কাজী আসমা আজমেরী প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:০৮ এএম
স্বপ্নের পদ্মা সেতু-- কাজী আসমা আজমেরী
প্রতিটি মানুষের পোস্ট দেখছিলাম পদ্মা সেতু নিয়ে।
পদ্মা সেতু এটা আমার জীবনের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে,যা আলাদা করে ওখানে যেয়ে ছবি তোলার মানে হয় না।কারণ, বাংলাদেশে থাকলে সপ্তাহে দু'বার এই পদ্মা নদী পার হতে হয় আমাকে ঢাকা শহরে আসতে । পদ্মার বুকে আমার প্রতিনিয়ত অনেক অনেক স্মৃতি। আমরা পদ্মার ওপারের বাসীরা অধীর অপেক্ষায় প্রতীক্ষা করছি 25 শে জুন এর উদ্বোধন। তাহলে আমাদের কমবে ঢাকা খুলনার দূরত্ব।
আমরা কলকাতা শহরে সহজেই খুলনা থেকে মাত্র 5 ঘন্টায় চলে যেতে পারি,আর ঢাকা যেতে সাড়ে 6 ঘন্টা থেকে মাঝে মাঝে 14 ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। Flight তে তাও সেই একই সময়। ঢাকা থেকে যশোর এবং যশোর থেকে আড়াই ঘন্টা বাসে করে খুলনায়। বাংলাদেশের আসার কথা শুনলেই শিউরে উঠলাম। অনেক কষ্ট অনেক journey খুলনায় বাসা পর্যন্ত পৌঁছানো।
অনেক সময় আমি নিউজিল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসার সময় কলকাতা হয়ে তারপরে খুলনা আসি। ইমিগ্রেশনের যেমন জটিলতা রয়েছে, ঠিক তেমনি জটিলতা রয়েছে পদ্মা সেতু পার হওয়া।
এই তো গত সপ্তাহেই খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে লঞ্চ পারাপারের সময় ৮ কেজি মিষ্টির প্যাকেট টি বাসে ফেলে চলে যায়। এরকম ঢাকা খুলনার অনেক স্মৃতি রয়েছে, কখনো স্প্রীট বোটে একগাদা লোকের ভিতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় এসেছি, আবার কখনো স্পিডবোটে শেয়ারিং করতে যে নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচয় হয়েছে, রোগীকে কিংবা বরযাত্রী দ্রুত আসার জন্যে sharing partners ও মিলেছে। এমনও হয়েছে ঈদের সময় বাসের টিকেট না পেয়ে ঈদের দিন দুপুর বারোটার সময় এসে খুলনার বাসায় পৌঁছেছি। একবার 22 ঘন্টা আরিচার ঘাটে অপেক্ষা করেছিলাম । আবার আমার গাড়ি কখনো আমার গাড়ি পদ্মার ও পারে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে। তারপরে স্পিড বোটে করে পার হয়ে এপাশ থেকে আমার বন্ধু কিংবা কাজিনরা কেউ তুলে নিয়ে ঢাকা পৌঁছে দিয়েছে।
ছোটবেলায় তখন তো ঢাকার কথা শুনলেই মন খারাপ হয়ে যেত, 12 -14 ঘণ্টা জার্নি করতে হবে আর তার সাথে অনর্গল বমি করতে করতে জান চলে যেত। আমি সেই বাসার ট্রেন জার্নি করেই পৃথিবী ঘোড়ে বেড়াই।
একদিনতো লঞ্চ পারাপার হতে যেয়ে পা পিছলে পড়ে যে একখানা জুতা হারিয়ে যায়। আমার আব্বু -আম্মু অনেক টেনশনে থাকত কখন কি হয়!
কতদিন এমন হয়েছে ইউনিভার্সিটি থেকে থাকতে রাতে বাসে এসেছি, ফেরিতে খেতে বসেছি, পার্স ব্যাগ খুঁজে পাওয়া যায়নি। একদিন রাতের বাসে আরিচা ঘাটে বসে থাকার সময় এক থাপ্পড়ে আমার কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে দৌড় ।
হাজারো মানুষের হাজারো গল্প নিয়ে পদ্মা ,অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমাদের ঢাকা-খুলনা কে একত্রিত করে দিবে বলে আমরা বসে আছি। দূরত্ব কাছে টানবে, দেশের উন্নয়নের জোয়ার আরও হোক এই প্রত্যাশায়।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
#bangladeshipassportgirl
#travelled130
#ins