে হবে। ঘুষ দিয়ে কাজ উদ্ধার করিয়ে নেয়া আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠিত বিধান। এ ব্যাপারে কোন গোপনীয়তা এখন আর নেই। ঘুষ-দূর্নীতি আমাদের জাতীয় চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে।
বলতে দ্বিধা নেই, সার্বিকভাবেই আমাদের মরালিটি বা নৈতিকতায় ধস নেমেছে। যে জাতির নৈতিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে যায় সে জাতি তো নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যায়। জাতি হিসেবে আমাদের ধ্বংসের লক্ষণগুলি তো ক্রমাগত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যে শিক্ষা ব্যবস্থায় সন্তান একজন আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধংস করে দেয়া হচ্ছে। মহামানব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যে সব নীতিবাক্য দিয়ে আমাদের বাল্যজীবনকে বেঁধে দিয়েছিলেন সেগুলিকে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। ‘সদা সত্য কথা বলিবে’ ‘পরের দ্রব্য না বলিয়া লইলে চুরি করা হয়’ ইত্যাদি সুবচনগুলি আজ কোথায় গেল?
বিদ্বজনেরা আক্ষেপ করছেন, মেধা-মননে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে লেখাপডা নেই, জ্ঞান চর্চার পরিবেশ নেই, বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ নেই। সার্বিক অর্থে এই জাতির এগোবার পথ রুদ্ধ। অভিযাগ উঠেছে, পরিকল্পিতভাবে আমাদের এগোবার পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। যে পথে গেলে জাতি ধ্বংস হয়ে যায় সেই পথে আমাদের এগিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ফলে নিজেদের যোগ্যতা হারিয়ে আমরা পরনির্ভরশীল হয়ে উঠছি। প্রতিবেশী দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ভাড়া করে এনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক ভারতীয় এখন আমাদের দেশে বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। দিনে দিনে তারাই আমাদের মুখ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠছেন।
একজনের লেখায় পড়লাম, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুখোমুখি বসে সমানে সমানে দর কষাকষি করার মতো যোগ্যতা নাকি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেই। কোন চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক প্রণয়নে তাদের ভাষার মারপ্যাঁচ ধরতে পারার মতো মেধা আমাদের নেই। বেরুবাডি এক ঝটকায় ছিনিয়ে নিয়ে দহগ্রাম বিষয়ক চুক্তিতে তারা লিখেছিল যাতায়াতের জন্য বাংলাদেশকে ‘করিডোর’ দেয়া হবে। রাস্তা নয়, করিডোর। এই করিডোরের ব্যাখ্যা নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি কখনও হয়নি। বঙ্গবন্ধু এ নিয়ে খুব ক্ষুব্ধ ছিলেন। এবারে শুনছি, সত্য-মিথ্যা জানি না, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল যোগাযোগের ব্যাপারে নাকি ট্রানজিটের বদলে লেখা হয়েছ মুভমেন্ট। জানি না এর অর্থ পরবর্তীতে কি দাঁড়াবে
বাংলাদেশ মনে হচ্ছে দুর্নীতির একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি-- মনজুর আহমেদ
প্রকাশিত: ০৭ জুন, ২০২৫, ১০:৫২ এএম

সারাবাংলা রিলেটেড নিউজ

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এ ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ পালন

জাতীয় শিল্পকলার লিয়াকত আলী লাকী সহ পাঁচজনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল

বগুড়ায় এবার ৬৮৫টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ১৫ বস্তা টাকা!

ভোট আছে ভোটার নেই

দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধের প্রস্তাব

দিনাজপুরে ব্যতিক্রম পেশায় লক্ষাধিক নারী

Senator Roger Marshall to extend support to strengthen further Dhaka-Washington ties