আমাদের দেশে গ্র্যাজুয়েশন আর ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জনকে সমার্থক ধরা হয়। এ কারণেই এদেশে যখন কিন্ডারগার্টেনে আমার ছেলের গ্র্যাজুয়েশন হলো, আমি মনে মনে সেটাকে এক ধরনের ক্রীড়া-কৌতুক বলে ধরে নিয়েছিলাম। পরে দেখলাম যে, তা তো নয়! আসলে বিদ্যায়তনিক যে কোনো ধাপ সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হলেই সেটাকে গ্র্যাজুয়েশন বলে। আর সেটাকে আনুষ্ঠানিক উদযাপন করার অর্থ হলো, জীবনের উল্লেখযোগ্য একটা ধাপ হিসেবে সেটাকে স্মরণীয় করে রাখা এবং গ্র্যাজুয়েটকে আরও সাফল্য অর্জন করতে আহ্বান জানানো।
 আনন্দধ্বনির প্রতিষ্ঠাতা ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী অর্ঘ্যসারথী শিকদারের ছেলে সুপ্রভ শিকদার গল্পের গ্র্যাজুয়েশন উদযাপন অনুষ্ঠানে গিয়ে উপরের কথাগুলো আমার মনে হয়েছিল। গল্প ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে, এই বিতর্কে পরাজিত বাবা-মা যদি গল্পের সিদ্ধান্ত খোলামনে গ্রহণ করতে না পারতেন, তাহলে সেই অনুষ্ঠান হতো কি না, সন্দেহ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ছেলের অবিচলিত লক্ষ্যের কাছে মা-বাবা পরাজিত হয়েও আনন্দিত হয়েছিলেন এই ভেবে যে, ছেলে জেনেশুনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ভালো স্কলারশিপ পেয়েছে, এবং দেশের অন্যতম সেরা ও তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান পেয়েছে। বিতর্কের এক পর্যায়ে অর্ঘ্য যখন আমার কাছে পরামর্শের জন্য ফোন করে বলেছিলেন, 'মামা, আমি কী করবো?'। আমি তাকে গল্পের সিদ্ধান্ত অকুণ্ঠচিত্তে মেনে নিতে সুপারিশ করেছিলাম।
গল্প শীর্ষ মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের একজন। আমার বিশ্বাস, সে যে বিদ্যাই অর্জন করুক না কেনো, সেখানেই সে সেরা সাফল্য নিয়ে আসবে।
সুপ্রভ শিকদার গল্পের প্রভায় আমরা আলোকিত হবো, সে বিশ্বাসের কথাই আমি সেদিনকার অনুষ্ঠানে বলেছিলাম, সে বিশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে পাবো- সে অপেক্ষায় থাকলাম।