আন্তর্জাতিক: প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:১২ এএম
শনিবার ১২ ই এপ্রিল,২০২৫ থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সব পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে চীন। যা চীনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘পারস্পরিক সমান শুল্ক’ আরোপের দৃঢ় জবাব। একই সময়, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাউন্সিল ফর ট্রেড ইন গুডসের বার্ষিক প্রথম সভায় চীন স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে ‘পারস্পরিক আচরণের’ অর্থ হলো, বাণিজ্যিক পক্ষগুলি একে অপরকে সুবিধা দেয় এবং শেষ পর্যন্ত অধিকার ও বাধ্যবাধকতার সামগ্রিক ভারসাম্য অর্জন করে। যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘পারস্পরিক সমতা’ আসলে সংকীর্ণ, একতরফা ও নিজের জন্য স্বার্থপর, এবং এটি অর্থনৈতিক জোরজবরদস্তিমূলক একটি কাজ। এই কথাটি যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘পারস্পরিক শুল্ক’ কে সম্পূর্ণরূপে আনাড়ি ও পাগলাটে দস্যুর যুক্তি হিসেবে প্রকাশ করে।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে যে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারে, গড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের শুল্ক হার বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, মাত্র ৩.৩ শতাংশ। যেখানে চীন, ভারত, ব্রাজিল ও ভিয়েতনামের মতো প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের হার যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। এর উপর ভিত্তি করে ধারণা করা যায় যে, এটি ‘অসমতা’ এবং ‘পারস্পরিক শুল্কের’ মাধ্যমে তা সংশোধন করা উচিত। ডব্লিউটিও সব সদস্যকে কম সর্বাধিক পছন্দের দেশের শুল্ক হার বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা দেয় না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মৌলিক কাজ হলো, বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা আয়োজন করা। প্রতিটি সদস্যের বর্তমান শুল্ক হার বহুপাক্ষিক আলোচনার ফলাফল এবং পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক।
শুল্ক হ্রাস আলোচনায় নির্দিষ্ট সদস্য এবং নির্দিষ্ট শিল্পের চাহিদা সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করা উচিত। বিশেষ করে অনুন্নত দেশগুলির বিশেষ চাহিদা, যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করা এবং রাজস্ব বৃদ্ধিতে শুল্ক ব্যবহার করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্র ধারণাগুলি পরিবর্তন করেছে, সদস্যদের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক আচরণকে "সমতুল্য সংখ্যাতে" বিকৃত করেছে এবং "সমতুল্য শুল্ক" আরোপ করেছে; যা বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিকতাকে প্রতিফলিত করে। পাশাপাশি, তা মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে তাদের উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।
বিশ্ব খুব স্পষ্টভাবে দেখছে যে, যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত ‘সমতার’ ব্যানারে একটি জিরো সাম গেমে লিপ্ত হচ্ছে, এবং এর সারমর্ম হল ‘আমেরিকা প্রথম’ এবং ‘আমেরিকা ব্যতিক্রমী’ চিন্তা অনুসরণ করা। তবে, শুল্ক যুদ্ধে কেউ বিজয়ী হবে না এবং বিশ্বের বিরুদ্ধে গেলে দেশগুলো কেবল নিজেদেরকেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।
সূত্র : জিনিয়া-তৌহিদ-আকাশ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।