কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বলারামপুর ইউনিয়নের গাজীপুর খান সরকারি স্কুল কলেজ এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ৩ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।  ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ৩ দিনব্যাপী এ মেলাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রের মাঠে মেলার মালামাল এনে স্তুপ করা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে ওই কেন্দ্রে উপজেলার ৫টি বিদ্যালয়ের অন্তত ৬ শতাধিক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।   কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি অনুসারে এ কেন্দ্রে ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা ২য় পত্র এবং ২০ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা চলাকালে ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারির কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাই পরীক্ষার সময়ে সংরক্ষিত এলাকায় মেলার আয়োজন বেআইনি।

 স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর ১৮, ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি হযরত পীর শাহবাজ (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে বাৎসরিক ওরশ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুরিদ ও ভক্তরা ওই মাঠে এসে জড়ো হন। এ উপলক্ষে মাজারসংলগ্ন গাজীপুর খান সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বসে মেলা। ঐতিহ্যবাহী পুরনো এ মেলায় ঢল নামে লাখো মানুষের। কিন্তু এবার এসএসসি পরীক্ষার সময়ে মেলার পূর্বনির্ধারিত সময় এসে যাওয়ায় মেলা না পিছিয়ে আগের সময়েই রাখা হয়। এরই মধ্যে বুধবার এসএসসি পরীক্ষার ওই কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্টল ও স্থাপনা তৈরি করতে যাবতীয় মালামাল এনে জড়ো করে রাখা হয়েছে।   বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বলেন, মেলা নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু পরীক্ষার সময়ে মেলার আয়োজন না করে পিছিয়ে দেওয়া হলে কোনো সমস্যা হতো।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেন্দ্রে অংশ নেওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠানপ্রধান বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইন অনুসারে কেন্দ্র প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন থেকে কর্তৃপক্ষকে সরে আসা উচিত ছিল।

 এদিকে মেলার অনুমতি না থাকলেও মেলার আয়োজক তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুষার সাংবাদিকদের বলেন, দিনের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মেলা শুরু হবে। এতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।  গাজীপুর খান সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল বাতেন বলেন, এ কেন্দ্রে ৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।  তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাস জানান, এখানে মেলার কোনো অনুমতি নেই এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে এ ধরনের মেলা করতে দেওয়া হবে না।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হাসান বলেন, এখানে কাউকে মেলা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। থানার ওসিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নিজামুল করিম বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ওই কেন্দ্রের মাঠে মেলার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।