NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

ট্রাম্পের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে চাকরি নিয়ে উদ্বেগে কেন্দ্রীয় সরকারের হাজারো কর্মকর্তা–কর্মচারী


খবর   প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৩৭ এএম

ট্রাম্পের তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে চাকরি নিয়ে উদ্বেগে কেন্দ্রীয় সরকারের হাজারো কর্মকর্তা–কর্মচারী

রয়টার্স ওয়াশিংটন

নির্বাহী আদেশে সই করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ নির্বাহী আদেশে সই করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ছবি: রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর দল তড়িঘড়ি করে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শত শত কর্মীকে ছাঁটাই করছে বা সরিয়ে দিচ্ছে। সামনের দিনে যাতে আরও হাজার হাজার কর্মীকে কলমের খোঁচায় চাকরিচ্যুত করতে পারেন, সেই ক্ষমতা চাইছেন ট্রাম্প।  ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন এক সপ্তাহও হয়নি। এরই মধ্যে তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে দেশটির কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রের অধিকাংশ বিভাগ বিস্মিত ও হতবাক।  গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১৬০ কর্মকর্তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের ২০ জন জ্যেষ্ঠ পেশাদার আইনজীবী পদত্যাগ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল রক্ষা বাহিনী এবং পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসনের (টিএসএ) প্রধানসহ বিভাগ দুটির অন্যান্য কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।   যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যেসব অফিস কর্মী-বৈচিত্র্য ও সমতা (ডিইআই) নিয়ে কাজ করত, সেগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব অফিসের কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের নীতি বদলে দিতে ট্রাম্প এমন সব নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যা অনেক কর্মকর্তাকে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে।  গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) ক্ষমতা গ্রহণের পরের দিন মঙ্গলবার জো বাইডেনের নিয়োগ দেওয়া এক হাজারের বেশি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।  ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্বেগে আছেন। এই উদ্বেগ নিয়ে ট্রাম্প কী ভাবছেন, তা জানতে রয়টার্সের তরফে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু হোয়াইট হাউস প্রতিক্রিয়া জানায়নি।  নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বারবার সরকারের আকার কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি যেসব আমলা তাঁর রাজনৈতিক এজেন্ডার প্রতি যথেষ্ট অনুগত নন বলে মনে হবে, তাঁদের বরখাস্ত করারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। 

 ট্রাম্পের দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের আমলা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি দেশটির সরকারি খাতের কর্মচারীদের সংগঠনগুলোও উদ্বেগে রয়েছে। অথচ কর্মচারীদের এসব সংগঠনের অনেক নেতাই মনে করেছিলেন, ট্রাম্প তাঁদের স্বার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবেন।  কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মসংস্থানবিষয়ক আইনজীবী ডন কুইন বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) এত বড় পরিসরে ছাঁটাই চালাবেন, তা অনেকে আশা করেননি। এখন সর্বত্র একধরনের অবিশ্বাস কাজ করছে, ভয় কাজ করছে। মানুষ তাঁদের জীবিকা নিয়ে, তাঁদের পরিবার নিয়ে উদ্বিগ্ন।’  হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফেডারেল এমপ্লয়িজের নির্বাহী পরিচালক স্টিভ লেনকার্ট জানান, কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ৩০ জনের একটি দলের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শুধু হতাশা আর নীরবতা বিরাজ করছিল। সবাই সীমাহীন উদ্বেগে আছেন।’ তাঁর সংগঠনের কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার।  স্টিভ লেনকার্ট বলেন, টিএসএ তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত সরকারি প্রতিষ্ঠান। নতুন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক মাস পরেই সাধারণত এসব প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পরদিনই তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত করেছেন।  বরখাস্ত হতে পারেন আরও কয়েক হাজার  চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এই আদেশের ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের চাকরির পদমর্যাদা পুনর্বিন্যাস করে তাঁদের ছাঁটাই সহজ হবে। এই আদেশে তাঁরা বেশ শঙ্কিত।  যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ট্রেজারি কর্মচারী ইউনিয়ন (এনটিইইউ) ওই আদেশটি আটকে দেওয়ার জন্য ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট আদালতে মামলা করেছে। সরকারি কর্মচারীদের এই সংগঠনের সদস্যসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার।

কেন্দ্রীয় সরকারের ৩৭টি সংস্থায় তাদের কর্মচারী কাজ করেন।  এনটিইইউর মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রাজনৈতিক ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য যে আইন রয়েছে, তা পেশাদার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রয়োগ করা হচ্ছে।  যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের মোট কর্মচারীর সংখ্যা ২২ লাখের বেশি। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশটি পেশাদার সরকারি কর্মচারী, যাঁদের মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নানাভাবে সরকারকে সহায়তা করেন। কোনো প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব পেশাদার কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ শেষ হয় না। কেবল সুনির্দিষ্ট অভিযোগেই তাঁদের বরখাস্ত করা যায়।   যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের সদ্য বরখাস্ত প্রধান লিন্ডা ফাগান যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের সদ্য বরখাস্ত প্রধান লিন্ডা ফাগানফাইল ছবি: রয়টার্স কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের একটি নতুন নীতিমালা তৈরি করেছে, যার আওতা অনেক বড়। এই নতুন নীতিমালার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিডিউল পলিসি/ক্যারিয়ার’। পেশাদার সরকারি কর্মচারীরা যেসব সুরক্ষা পান, এই নীতিমালাভুক্ত কর্মচারীরা সেসব পাবেন না এবং কর্তৃপক্ষ চাইলেই তাঁদের চাকরিচ্যুত করতে পারবে।

 মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোর্ড স্কুল অব পাবলিক পলিসির অধ্যাপক ডন ময়নিহান বলেন, যে কর্মচারীকেই এই নতুন নীতিমালার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে হবে, তিনি বরখাস্ত হতে পারেন। এতে বরখাস্ত কর্মচারীর সম্ভাব্য সংখ্যা হু হু করে বাড়বে। কারণ, সরকারের প্রায় প্রত্যেক কর্মচারীই কোনো না কোনোভাবে শিডিউল পলিসি/ক্যারিয়ার নীতিমালার আওতায় পড়েন।   ট্রাম্প প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে বিপুলসংখ্যক সরকারি কর্মচারীর পদমর্যাদা পুনর্বিন্যাসের আদেশ দিয়েছিলেন, যা ‘শিডিউল এফ’ নামে পরিচিত। সেই আদেশে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্তত ৫০ হাজার কর্মচারী বরখাস্ত হয়েছিলেন। ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই জো বাইডেন সেই আদেশ বাতিল করেছিলেন।  ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতিমালার কারণে বরখাস্ত হওয়ার আগে হাজার হাজার কর্মচারীর পদমর্যাদা পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক ডন ময়নিহান।  আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের কেন্দ্রীয় সভাপতি এভারেট কেলি বলেন, তাঁর সংগঠনের সদস্যরাও উদ্বিগ্ন। এই কর্মচারী সংগঠনের সদস্যসংখ্যা প্রায় আট লাখ। এটি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মচারীদের বৃহত্তম সংগঠন।  এভারেট কেলি বলেন, ‘আমি যেসব সদস্যের মুখের কথা শুনেছি, তাঁরা উদ্বিগ্ন। তাঁদের চাকরি ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা অনিশ্চিত।