NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

বইয়ের নাম ‘হেম-বেহাগের মহারাজা’ - রিনাত ফৌজিয়া খান


আকবর হায়দার কিরণ   প্রকাশিত:  ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম

বইয়ের নাম ‘হেম-বেহাগের মহারাজা’ - রিনাত  ফৌজিয়া খান

আজ একটি বই নিয়ে দু’কথা লিখতে বসেছি।বইয়ের নাম ‘হেম-বেহাগের মহারাজা’।নাম শুনে কেউ কি ইতোমধ্যে ধরে ফেলতে পেরেছেন কে হতে পারেন এই মহারাজা?সুরের জগতে তিনি মহারাজাই বটে।হেম-বেহাগ তাঁর সৃষ্ট অসাধারণ একটি রাগ।এই রাগের যিনি স্রষ্টা আর তাঁর সৃষ্ট এই রাগ, এ দুইয়ের মধ্যে অসাধারণ সন্ধি/সমাস করে বইয়ের একটি অতুলনীয় নাম রেখেছেন নাসির আলী মামুন।এই বইয়ের লেখক তিনি।বইটি জীবনভিত্তিক একটি উপন্যাস।সুতরাং তাঁকে আমরা এখানে ঔপন্যাসিক বলে আখ্যায়িত করবো।নাসির আলী মামুন একজন বিশিষ্ট স্থিরচিত্রগ্রাহক।ক্যামেরার কবি হিসেবে তাঁর খ্যাতি।কিন্তু একই সাথে তাঁর কলম অত্যন্ত সচল।একটি দু’টি করে আঠারোটির বেশি বই তিনি লিখে ফেলেছেন।উপমহাদেশের সংগীতকে ইউরোপে জনপ্রিয় করে তোলেন যিনি তিনি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।‘সুরসম্রাট’ হিসেবে তিনি খ্যাত।পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ এবং আরো অনেক উপাধী যুক্ত হয়েছে তাঁর নামের সাথে।কিন্তু তাঁর অমায়িক পিতৃহৃদয়ের জন্য তিনি পেয়েছেন অনানুষ্ঠানিক এক উপাধী….‘বাবা’।তাঁকে নিয়ে অজস্র প্রবন্ধ লেখা হয়েছে।তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে।এমনকি তাঁর দীর্ঘ সংগীত জীবনের নানা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক নিয়ে একাধিক পিএইচডি গবেষক গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।কিন্তু তাঁর জীবনীভিত্তিক উপন্যাস লেখা হলো এই প্রথমবার।মূলত এই কারণে লেখককে বিশেষভাবে অভিনন্দিত করতে চাই। লেখকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন পুস্তকে, গবেষণাকর্মে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খঁর জীবনী বহুবার লেখা হলেও কোন একটি বইয়ে তাঁর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটা পাওয়া যায়নি।এই অতৃপ্তি থেকেই তিনি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জীবনভিত্তিক উপন্যাস লিখতে মনস্থির করেন।বই লেখার জন্য যে রসদ দরকার, তার একটা বড় অংশ তিনি পেয়েছেন আমার বাবা সংগীত গবেষক মোবারক হোসেন খানের কাছ থেকে।একটা সময় তিনি আমার বাবার ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পেয়েছেন,বাবা যখন বেতারের পরিচালক ছিলেন।দিনের পর দিন গল্পগুলো বাবার মুখ থেকে শুনেছেন।আজ আমি কৃতজ্ঞ বোধ করছি এই ভেবে যে, গল্পগুলো তিনি কোন অবসর সময়ে লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন,বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে দেননি।যার ফলশ্রুতিতে আজ আমরা অসাধারণ একটি উপন্যাস পেলাম।উপন্যাসের সমুদয় গুণাবলি এই বইয়ে উপস্থিত।নাটকীয় দৃশ্যকল্প উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে উপন্যাসের সূচনা।পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বইটি পড়বার জন্য পাঠককে সামনে টেনে নিয়ে চলে।এবং লেখক পাঠককে নিরাশ করেন না একটিবারের জন্য।একটির পর একটি ঘটনাপ্রবাহ টেনে এনে তিনি বিনি সূতোর মালায় গেঁথেছেন।পরিশেষে গল্পের পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হয়েছেন।ভাষার কথা যদি বলি, একজন অপেশাদার লেখকের কাছে (কিংবা অনেকে বলতে পারেন একজন ফটোগ্রাফারের কলম থেকে) গভীর উপলব্ধির এমন সহজ প্রকাশ অভাবনীয়।পাঠকের জন্য সামান্য অংশ উদ্ধৃত করছি—“কয়েক মিনিটের জন্য নগর কলকাতার তাবৎ আওয়াজ যেন স্তব্ধ হয়ে গেল।মুখোমুখী আলাউদ্দিন খাঁ ও মোবারক হোসেন খান।দু’জনের চোখ প্লাবিত।ধ্যানেশের মনে হতে পারে, এর চাইতে শ্রেষ্ট বাদন আর কিছু নয়।একদম কোলাহলহীন নিস্তব্ধতা।হায়, এ কেমন পরিস্থিতি যেখানে ভাষারা পলায়ন করে।”

আরো অনেক কিছু লেখা যায় বইটি নিয়ে।কিন্তু এ মূহূর্তে আমার নিজের চোখ প্লাবিত।বইয়ের চরিত্রগুলোর রক্ত আমার শরীরেও প্রবাহমান।সেজন্য এক অজানা আবেগ আমাকে ঘিরে ধরেছে।কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, যে কোন পাঠকের কাছেই বইটি সমাদৃত হবে।পাঠকদের অনুরোধ করবো এরকম একটা বই সংগ্রহ করবার জন্য।বইমেলায় যারা কিনেছেন কথাপ্রকাশ (২৫ নং প্যাভিলিওন) থেকে তারা নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান।আজ বইমেলার শেষ মূহুর্তে যাদের পক্ষে সম্ভব বইটা সংগ্রহ করতে অনুরোধ করবো।সেটা না হলে আপনার সংগ্রহ করতে পারবেন শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সেলস সেন্টার থেকে (৭৩-৭৫, আন্ডারগ্রাউন্ড)অথবা অন লাইনে অর্ডার দিতে পারেন এই ঠিকানায়—

www.kathaprokash.com