খবর প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৪২ এএম
“স্মরণের আবরণে”
মূল: ডক্টর রাফায়েল রিভিয়ের
অনুবাদক: ডক্টর প্যামেলিয়া রিভিয়ের
আমি করিডোর ধরে হাঁটছিলাম
আর ট্রলিতে তৈজস পত্র গুছিয়ে রাখছিলাম
একটি ছড়ি এবং একটি মখমল গোলাপী ব্লাউজ, এটি আমার বিশেষ পোষাক রীতি,
আমার পছন্দের দোকানটিতে আমি কেনাকাটা করছিলাম !
আমার ছেলে আসতে চেয়েছিল এবং তাই আমি তৈরি করতে চেয়েছিলাম
তার পছন্দের একটি বিশেষ খাবার, যা সে উপভোগ করে!
খুবি স্বাদের খাবার,
পাস্তা এবং সস
আর কিছু পারমেসান পনির!
মায়ের বাড়িতে সুস্বাদু, মজার, মজার খাবার খাওয়া নতুন কিছু নয় !
আমি একা থাকতাম,
দু তিন টি রাস্তার পরেই আমার বাড়ি!
কিন্তু আমার ছেলে খুবই ব্যস্ত,
মনে হয় আজকাল কথা বলার সময় নেই!
আমার ছোট্ট একটি বাড়িতে বসবাস,
সব ভাল ছিল এবং সব কিছু সুন্দর ভাবে চলছিল!
রান্না করা, বাড়ি পরিষ্কার করা এবং কখনও কখনও একটি কবিতা লেখা ,
একটি ছকে বাঁধা জীবন, অপছন্দ করার মত কিছু নেই,
তবে বছরের পর বছর হয়ে গেল!
আমার বন্ধুরা একে একে চলে গেছে অপর পারে এবং আমার প্রিয় স্বামীও,
আমি একা হয়ে গেছি, কিন্তু আমি বিরক্ত নই পৃথিবীর উপর !
যতক্ষণ না আমার ছেলে ভুলে না যায়, আমি একা নই,
কিন্তু আজ রাতের খাবার পরিকল্পনা একসাথে, এটা অনেক ভালো হবে!
একজন অতিথি/পরিদর্শক
আমার পুত্র,
একসাথে বসে মজার রাতের খাবার!
তারপর হঠাৎ করেই
আমার মাথা টা ভারী অনুভব করলাম!
আমি মেঝেতে পড়ে গেলাম,
আহ! সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল!
কেউ সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠেছিল,
আমি মনে করি ওটা আমার জন্য ছিল !
অ্যাম্বুলেন্সে আমাকে তোলা হচ্ছে,
আমি এটুকুই দেখতে পেয়েছিলাম!
শব্দ এবং ঘণ্টা ধ্বনি বরং দ্রুত বাজছিল,
পৃথিবীতে কি ঘটছিল তখন?
আপনি কি কি ওষুধ খান আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল,
কিন্তু আমি শুধু ভাবতে পেরেছিলাম বাগানে জল দেবে কে?
আমরা হাসপাতালের জরুরী শাখায় এসেছি,
একজন মহিলা বললেন, আমার নাড়ির স্পন্দন মিলছেনা !
কাউকে জিজ্ঞেস করলাম,
আমার ছেলেকে ডাকতে!
“এটা কিন্তু ব্যথা দিবে। দয়া করে নড়বেন না, ঠিক আছেন তো আপনি?"
আবার সবকিছু ভারী মনে হলো,
আমার শ্বাস নিতে ,
কোনো হৃতস্পন্দন ই স্থির থাকেনি,
আমি মনে করি এর অর্থ হল মৃত্যু!
আমি অনেক দীর্ঘ জীবন পেয়েছি,
কিন্তু ইদানীং সবকিছু কঠিন মনে হচ্ছিল,
আজ রাতটা অনেক কঠিন ছিল!
নতুন করে আমি জীবন শুরু করতে চাইনি!
তারা আমাকে, ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছিল সূঁচ আর মুখোশ চারিদিকে,
কিন্তু ততক্ষণে আমার হৃৎপিণ্ড আমাকে ছেড়ে গিয়েছিল, আমি জানি কিছুই কখনও স্থায়ী হয় না!
অবিরত তরঙ্গ আঘাত এবং নল এর ব্যাবহার, তারা আমাকে ক্ষণিকের জন্য ফিরে পেয়েছিল,
হৃৎপিণ্ড আক্রান্ত হয়েছে বলে, আমার ফুসফুসে দম দেবার চেষ্টা করা হচ্ছিল !
তারা আমাকে উপরে নিয়ে গেল, কিন্তু আমি সত্যিই সেখানে বর্তমান ছিলাম না,
আবার আমি ভয় পেয়ে গেলাম, কেউ কি আসলেই ভাবে আমাকে নিয়ে?
হৃৎপিণ্ড তাৎক্ষনিক গতিপথ খুঁজে পেয়েছিল, শুরু করা হয়েছিল শিরায় নোনা জল সরবরাহ!
কিন্তু মাত্র ছটা বাজার ১ মিনিট পর আবারও ঘটে হৃৎপিণ্ডের ছন্দপতন!
ডাক্তার আর সেবিকা দের দলটি ছুটে আসে, আমার বুকে চাপ দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ফেরাতে,
এই সময় টা ছিল চলে যাবার মুহূর্ত, আমার নিজের কাছে নিজেকে স্বীকার করা !
সেবিকা এবং ডাক্তার রা, আমার পাশে তাঁরা সবাই দাড়িয়েছিল একসাথে
1, 2, 3 আবার, আমি চমকে উঠলাম তরঙ্গ আঘাতে !
কিন্তু আর আমার ব্যথা ছিল না,
আমি কোন দোষারোপ করিনি!
কিন্তু শুধু জীবন চালিয়ে যেতে বেঁচে থাকা ,
এটা ঠিক বুদ্ধিমানের কাজ হবে না!
আমি ফিসফিস করে নিজেকে বললাম আমি প্রস্তুত!
তাদের সর্ব প্রকার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও,
ছটা বাজার আধ ঘণ্টা পরে, আমার প্রস্থান ঘটে ছিল,
আমি জানতাম তারা অনেক চেষ্টা করেছে,
আমি জানতাম তারা সবাই সেখানে ছিল!
কিন্তু আবারও ভাবলাম, কেউ কি আমার কথা ভাবে, আমাকে মনে করে?
তখন ডাক্তার বললেন,
“যদি সবাই প্রস্তুত থাকে
একটু সময় নেওয়া যাক,
এই ভদ্রমহিলাকে মনে রাখার জন্য!
তিনি একটি বাড়িতে থাকতেন,
তিনি বাজার করতেন ঐ রাস্তার কোণের দোকানটি তে!
একটি মখমল গোলাপী ব্লাউজ
তিনি পরতেন! আজ আমরা তার শোক করছি,
তার একটি ছেলে আছে যাকে তিনি খুব ভালোবাসতেন !
তিনি তার ভালবাসা আর সহৃদয়তার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন
আমাদের কাছে, সে ছিল না
শুধু একজন রোগী,
তিনি একজন নাগরিক, একজন নারী,
আমাদের জাতির একজন সদস্যা!
বিরতির জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ!
আমি জানি তাদের নিরব প্রার্থনা করার কোন প্রয়োজন ছিল না,
কিন্তু আমাকে মনে রাখার জন্য,
আমি সবসময় এটাই আকাঙ্ক্ষা করেছিলাম।