মিনহাজ আহমেদ প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম
নিছক গণহত্যা নয়, জেনোসাইড
একাত্তরে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নয় মাসে তিরিশ লক্ষ মানুষকে হত্যা ও দুই লক্ষ ধর্ষণের ঘটনার পূর্বে তৎকালীন সামরিক বাহিনির প্রধান, বালুচিস্তানের কসাই টিক্কা খানের ঘোষণা, ‘আমি মাটি চাই, মানুষ নয়’ ঘোষণাই প্রমাণ করে বাংলাদেশে কোনো সাধারণ গণহত্যা অনুষ্ঠিত হয়নি, এটি ছিল বাঙালি জাতির অস্তিত্ব সমূলে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার উদ্দেশ্যে জাতিবিদ্বেষপ্রসূত পরিকল্পিত জেনোসাইড।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একান্ন বছর অতিবাহিত হলো, অথচ জাতিসংঘে বাংলাদেশের এই জেনোসাইড-এর কোনো স্বীকৃতি নেই। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার কিংবা জনগণের পক্ষ থেকে কোনো জোর দাবিও জানানো হয়নি। তবে আশার কথা, এক বেসরকারি উদ্যোগে জেনেভাভিত্তিক একটি অভিবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ এবং বাংলাদেশের দুটি সংগঠন আমরা একাত্তর ও প্রজন্ম একাত্তর
মিলিতভাবে কাজ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন-এর ৩ নভেম্বরের অধিবেশনে বাংলাদেশের জেনোসাইড ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছে। এই উদ্যোগের সমান্তরালে বাংলাদেশের সর্বত্র এবং বাংলাদেশের বাইরে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর অভিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে জাতিসংঘের কাছ থেকে জেনোসাইডের স্বীকৃতির আদায়ের দাবির সমর্থনে বিশ্বজনমত গঠনের উদ্যেশ্যে গণসংযোগ ও গণসমাবেশ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে ছিলো নিউ ইয়র্কের সকল বাংলাদেশী সংগঠনসমূহের যৌথ উদ্যোগে ব্যাপক গণসংযোগ ও গণসমাবেশ কর্মসূচি। এতে উপস্থিত হয়ে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ থেকে আগত আমরা একাত্তরের চেয়ারম্যান ডাকসুর সাবেক ভিপি জনাব মাহবুব জামান। সমাবেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে উত্থাপিত স্মারকলিপিটি পথচারীদেরকে
বার বার পাঠ করে শোনানো হয়। নিউ ইয়র্কের অনেকগুলো সমাজ-শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠনের সংগঠক, কর্মী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে স্বতোঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। টাইমস্ স্কোয়ারের সড়কদ্বীপে অঙ্কন শিল্পীরা ছবি আঁকেন, সাথে চলে আবৃত্তি ও গণসঙ্গীত।
এই অনুষ্ঠান আয়োজনে ছিলো আমরা একাত্তর, প্রোগ্রেসিভ ফোরাম ইউএসএ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকা, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, বাঙালিয়ানা, গণজাগারণ মঞ্চ, প্রজন্ম একাত্তর, উদীচী, শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন, মহিলা পরিষদ, মানবী, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, একুশে চেতনা পরিষদ এবং আর্টিস্টস্ ফোরাম।