বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে টাকা, ডলার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা, রুপি ও ডলার পাচার বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক এ  স্থলবন্দর দিয়ে হুন্ডির কোটি কোটি টাকা ও ডলার প্রতিদিন পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারতে। তারা চেকপোস্ট এলাকায়ই গড়ে তুলেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।   কয়েকটি সিন্ডিকেটের এমন বিপুল পরিমাণ মুদ্রা পাচারের কারণে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। চেকপোস্টের বিভিন্ন মার্কেটে দোকানঘর ভাড়া নিয়ে বসে আছে একশ্রেণির দোকানদার। যাদের দোকানে কোনো মালামাল নেই। অথচ দোকানগুলোতে সব সময় থাকে জমজমাট  মানুষের ভিড়। এসব দোকানে রয়েছে ছয়-সাত জন করে কর্মচারীও। পাচারের জন্য চেকপোস্টেই গড়ে উঠেছে বেশকিছু ট্রাভেল এজেন্সি, কম্পিউটারের দোকান, স্টোর, ট্রেডার্স ও এন্টারপ্রাইজের বাহারি নামের ছোট ছোট সাইনবোর্ডযুক্ত দোকান। এসব দোকান থেকেই বিভিন্ন ধরনের চিরকুটের মাধ্যমে ও মোবাইলে তাদের লোক দিয়ে পাচার করা হচ্ছে হুন্ডির টাকা ও ডলার।   ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত করে থাকেন ভারতে। কেউ চিকিৎসা, কেউ বেড়াতে কেউবা ব্যাবসায়িক কাজে ভারতে যান। ভারতে এসব যাত্রীর মোটা অঙ্কের টাকা ও ডলার প্রয়োজন  হয়। বেনাপোলকেন্দ্রিক হুন্ডি কারবারিদের যশোর, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কলকাতা, এমনকি মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। চিরকুট, টোকেন, কুরিয়ার সার্ভিস, মোবাইল ফোন ও টিটির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতবদল হচ্ছে। কথিত মানি চেঞ্জারের নামে একশ্রেণির এন্টারপ্রাইজ, স্টোর, ট্রেডার্স, ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিসের স্টাফ ও আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকের চালক-হেলপাররা অবৈধ মুদ্রা পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ  রয়েছে।  বিজিবি জানায়, গত ১ বছরে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাচারের সময় ৮৮ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার, ২৬ হাজার কানাডিয়ান ডলার, ৯ লাখ ৯২ হাজার ভারতীয়  রুপি, ৫৭ হাজার সৌদি রিয়াল ও ২৬ লাখ টাকা জব্দ করেছে বিজিবি সদস্যরা। এ সময় ১০ হুন্ডি পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়।

  গত এক বছরে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ ১০ হুন্ডি পাচারকারী বিজিবির হাতে আটক হলেও তারা কেউই প্রকৃত মালিক নন। তারা টাকার বিনিময়ে এসব হুন্ডির টাকা পাচার করে থাকেন মাত্র। এভাবে প্রকৃত হুন্ডি কারবারিরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চেকপোস্টে মানি চেঞ্জারের পাশাপাশি বেশকিছু দোকানে অবৈধ টাকা-পয়সা লেনদেন হয়ে থাকে। পুলিশ বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে বেশ কয়েক জনকে আটক করেছে। যাত্রীদের সচেতন করছি। পুলিশ এ ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।  যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল বলেন, গত এক বছরে বিপুল পরিমাণ দেশি বিদেশি মুদ্রাসহ ১০ হুন্ডি পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। চোরাকারবারিরা ডলার,  রুপি, টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে থাকে। বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় হুন্ডি পাচার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।