NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে নিজস্ব সুবিধা রয়েছে:সিএমজি সম্পাদকীয়


আন্তর্জাতিক: প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০২ পিএম

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে নিজস্ব সুবিধা রয়েছে:সিএমজি সম্পাদকীয়

 


“বাধা তৈরি করা, ডিকপলিং, ব্রেকিং চেইন, যা অন্যদেরকে ক্ষতি করবে এবং নিজে উপকৃত হবে না। বিভিন্ন দেশের উচিত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরতাকে একে অপরের পরিপূরক ও জয়-জয় ব্যাপার হিসেবে বিবেচনা করা, বরং ঝুঁকি হিসেবে নয়।” চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত বুধবার সকালে বেইজিংয়ে প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে চীনা ও বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে এ কথা বলেন। তিনি চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উন্নয়ন সম্পর্কে চীনের ধারাবাহিক নীতি ও অবস্থা ব্যাখ্যা করেছেন, জোর দিয়ে বলেছেন যে শুল্ক যুদ্ধ, বাণিজ্য যুদ্ধ ও প্রযুক্তি যুদ্ধ ঐতিহাসিক প্রবণতা ও অর্থনৈতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যায়, এতে কেউ বিজয়ী হবে না। 


বৈঠকে প্রধান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোর প্রধানরা চীনকে সবসময় বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন, নোঙ্গর ও বহুপক্ষবাদের দৃঢ় রক্ষক হিসেবে প্রশংসা করেন। তারা চীনের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয় ঘনিষ্ঠ করতে এবং অবাধ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন রক্ষা করতে ইচ্ছুক। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা মনে করেন যে, চীন উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার সুস্পষ্ট সংকেত পাঠিয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী শিল্প ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য মূল্যবান আস্থা যুগিয়েছে।


বৈশ্বিক অর্থনীতির ‘রক্ত ও হাড়’ হিসেবে উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন অর্থনৈতিক অপারেশেনের গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তা। এর গঠন ও উন্নয়ন বাজারের নিয়ম ও কোম্পানির বাছাইয়ের যৌথ কর্মের ফলাফল। এর মধ্যে যে কোনো লিঙ্ক সমগ্র চেইনকে প্রভাবিত করবে। চিপসকে উদাহরণ হিসেবে নিলে, একটি চিপ উৎপাদনের জন্য অন্তত ৭টি দেশ ও ২৯টি কোম্পানির সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে ৫০টিরও বেশি শিল্প ও হাজার হাজার প্রক্রিয়া জড়িত। এই প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হলে চিপ উৎপাদন বিঘ্নিত ও ব্যয় বৃদ্ধি হবে, এমনকি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনও ধীর হবে।

 

বর্তমান বিশ্ব অশান্তি ও পরিবর্তনের নতুন যুগে প্রবেশ করেছে, বিশ্বায়ন বিরোধী প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজের একচেটিয়া অবস্থান বজায় রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বে পশ্চিমা উন্নত দেশগুলো ‘ঝুঁকি অপসারণের’ অজুহাতে ‘ডিকপলিং ও ব্রেকিং চেইন’ সমর্থন করে, যা বিশ্বব্যাপী উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, অর্থনৈতিক কার্যকরিতা হ্রাস করেছে, অভিন্ন উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। এটা বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে চলে। ইতালি-চীন ট্রাস্টি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মার্কো বেটিন বলেছেন, আমাদের ‘ডিকপলিং ও ব্রেকিং চেইন’ দরকার নেই, বাজার বন্ধ করা অকেজো নীতি, ঘনিষ্ঠ সংযোগ হল চাবিকাঠি।

 

বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে নিজস্ব সুবিধা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক গবেষণা শক্তি, উদ্ভাবন দক্ষতা ও উচ্চমানের মানবসম্পদ রয়েছে। অন্যদিকে চীনের সবচেয়ে সম্পূর্ণ শিল্প বিভাগ রয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বলসহ চ্যালেঞ্জ সামলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একে অপরের উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জের পরিবর্তে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করতে হয়,  প্রতিপক্ষের পরিবর্তে অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করতে হয়, একসঙ্গে বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা রক্ষা করার দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় চীন আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন মেলায় বিদেশি প্রদর্শকদের অনুপাত নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি সবচেয়ে বেশি, যারিন্ন বিদেশি কোম্পানি বিশেষ করে মার্কিন কোম্পানি চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে খুব আগ্রহী। এ থেকে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মানুষ অর্থনৈতিক সাধারণ জ্ঞানে ফিরে যেতে হয়, অর্থনৈতিক নিয়মকে সম্মান করতে হয়, চীনের সঙ্গে বৈশ্বিক উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন মসৃণ করতে হয়। 


প্রকৃতপক্ষে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করার একটি ফলাফল হল, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের অনুমান অনুসারে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানির ১ শতাংশ হ্রাস হলে ভিয়েতনাম থেকে আমদানির পণ্যের মূল্য ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং মেক্সিকো থেকে আমদানি পণ্যের মূল্য ০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। আর যুক্তরাষ্ট্র চিপসহ উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চীনের উন্নয়নকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ফলাফল হল মার্কিন কোম্পানিগুলো কেবল চীনা বাজারের উচ্চ মুনাফা হারিয়েছে তা নয়, বরং চীনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ত্বরান্বিত করেছে। 


এসব প্রমাণ করেছে যে ‘ডিকপলিং ও ব্রেকিং চেইন’ চলবে না, ‘বাধা তৈরি করা’ শুধু নিজেকে আবদ্ধ করবে। বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি ও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের দুটি মূল লিঙ্ক হিসেবে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করলে অর্থনৈতিক কার্যকরিতা উন্নত করতে, অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে এবং বিশ্বকে উপকার করতে পারে।

সূত্র: তুহিনা-হাশিম-লিলি,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।