এম আব্দুর রাজ্জাক, বগুড়া থেকে : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হচ্ছে আজ। পুরাণমতে, বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন দেবীবরণ। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানানো হয়। মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। এরপর নেচে গেয়ে দেবীদুর্গাকে বিদায় জানান সনাতন ধর্মালম্বীরা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া শহরের বিভিন্ন সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এ মন্দিরে সকাল থেকেই সিঁদুররাঙা পুণ্যার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। সকালে বিজয়া দশমীর পূজা শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় ছিল দেবীদুর্গার বিদায়ের সুর।  মন্দিরে আসা অদীতি রানি বলেন, পাঁচ দিন ধরে নানা আয়োজনে পূজা উদযাপন করা হয়েছে। সিঁদুর খেলা, নেচে গেয়ে উদযাপন করা হয়েছে। মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে এতে কিছুটা খারাপ লাগছে। আগামী বছর আবারও ফিরে আসবে। গত ১৪ অক্টোবর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবী পক্ষের শুরু হয়। আর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে ২০ অক্টোবর শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর হাসি-আনন্দ আর পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে কেটে যায় চারদিন। আজ বিজয়া দশমী, সকালে ‘বিহিত পূজা’ আর ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্যদিয়ে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। আর বিকেলে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়েই শেষ হবে সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি ও মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মতো ঘটনা বাড়বে। পূজা উদযাপন পরিষদের হিসাবে এবার বগুড়ার ১২টি উপজেলায় ৭০৭টি মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে পৌর শহরে পূজার সংখ্যা ছিল ৬২টি। এবছর সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।