NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

সভ্যতার অনুপম নিদর্শন আত্রাইয়ের তিন গুম্বুজ মসজিদ ও মঠ


Abdur Razzak প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

সভ্যতার অনুপম নিদর্শন আত্রাইয়ের তিন গুম্বুজ মসজিদ ও মঠ
এম আব্দুর রাজ্জাক উত্তরবঙ্গ থেকে : ইতিহাস আর ঐতিহ্য ভরা নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মোগল আমলের সামন্ত সভ্যতার অনুপম নিদর্শন ইসলামগাঁথী তিন গুম্বুজ মসজিদ ও তৎসংলগ্ন একটি মঠ। ৪০০ বছর আগের এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পূর্বদিকে ঐতিহাসিক গুড়নদীর তীরে গ্রামটি অবস্থিত। ৫ নং বিশা ইউনিয়নের জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটি বড় গ্রাম এটি। এ গ্রামে রয়েছে শত শত বছর পূর্বের স্থাপনা কারুকার্য্য খচিত তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ ও তৎসংলগ্ন একটি মঠ। আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মোঘল সম্রাটের শাসনামলে নির্মিত এ কীর্তি। জনশ্রুতি রয়েছে রাতারাতি নাকি হঠাৎ করে গড়ে উঠে এ মসজিদ ও মঠ। তবে এ প্রজন্মে অনেকে তা বিশ্বাস করতে রাজি না। পুরোনো এই মসজিদ স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। সৃষ্টি আর ধ্বংসে এগিয়ে চলছে পৃথিবী। কেউ সৃষ্টিতে আবার কেউ ধ্বংসের খেলায় মাতিয়ে উঠেছে। আবার কারোর দায়িত্বহীনতার কারণে কালের গহব্বরে সমাহিত হচ্ছে ঐতিহাসিক অতীত। আমরা বাঙালী, আমাদের রয়েছে সোনালী ঐতিহাসিক অতীত। বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের স্মৃতি চিহ্ন। এসব ছড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজরিত স্থানসমূহ আমাদের স্বত্তাতে আলোড়ন জাগায়। তেমনি আলোড়ন জাগানো ঐতিহাসিক অতীত বহুল স্থান আত্রাই উপজেলার তিন গুম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ও মঠ। জানা যায়, ওই গ্রাম এক সময় নিভৃত পল্লীর একটি জনবসতি ছিল। এক সময় নৌকার বিকল্প কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। সে সময় আজ থেকে কয়েক শ’ বছর আগে গড়ে উঠে এখানে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। মসজিদ সংলগ্ন প্রায় ৪০ ফুট উুঁচু চার স্তরের একটি মঠও নির্মাণ করা হয়। মঠটিতে খোদাই করে অঙ্কন করা হয় বিভিন্ন প্রাণীর ছবি। এক সময় এ মঠ এলাকাবাসীর কল্যাণের জন্য বিশ^কর্মার পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছে ধারণা করে তাতে বিভিন্ন ধরণের মান্নত মানা হতো। প্রতি বছর মহরম মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ আশুরার দিনে দূর-দূরান্ত থেকে কাশিদরা এসে এখানে আর্চনা করত। যুগের পরিবর্তনে এসব কু-প্রথা এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন আর সারা বছরেও দেখা মিলেনা কোন মান্নত সামগ্রীর বা কাশিদ দলের। এদিকে এ মসজিদ ও মঠ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা এলাকার কেউই সঠিকভাবে বলতে পারেন না। শত শত বছর থেকে এটি রয়েছে তাঁরা শুধু এতটুকুই বলতে পারেন। ওই গ্রামের ৭০ উর্ধ্ব বয়সের মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, আমরাতো দূরের কথা আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এটি কত সনে স্থাপিত হয়েছে। ওই গ্রামের অধিবাসী আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, আমার দাদা ১৯৮০ সালে ১০৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনিও বলতে পারেননি এ মসজিদ ও মঠ কোন যুগে স্থাপিত হয়েছে। তবে ইতিহাস পর্যালোচনায় যতদূর জানা যায়, ১৫৭৬ খ্রীষ্টাব্দে মোঘল শাসনামলে ইসলাম খাঁ নামের কোন এক ব্যক্তি এ এলাকার শাসনকার্যে নিয়োজিত ছিলেন। ইসলামগাঁথী, ইসলামপুরসহ এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রাম তাঁর নামানুসারেই করা হয়েছে। ধারণা করা হয় তাঁর আমলেই এ মসজিদ ও মঠটি নির্মাণ করা হয়েছে। এসএ ও আরএস খতিয়ান মূলে ৬ শতক জমির উপর কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এ দু’টি স্থাপনা। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মঠটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলতে বসেছে। ইতোমধ্যেই মঠের খোদাইকৃত অনেক প্রাণীর ছবি মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়াও মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য এটি ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছেন মহল্লার একটি পক্ষ। আরেক পক্ষ মঠ না ভেঙ্গে তা দর্শনীয় হিসেবে রেখে দিয়ে মসজিদ স্থানান্তর করার পক্ষে। এদিকে এ মঠ বা মসজিদ না ভেঙ্গে এগুলোর যথাযথ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে অনেক দর্শনার্থী এখানে আসবেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। যেহেতু ইসলামে মসজিদ স্থানান্তরের বিধান রয়েছে। তাই প্রয়োজনে এ মসজিদ ও মঠটি অক্ষত রেখে অন্যত্র নতুন করে মসজিদ নির্মাণ পূর্বক এ দু’টি স্থাপনার আরও সংস্কারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকার সচেতন মহল।