NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

পিএইচডি করলেন নতুন প্রজন্মের বাঙালি নন্দিনী


খবর   প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৪২ পিএম

পিএইচডি করলেন নতুন প্রজন্মের বাঙালি নন্দিনী

‘লড়াইয়ের গান, শান্তির গান : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আমেরিকায় বাঙালিদের জীবন-যাপন’ (Songs of Action, Songs of Calm:Rabindranath Tagore and the Aural Fabric of Bengali Life in America ) বিষয়ে পিএইচডি করলেন নতুন প্রজন্মের বাঙালি নন্দিনী। নিউইয়র্কের বিশ্বখ্যাত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই থিসিস করার সময় প্রবাসী বাঙালিদের জীবন-যাপন, নস্টালজিয়া, পেছনে ফেলে আসার বেদনা, তাঁদের জীবনে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর গানের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হয়েছে নন্দিনীকে।

এজন্যে তিনি দুই বাংলার প্রবাসীদের সাক্ষাতকার ছাড়াও দেশে গিয়ে সেখানকার উল্লেখযোগ্য কয়েকজন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পীর সাথে একান্তে আলোচনাও করেছেন। অন্য দেশের অভিবাসীরা তাঁদের সংস্কৃতি কীভাবে আমেরিকায় নিয়ে এসেছেন, এবং আমেরিকার মূলধারার মিডিয়া ও শাসকশ্রেণী আমাদের অভিবাসী শিল্প, সঙ্গীত ও সংস্কৃতিকে কীভাবে সম্পূর্ণ অবহেলা ও অগ্রাহ্য করেছে, তারও আলোচনা আছে এই থিসিসে। বিশেষ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঙালি নারীরা কীভাবে রবীন্দ্রনাথকে আঁকড়ে ধরে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অস্তিত্বের লড়াই করছেন, তার সংবেদনশীল ও জটিল আলোচনা তিনি করেছেন তাঁর গবেষণায়। এদেশে জন্মগ্রহণকারি তরুণীর মধ্যে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি কীভাবে তাদের প্রবাস জীবনেও প্রবাহিত রাখতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ভূমিকা রাখছেন-তা এই গবেষণায় সুনিপূণভাবে উপস্থাপিত হয়। গত সপ্তাহে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে নন্দিনীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডিএইচডি সাফল্যজনকভাবে সমাপ্তির সংবাদ দিয়েছে।

নন্দিনীর গবেষণার প্রধান পথপ্রদর্শক ছিলেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ অ্যারন ফক্স ও ডঃ আলেসান্দ্রা সিউচি। কমিটি সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পন্ডিত অধ্যাপক সুদীপ্ত কবিরাজ, যিনি কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে প্রতি ফল সিমেস্টারে অধ্যাপনা করেন। নন্দিনী এখন নিউইয়র্কের দুটি কলেজে অধ্যাপনার কাজ করছেন। তার বিষয় এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীত ও তার বৈচিত্র্য ও উৎস। নন্দিনী খ্যাতনামা স্টাইভেস্যান্ট হাই স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার চারদিনের মধ্যেই ঘটেছিল এগারোই সেপ্টেম্বরের সেই মর্মান্তিক ভয়ংকর ঘটনা। চোখের সামনে সে দেখেছিলো অসহায়, নির্দোষ মানুষ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ছে। তার বেশ কয়েকজন বন্ধু ও বান্ধবী ডিপ্রেশন ও অন্যান্য অসুখের শিকার হয়েছিল। কিন্তু সে হয়নি। বরং চিরকালই সে তার বন্ধু-বান্ধবীদের বিপদে আপদে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাই তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। নন্দিনী স্টাইভেস্যান্ট হাই স্কুল থেকে হান্টার কলেজে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করার পর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষে পিএইচডি করলেন। নন্দিনীর জন্ম ইলিনয় রাজ্যে। এদেশেই জন্মানো ও বড় হওয়া মেয়ে হলেও সে বাংলা ভাষায় পারদর্শিনী, এবং সাথে সাথে হিন্দি ও স্প্যানিশ ভাষাও জানে। বৈবাহিক সূত্রে সে পাঞ্জাবী ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গেও এখন পরিচিত।

নন্দিনী বাংলাদেশ প্রতিদিন উত্তর আমেরিকা সংস্করণের নিয়মিত কলামিস্ট-রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার-শিক্ষক ড. পার্থ ব্যানার্জির একমাত্র সন্তান। কন্যার এই বিশেষ বিষয়ে ডক্টরেট করা প্রসঙ্গে পার্থ ব্যানার্জি বলেন, আমাদের মেয়ে নন্দিনী কীভাবে পিএইচডি করলো আমেরিকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইউনিভার্সিটি থেকে, সেটাই একটা বিস্ময়। অবশ্য আমি নিজে এই শ্রেষ্ঠ বা শ্রেষ্ঠ নয়-এই ঘোড়দৌড়ে বিশ্বাস করিনা। তবে আমি নিজেও সেই ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি, এবং সেখানে যে কী ভীষণ চাপ থাকে সাফল্যলাভ করার জন্যে, তা দেখেছি। এদের বলে আইভি লীগ স্কুল। হারভার্ড, প্রিন্সটন, ইয়েল, বার্কেলি, কলাম্বিয়া, এমআইটি সব একধরণের উচ্চমানের স্কুল। এখানে পিএইচডি বা মাস্টার্স তো দূরের কথা, বিএ অথবা বিএসসি করাই কঠিন। তার ওপরে ডিপার্টমেন্টের ভেতরে নানা সমীকরণ কাজ করে। আমি জার্নালিজম নিয়ে পড়ার সময়ে দেখেছি, কী অদ্ভুত সে খেলা। যাই হোক, আমার মেয়ে সেদিক থেকে অনেক বুদ্ধিমতী — আমার মতো ফাইটার সে নয়। সে বরং পেয়েছে তার মায়ের (ড. মুক্তি ব্যানার্জি) বাস্তববাদী চরিত্র। চোখের সামনে দেখলাম প্রচন্ড একটা ক্রাইসিসের মধ্যেও মাথা ঠান্ডা রেখে, ডিসিপ্লিন রেখে, টাইম ম্যানেজমেন্ট করে নানা প্রতিকূল অবস্থাকে জয় করার ক্ষমতা। আর তার সঙ্গে প্রবল ইতিবাচকতা। এই কোভিড মহাসঙ্কটের মধ্যেও সে হাল ছাড়েনি। তার মধ্যে এক শিশুর জন্ম দেওয়া ও তাকে মানুষ করা। ইতিবাচকতা থাকলে, ড্রাগ ড্রিঙ্কিং পুজো ধর্ম ফ্যাশন ইত্যাদিতে ভেসে না গেলে, এবং সঠিক পরিকল্পনা থাকলে, ভয় না পেলে মানুষ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে।