NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo
স্মরণকালের অনন্য শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান

লালন উৎসবে নিউ ইয়র্কের মানুষের ঢল


জাহেদ শরীফ প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম

লালন উৎসবে নিউ ইয়র্কের মানুষের ঢল

 

 

নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে লালন উৎসব। ৩০ অক্টোবর রোববার জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে উৎসবের উদ্বোধন করেন লোকগীতি ও লালন সংগীতের কিংবদন্তী শিল্পী ফরিদা পারভীন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত উৎসবে মানুষের ঢল নেমেছিল। উৎসবে অংশ নেয়া বোদ্ধাজনরা বলেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান।অক্টোবরের শেষ রোববার, হেমন্তেরও শেষ। নিউইয়র্কের আবহাওয়া কনকনে ঠান্ডা থাকার কথা। অথচ নিউইয়র্কে ছিল ঝলমলে আলো, সহনীয় তাপমাত্রা। বেলা তিনটায় জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে খোলা আকাশের নিচে লালন উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। লালনগীতির খ্যাতনামা শিল্পী ফরিদা পারভীন মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে ও বেলুন উড়িয়ে নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো লালন উৎসবের উদ্বোধন করেন।উৎসবের বিভিন্ন পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল ড. মো. মনিরুল ইসলাম, ডা. জিয়া উদ্দীন আহমেদ, ড. সিদ্দিকুর রহমান, তাজুল ইমাম, ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, এটর্নি মঈন চৌধুরী, মোহাম্মদ এন. মজুমদার, হাসান ফেরদৌস, রেখা আহমেদ, রোকেয়া রফিক বেবী, আহকাম উল্লাহ, অ্যানি ফেরদৌস, লুতফুন নাহার লতা, মিথুন আহমেদ, নূরুল আমিন বাবু, টাইটেল স্পন্সর নূরুল আজিম, ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার, খলিলুর রহমান, আহসান হাবীব ও হেলাল মিয়া। দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র লালন পরিষদ। উৎসবে যোগ দিতে ঢাকা থেকে আসেন ফরিদা পারভীন ও বরেণ্য বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম। নিউইয়র্ক ও আশপাশের বাউল সংগীতশিল্পীরাও যুক্ত হয়েছিলেন। পুরো অনুষ্ঠানে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছিলেন প্রবাসী চারুশিল্পীরা। ২১ জন শিল্পীর আঁকা ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছিল ‘অচিন পাখির খোঁজে শিরোনামের একটি চিত্র প্রদর্শনী। এটি উদ্বোধন করেন বরেণ্য সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন অপর তিন বরেণ্য সাংবাদিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান ও বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ। এসময় বাংলাদেশি আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি আর্থার আজাদ, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও কানাডা থেকে প্রকাশিত দেশে-বিদেশে পত্রিকার সম্পাদক নজরুল মিন্টো অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানটি এমনভাবে সাজানো হয়েছিল, যেন সব বয়সের অতিথিরাই লালনের গান এবং তাঁর জীবন ও দর্শনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হতে পারেন। ভারতীয় চিত্রনির্মাতা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ও সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘ম্যান অব দ্য হার্ট মঞ্চ নাটকের ভিজ্যুয়াল স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এতে ঊনবিংশ শতকের সুফি সাধক লালনের জীবন ও কর্মকথা, গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। অতিথি ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব রেখা আহমেদ ও গার্গী মুখার্জী। ড. জিয়া উদ্দীন আহমেদ পরিচালিত একটি ভিডিও তথ্যচিত্রে লালনের পরিচিতি তুলে ধরা হয়।পরে একটি সেমিনারে লালনের জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন লালন বিশেষজ্ঞরা। আলোচনায় মূল বক্তা ছিলেন ফরিদা পারভীন, গাজী আবদুল হাকিম ও গোলাম সারোয়ার হারুন। হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় বক্তারা সমকালীন বিশ্বে লালন কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা তুলে ধরেন।লালন ও তাঁর গান নিয়ে নিরীক্ষার নামে বাড়াবাড়ি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ফরিদা পারভীন। পরামর্শ দেন এই বাড়াবাড়ি এড়িয়ে চলার। বক্তারা বলেন, লালন ছিলেন অতি সাধারণ মানুষ। সারা জীবন সাধারণ একজন মানুষের মতো জীবনযাপন করেছেন। তাঁকে নিয়ে যে বাড়াবাড়ি, ‘সাঁইজি বেঁচে থাকলে তা কখনোই পছন্দ করতেন না। দ্বিতীয় একটি সেমিনারে ক্যাথলিক পাদরি ফাদার মারিনো রিগনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করেছিলেন। এ সময় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লালনগীতি ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করেন। এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন রথীন্দ্রনাথ রায়, বেলাল বেগ, ডা. জিয়া উদ্দীন আহমেদ ও ফাহিম রেজা নূর। সঞ্চালক ছিলেন শুভ রায়।

অনুষ্ঠানে সবার দৃষ্টি কেড়ে নেয় নতুন প্রজন্মের ছয় প্রতিনিধির অংশগ্রহণে একটি সেমিনার। এসব কিশোর-তরুণ বলেন, নিজের শিকড়ে ফিরে যেতে লালন তাঁদের বিপুলভাবে সাহায্য করেছেন। সায়ান নিবিড় শারমিনের সঞ্চালনায় আলোচক ছিলেন জারিন মাইশা, আলভান চৌধুরী, সাগ্নিক মজুমদার, জনম সাহা ও সামিয়া ইসলাম। প্রবীন ও নবীন শিল্পীদের পরিবেশনায় লালনের গান নিয়ে ছিল আশাজাগানিয়া আরেকটি অনুষ্ঠান। অবিকৃত লালনকে আবিষ্কারে তাঁদের আগ্রহ সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রবাসে যে লালনের গানের চর্চা অব্যাহত রয়েছে, তার প্রমাণ ছিল হাসানুজ্জামান সাকীর পরিকল্পনায় বিশিষ্ট গায়ক শাহ মাহবুবের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় সংগীতানুষ্ঠানসাঁইর বারামখানা। সংগীতে কণ্ঠ দেন মেলাল শাহ, করিম হাওলাদার, চন্দন চৌধুরী, লিমন চৌধুরী, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি, রিপন রহমান, রবিন খান, কানিজ দীপ্তি, জারিন মাইশা, আলভান চৌধুরী, সাগ্নিক মজুমদার ও সামিয়া ইসলাম। যন্ত্র সংগীতে ছিলেন শহীদ উদ্দিন, তপন মোদক, সাইফুল মিঠু, শফিক মিয়া, জহির উদ্দিন লিটন ও সজীব মোদক। ধারা বর্ণনা করেন সাদিয়া খন্দকার, শামসুন্নাহার নিম্মি ও স্বাধীন মজুমদার। শব্দ নিয়ন্ত্রণ করেন এফএনইউ আরিফুজ্জামান আরিফ।নতুন ও প্রবীণ শিল্পীদের সমন্বিত অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠান দর্শকদের মুগ্ধ করে। প্রবাসের খ্যাতিমান শিল্পী তাজুল ইমাম ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় পরিবেশিত লালনের নির্বাচিত গানের মধ্যে দুটি পরিবেশনাও সবাইকে মুগ্ধ করে। ভারতীয় কলাকেন্দ্রের পরিবেশনা "বুকের মাঝে লালন" এর নৃত্য নির্দেশনা দেন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। ধারা বর্ণনা দেন অবন্তিকা মুখার্জী, নৃত্যশিল্পীরা ছিলেন দেবদীপা ঘোষ, ইন্দ্রানী বসু, মৌমিতা ধর ও অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। মঞ্চে সহযোগিতা করেন সুদীপ্তা ঘোষ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফরমিং আর্টস-বিপার পরিবেশনা 'সহজ মানুষ' নির্দেশনা দেন সেলিমা আশরাফ ও অ্যানি ফেরদৌস। সংগীত শিল্পী ছিলেন জারিন মাইশা, আলভান চৌধুরী, সামিয়া ইসলাম, কামিলা সুফী আলম, আরিয়ান কবীর ও ফাহমিন ইসলাম। উপস্থাপনায় ছিলেন নিলুফার জেরিন।এরপর ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ বাঙালি ব্যক্তিত্বরা তাদের উত্তরাধিকার হিসেবে নবীনদের সম্মাননা জানিয়ে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এসময় মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে মিলনায়তন। উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিলেন ফরিদা পারভীন ও গাজী আবদুল হাকিম। তাঁদের পরিবেশনা শুনতে দূরদূরান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক দর্শক এসে সমবেত হয়েছিলেন অনুষ্ঠান কেন্দ্রে। প্রতিটি পর্বেই ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ভূপালী রাগের ভিত্তিতে একটি পরিবেশনা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন বাঁশুরিয়া গাজী আবদুল হাকিম। এরপর নিজের পছন্দের একগুচ্ছ গান গেয়ে শোনান ফরিদা পারভীন। সঙ্গে ছিল লালনের গান ও দর্শন নিয়ে এই প্রবীণ শিল্পীর নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।

প্রায় মধ্যরাতে শেষ হয় নিউইয়র্কে প্রথম লালন উৎসব। আনন্দঘন এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উত্তর আমেরিকায় লালনচর্চার এক নতুন মাত্রা যোগ হলো। যুক্তরাষ্ট্র লালন পরিষদ ইউএসএ'র প্রতিষ্ঠাতা ও লালন উৎসবের আহ্বায়ক মো. আবদুল হামিদ জানিয়েছেন, প্রতিবছর তাদের এই উৎসবের আয়োজনের প্রচেষ্টা থাকবে। তবে সবার পরামর্শ অনুযায়ী এটি দ্বিবার্ষিক উৎসবও হতে পারে। অনুষ্ঠানে আগত বোদ্ধাজনরা লালন উৎসবকে যুক্তরাষ্ট্রে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান বলে মন্তব্য করেন। বরেণ্য সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন সত্যিই বিরল ও অতুলনীয়। সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ বলেন, অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ এবং নানা বিচারে এটি শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে। বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ বলেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানা প্রায় এগার ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে অনুষ্ঠান দেখেছি। প্রত্যেকটি পর্ব ছিল অকর্ষণীয় এবং সব বিচারে শ্রেষ্ঠ।

 মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী তাজুল ইমাম বলেন, এই প্রবাসে এমন বলিষ্ঠ পরিবেশনা আগে কখনও চোখে পড়েনি। মাত্র দু'সপ্তাহের সময় সীমায় আয়োজকরা কোন জাদুতে এমন বিশাল একটি উৎসবের সমন্বয় ঘটালেন তা আমার কল্পনার অতীত। এঁদের ব্যক্তিত্বে সেই কারিশমা আছে যা অগ্রাহ্য বা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। সবচেয়ে আপ্লুত হয়েছি নিউইয়র্কের কিছু পেশাদার শিল্পী সম্মিলিত ভাবে মঞ্চে পরিবেশন করেছেন কিছু জনপ্রিয় লালন গীতির সুগ্রন্থিত অনুষ্ঠান। তাঁদের সম্মিলিত গায়ন শৈলীতে প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছিল পরিপূর্ণ জনাকীর্ণ মিলনায়তন। এরা সবাই একক সংগীতে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী কিন্তু এই সম্মিলিত পরিবেশনা ছিল অভূতপূর্ব।  নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি ফার্মিংডেল-এর প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন,

লালন উৎসব একাধিক বিচারে অনন্য দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছে। পেশাদার মিলনায়তনের ভেতর ও বাইরের মনোরম পরিবেশ, শব্দ, আলো, মঞ্চ ইত্যাদি উৎসবের গুণগত মান বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক উচ্চতায়। দর্শকের সমাগম নিউইয়র্কের অন্য যে কোন অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে গেছে। সে সঙ্গে প্রবাসের শিল্পী, সাহিত্যিক ও বোদ্ধাজনের উপস্থিতি ছিল প্রশংসনীয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ বলেন, লালন উৎসব আমার দেখা নিউইয়র্কের শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান। নিউ জার্সির সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ভারতীয় বাঙালি সদীপ্তা মুখোপাধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ফকির সাঁই লালনকে নিয়ে বহি:র্বিশ্বে এ ধরনের আয়োজন মনে হয় এই প্রথম। ভারতীয় কলা কেন্দ্রের নৃত্যশিল্পী অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, এই অনুষ্ঠান ছিল আমার জীবনে অনন্য এক অভিজ্ঞতা।

কানাডা থেকে প্রকাশিত দেশে-বিদেশে পত্রিকা ও টিভির প্রধান সম্পাদক নজরুল মিন্টো বলেন, আমি চল্লিশ বছর ধরে উত্তর আমেরিকায় বসবাস করছি। আমি মনে করি, লালন উৎসব শুধু নিউইয়র্কে নয়, পুরো উত্তর আমেরিকায় একটি অনন্য অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উত্তর আমেরিকার নেতা, আবৃত্তিশিল্পী মিথুন আহমেদ বলেন, এই অনুষ্ঠান আমার দেখা সবচেয়ে বিশুদ্ধ অনুষ্ঠান।  নাট্যজন লুতফুন নাহার লতা বলেন, লালন উৎসব নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতে একটি ব্রেঞ্চমার্ক সৃষ্টি করেছে। এটি বিগত দিনের সব অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে গেছে। সাংস্কৃতিক জন মাহতাব সোহেল বলেন, এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হলো, সবাই এটিকে নিজেদের উৎসব বলে মনে করেছেন। সবার অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফুর্ত, তা সে শিল্পীই হোক বা শ্রোতাই হোক।অভিনয়শিল্পী খাইরুল ইসলাম পাখি বলেন, অত্যন্ত স্বল্প সময়ে এমন প্রাণ জাগানিয়া শিল্পসিদ্ধ উৎসব যারা উপহার দিয়েছেন তাদের জন্য কুসুম শোভিত শুভেচ্ছা আর গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। এটি নিউইয়র্কে আমার দেখা সর্বশ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান।লালন উৎসবের কমিটিতে যারা ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা নূরুল আমিন বাবু, টাইটেল স্পন্সর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, আহ্বায়ক মো. আবদুল হামিদ, সমন্বয়ক গোপাল সান্যাল, স্বীকৃতি বড়ুয়া, দীনেশ চন্দ্র মজুমদার, সুখেন গমেজ ও হাসানুজ্জামান সাকী। উৎসবের শিল্প নিদের্শনায় ছিলেন জাহেদ শরীফ। সহযোগী ছিলেন আলোকচিত্রী নিহার সিদ্দিকী ও এমবি হোসেন তুষার, সংগীত শিল্পী শাহ মাহবুব, সংস্কৃতিজন শুভ রায় ও ডিপার্টমেন্ট অব মটর ভিহাইকেল-ডিএমভির কর্মকর্তা, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শাহ আলী জুয়েল।