NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

লুমানের গ্রামীণ পুনর্জাগরণের স্বপ্ন


ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা,বেইজিং : প্রকাশিত:  ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

লুমানের গ্রামীণ পুনর্জাগরণের স্বপ্ন

 


২০১১ সালে, একজন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক হিসাবে, লুমান তার স্বামীর সাথে দেশের বাড়ি ফিরে আসেন এবং টার্কি প্রজনন ব্যবসা শুরু করেন। বিগত ১২ বছরে, তাদের প্রতিষ্ঠিত  চিয়াংসু চিউনমান কৃষি প্রযুক্তি কোং ১০০ মিলিয়ন ইউয়ানের বার্ষিক বিক্রয়সহ একটি আধুনিক স্মার্ট কৃষি উদ্যোগে পরিণত হয়েছে। একই সাথে তারা আশেপাশের লোকদের ধনী হতেও সাহা‍য্য করেছেন। "শিল্পে সমৃদ্ধি হল গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের সারমর্ম। কীভাবে যুবকদের গ্রামাঞ্চলে থাকতে উৎসাহিত করা যায় এবং কীভাবে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের চেতনা প্রচারের জন্য আধুনিক স্মার্ট কৃষির ওপর নির্ভর করা যায়?" এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করছেন লুমান।

চিয়াংসু প্রদেশের ইয়ানছেং শহরের চিয়ানহু জেলার কাওজুও থানার ছেনচিয়া গ্রাম একটি দূরবর্তী গ্রাম। স্থানীয়রা একে ডাকে "শিয়াংকালা" বা কোণে থাকা ছোট গ্রাম। তবে এ দূরবর্তী গ্রামের ৪৭৬ পরিবারের মধ্যে ৩০০টিরও বেশি কৃষিপণ্য বিক্রি করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ছেনচিয়া গ্রামকে চিয়াংসু প্রদেশের "গ্রামীণ ই-কমার্স ডেমোনস্ট্রেশন ভিলেজ" নামে ডাকা হয়। গ্রামবাসীরা সবাই বলে, ছেনচিয়া গ্রামের পরিবর্তন শুরু হয়েছিল চিউনমান কৃষি প্রযুক্তি কোংর মাধ্যমে।

২০১১ সালে, ২৬ বছর বয়সী লুমান একটি বড় শহরে তার হোয়াইট-কলার চাকরী ত‍্যাগ করে, তার স্বামী লিয়াও জেংচিউনের সাথে ছেনচিয়া গ্রামে এসে টার্কি ব্যবসা শুরু করেন। তারা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব একটি জগত তৈরি করেন।

"তারা মাসে ৮-৯ হাজার ইউয়ানের বেতন ছেড়ে দিয়ে, ফিরে এসে মুরগি পালন করতে শুরু করল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা কোনো কাজে আসল না!" ব্যবসার শুরুতে এমন কথা তাদের শুনতে হতো। কিন্তু লু মান ও তার স্বামী সেদিকে তাকালেন না। তারা প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং গভীর রাতে ঘুমাতে যেতেন। একই সময়ে, তারা তাদের পিতামাতা ও গ্রামবাসীদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে থাকেন। কিন্তু দু'জন কখনই দমে যাননি। লুমান বিশ্বাস করতেন যে, টার্কির উচ্চ পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং চীনে টার্কি ব্যবসার সম্ভাবনা বিশাল। তাদের দৃঢ়তা ও পরিশ্রমের কারণে এই তরুণ দম্পতির টার্কি প্রজনন প্রযুক্তি ক্রমেই পরিশীলিত হয়ে ওঠে এবং ই-কমার্সের ক্রমবর্ধমান তরঙ্গের সাহায্যে, তারা "ইন্টারনেট ও নতুন জাত টার্কি" মডেলে ইন্টারনেটে  বিক্রয় শুরু করেন। সারা দেশ থেকে গ্রাহকরা পণ্য পরিদর্শন করার জন্য ছেনচিয়া গ্রামে আসতে শুরু করেন এবং একের পর এক অর্ডার দিতে থাকেন।

ব্যবসার প্রক্রিয়ায়, লু মান ও লিয়াও জেং চিউন উদ্ভাবনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। একসময় তারা ১০০০ মু জমি ভাড়া করতে ১ মিলিয়ন ইউয়ান ঋণ নেন। তারা ছোট খামারটিকে একটি বড় ফার্ম-এ উন্নীত করেন। ঐতিহ্যবাহী খামারগুলির "নোংরা" দৃশ্যের বিপরীতে, এখানে দেখা যায় পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, এখানে এমনকি বর্জ্যও কাজে লাগানো হয়। এখানে টার্কির মলকে পুকুরে মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। টার্কির মল বায়োগ্যাসেও রূপান্তরিত করা যেতে পারে। টার্কির বাচ্চাকে গরম রাখার জন্য বায়োগ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। টার্কির পালক কম মূল্যের ছিল, কিন্তু লিয়াও জেং চিউন তার দক্ষতা ব্যবহার করে পালকের শিল্পকর্ম তৈরি করেন। যেগুলি জাতীয় পেটেন্টও পেয়েছে। ধীরে ধীরে এ শিল্প নতুন বিকশিত হয়েছে। আর এ শিল্প আশেপাশের লোকদেরকে ধনী হতে সাহায্য করে।

লুমান বিশ্বাস করেন যে, ব্যক্তিগত সম্পদ থাকলেই কেউ প্রকৃত ধনী হয় না, গ্রামবাসীদের নিয়ে একসাথে ধনী হওয়ার মাধ্যমেই আসল ধনী হওয়া যায়। 

স্থানীয় সরকারের সহায়তায়, লুমান এবং লিয়াও জেং চিউন একটি গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির প্রজনন সমবায় প্রতিষ্ঠা করেন। তারা সদস্যদের প্রজনন ডিম ও বাচ্চা সরবরাহ করেন, গ্রামবাসীদের কৃষি দক্ষতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানান, দূরবর্তী ভিডিওর মাধ্যমে অনলাইনে কৃষি জ্ঞান ব্যাখ্যা করেন, এবং বিভিন্ন জিনিস উদ্ভাবন করেন। তাদের প্রচেষ্টায় স্থানীয় কৃষকদের আয় ২০ মিলিয়ন ইউয়ানের বেশি বাড়িয়েছে।

লুমানের দৃষ্টিতে, আধুনিক কৃষির বিকাশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তরুণ প্রতিভার অভাব, বিশেষ করে জ্ঞানী ও সংস্কৃতিবান তরুণের অভাব। তিনি গ্রামীণ মেধাবীদের জন্য পেশাদার সমবায় প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলেজ স্নাতক, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক এবং শহুরে ও গ্রামীণ নমনীয় কর্মসংস্থান কর্মীদের জন্য উদ্যোক্তা এবং ই-কমার্স অপারেশন সক্ষমতার উপর প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন। 

পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি, লুমান ব্যক্তিগতভাবে তরুণদের নিজ শহরে ব্যবসা শুরু করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি "গ্রামীণ কর্নার মেকার স্পেস" প্রতিষ্ঠা করেন, যা গ্রামাঞ্চলে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী তরুণদের একত্রিত করে, বিনামূল্যে উদ্যোক্তা পরামর্শ প্রদান করে এবং গ্রামীণ উদ্যোক্তাদলে যোগদানের জন্য অনেক কলেজ গ্র্যাজুয়েটকে আকৃষ্ট করে। "আমাদের গ্রামকে এমন একটি জায়গায় পরিণত করা যাক যেখানে আমরা থাকতে ইচ্ছুক, আয় করতে পারি এবং বুড়ো বয়স পর্যন্ত থাকতে পারি। আমরা আশা করি যে, আরও তরুণ গ্রামাঞ্চলে ফিরে আসবে এবং গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য একটি জোরালো শক্তি হয়ে উঠতে ইচ্ছুক হবে।"
লেখক: ইয়াং ওয়েই মিং, চায়না মিডিয়া গ্রুপ