নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং
আর্টস বিপা’র ৩০ বছর পূতি উৎসব শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭
জুলাই) থেকে শুরু হওয়া চারদিনের এই উৎসব চলবে রোববার (৩০ জুলাই)
পর্যন্ত। নিউইয়র্কের জ্যাম্যাইকা আর্ট সেন্টারে এই উৎসবের
উদ্বোধন করেন বিপা’র প্রথম পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ সোসাইটির
সাবেক সভাপতি আওলাদ হোসেন খান।
বর্নাঢ্য আয়োজন আর উৎসব মুখর পরিবেশে শুরু হয় বিপার
চারদিনব্যাপী বর্ষপূতি উৎসব। বিপা’র ৩০ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত
এই উৎসবের প্রথম দিনই নাচ-গান আর ঢাক-ঢোলের গগন বিদারী
আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠে উৎসব । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফিতা
কেটে নিউইয়র্কের জ্যাম্যাইকা আর্ট সেন্টারে এই উৎসবের
উদ্বোধন করেন বিপা’র প্রথম পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ সোসাইটির
সাবেক সভাপতি আওলাদ হোসেন খান। উড়ানো হয় রং বে রং এর এক গুচছ
বেলুন। এরপর আমন্ত্রিত অতিথি নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল
জেনারেল ড. মনিরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন উদ্বোধক
আওলাদ হোসেন খান।
উদ্বোধনী পর্বে ‘ফায়ার পারফর্মিং আটর্স’-এর চিত্তাকর্ষক ব্যান্ড
পরিবেশনা ছিল অনুষ্ঠানের একটি ভিন্নধর্মী সংযোজন। শিল্পীদের
উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে অনেকেই চত্বরে নাচতে শুরু করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশিত হয় সমবেত কন্ঠে ‘প্রত্যয়ের সঙ্গীত’।
এতে অংশগ্রহণ করে জেরিন মাইশা, আলভান চৌধুরী,আরিয়ান কবির,
কামিলা আলম, নাবিলা হামিদ, নওশিন চৌধুরী, সামিয়া ইসলাম, মুন
হাই, এলমা রুদমিলা, রায়সা জেরিন, চলন্তিকা রায়, নুজহাত সুরাইয়া
হক, প্রিতিজা পারমিতা, ফাবিয়া হোসেন নিসা, রওনক হোসেন,
রেশিতা চৌধরী, নাজমা ইসলাম, সোহানি ইসলাম, উর্মি রোজারিও,
μিস্টিনা রোজারিও লিপি, আর্য বড়ুয়া, সোনিয়া মুত্তালিব, লিমন
চৌধুরী, আক- লিমা চৌধুরী, সাবিনা শারমিন, সাহাত নবী,
আমিনা ইসলাম, শ্রদ্ধা সাহা, রায়না বড়ুয়া, ফারিবা করিম, ইরাজ
চৌধুরী, আরিয়া কামাল, জারিয়া কামাল, অর্নব মন্ডল, অনিরন সরকার,
রেথ দাস, জান্নাতুল ফেরদৌস মৃত্তিকা, বিভা সাহা, আলভিনা রহমান,
জুনেরা ইসলাম, ডধু রোমিও কইয়া, আনিশা হোসেন, ইশরাত সামিরাু এবং শ্রেষ্ঠা দেবনাথ। রচয়িতা এবং সুরকার নিলোফার জাহান এবং
নির্দেশনায় ছিলেন সেলিমা আশরাফ ও নিলোফার জাহান। যন্ত্রসঙ্গীতে
ছিলেন নাদিম আহমেদ এবং বিডি মিউজিক।
লোকনৃত্য ‘কালো ভ্রমর’ পর্বে অংশ নেন আপিয়া জাহান পম্পি,
শাহিয়ান শারমিন, নামিয়া আমিন, জারিন ইসলাম, নৌশিন চৌধুরী,
রায়সা জেরিন, মুনিরা আহমেদ এবং কামিলা সোফি ইসলাম।
বিপার বড়দের নৃত্যানুষ্ঠান ‘বাংলাদেশের মেয়ে’ পবে অংশ নেন শ্রেষ্ঠা
দেবনাথ, শ্রদ্ধা সাহা, রায়না বড়ুয়া, মুসাররত অপ্সরা রশিদ, আয়জা
আনাম, আরিয়ানা আনাম, শ্রেষ্ঠা দেবি, ফারিবা করিম, আলভিনা
রহমান, আমিনা ইসলাম জানাতুল ইসলাম মৃত্তিকা, সাহিতা নবী,
আনিশা হুসেন, সিমরা আজাদ এবং ইনাইয়া জামান।
এছাড়া শিশুদের একটি চিত্রপ্রদর্শনী এবং সাংবাদিক এবং অভ্যাগতদের
জন্য ছিলো নৈশভোজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন সাবিনা শারমিন
নিহার এবং আবীর আলমগীর।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবারের অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল ৫টায়। প্রথমে
ভেতরের মঞ্চে পরিবেশিত হয় নৃত্যানুষ্ঠান ‘রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের তাসের
দেশ’ এবং ‘আজিন এবং বন্ধুদের পরিবেশিত সঙ্গীতানুষ্ঠান। পরে মূল
মঞ্চে পরিবেশিত হবে সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘হৃদয়ে স্বদেশ, আমার বাংলাদেশ
এবং বিপা’র পুরনো ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠান।
উৎসববের তৃতীয় দিন রোববারের অনুষ্ঠানও শুরু হবে বিকেল ৫ টায়।
এইদিন প্রথমে ভেতরের মঞ্চে পরিবেশিত হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘ফুল, কুঁড়ি
ও আমরা’ এবং কত্থক ও ভরতনাট্যম। পরে মুক্তমঞ্চে পরিবেশিত হবে নায়লা
আজাদ ও মিতালি দাসের অনুষ্ঠান এবং বিরসা চ্যাটার্জির
কোয়ার্ট্রেট।
বিপার কর্মকর্তা, নতুন-পুরাতন শিক্ষার্থী, অভিভাব আর অতিথিদের
উপস্থিতিতে উৎসব অনুষ্ঠান মিলন মেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে বিপার
৩০ বছর পূতি উৎসব অনুষ্ঠানের প্রশংসা আর সফলতা কামনা করেন
প্রবাসীরা।
উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, অনেক
প্রতিকূলতা সত্তে¡ও গত তিরিশ বছর যাবত আমেরিকার মাটিতে বিপা
বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে অত্যন্ত সফলতার সাথে তুলে ধরেছে।
তিনি বিপার সাফল্য কামনা করেন।
এদিন প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর পরিচালনায় এতে
অংশগ্রহণ করেন বিপার তিন কর্ণধার সেলিমা আশরাফ, এ্যানি
ফেরদৌস, নিলোফার জাহান এবং পথম দিকের সাংগঠনিকভাবে
সহযোগী কন্ঠশিল্পী শহীদ হাসান, মাহবুবুল হক সোহেল এবং জাফর
ফেরদৌস। তাঁদের আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে উঠে আসে কি কঠিন
বৈরিতার মধ্য দিয়ে কেবলমাত্র কঠোর মনোবল, আত্মত্যাগ এবং
একাগ্রতার কারণে বিপা আজকের এই অব¯’ানে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, প্রবাসে বাংলা ভাষা আর শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে ১৯৯৩ সালে
প্রতিষ্ঠিত বিপা হাটি হাটি পা পা করে ৩০ বছরে পদার্পণ করেছে।
নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান হিসেবে
বিপা এই ৩০ বছরে বিন্দু থেকে সাগরে পরিণত হয়েছে- এমন অভিমত
সুধিজনদের। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে আগামী ৩০ বছর বা ৫০ বছর
নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্য নেতৃত্ব কি বিপায় রয়েছে বা প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে?