NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

"নওগাঁ জেলায় ধর্মপ্রচারক মহাপুরুষ"


এম আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশিত:  ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৪২ এএম

"নওগাঁ জেলায় ধর্মপ্রচারক মহাপুরুষ"

এম আব্দুর রাজ্জাক, বগুড়া থেকে : বদলগাছী, পত্নীতলা,ধামইরহাট ও জয়পুরহাট অঞ্চলে ধর্মপ্রচারক মহাপুরুষ হযরত কোরবান আলী পীর সাহেব (রঃ) বাংলা ১৩২৯ সালে চকভারুনিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম খাদেম উদ্দিন ওরফে খোদাবক্স ও মাতার নাম গরীবুন নেছা। তাঁর পিতা অত্র এলাকার একজন পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন।সে সময় কাগজের বেশি প্রচলন ছিল না বিধায় তিনি ছেলেদের তেঁতুলের বিচি দ্বারা গণনা শিক্ষা ও তালপাতায় হস্তাক্ষর শিক্ষা দিতেন। তিনি অত্যাধিক জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। এলাকাতে তাঁর জ্ঞানের প্রভাব এতদূর ছড়িয়ে পড়েছিল যে মানুষ কোন বিপদ বা সমস্যা নিয়ে তার কাছে আসলে সৎ পরামর্শ ও সুষ্ঠু সমাধান বলে দিতেন।

বাংলা ১৩৪৭ সালে ১৮ বছর বয়সে দোগাছি গ্রামে এক পরহেজগার পরিবারে হযরত পীর ছাহেব কেবলার বিবাহ করেন। তার শ্বশুরের নাম আলহাজ্ব মিয়াজন আলী। হুজুর কেবলা (র) বাংলা ১৩৫১ সালে তরিকতের বায়াত গ্রহণ করার জন্য ফুরফুরা শরীফের গমন করেন।ইংরেজি ১৯৬০ সালে ২২ জন সঙ্গীসহ হুজুর কেবলা হজ্বে গমন করেন। হুজুর বলেন হজ্বে গিয়ে যত জায়গা জিয়ারত করি আমি শুধু কাঁদি আর কাঁদি। মরহুম হুজুর কেবলার শিক্ষা প্রচারে নিমিত্তে বহু মাদ্রাসা,মসজিদ, ঈদগাঁ, হাইস্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন।

চকভারুনিয়া তে মাদ্রাসা মসজিদ ও ঈদের জামাত কায়েম করেন। হুজুর কেবলার ওয়াজ নসিহত, কেতাব প্রণয়ন, স্বাভাবিক চরিত্র, ইবাদত-বন্দেগী জনসেবা ও দ্বীনের খেদমত আর বহু বিষয়ে ইসলামের খেদমত জনহিতকর কাজ সমাপ্ত করার পর মহান আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় বান্দাকে ডেকে নেন।রমজানের অর্ধেক যেতেই হুজুর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হলেন। দিন দিন শরীর খারাপ হচ্ছিল। উদারাময় দেখা দিলে জয়পুরহাটের বিশিষ্ট ডাক্তারদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ করা হচ্ছিল। এমনকি হুজুর কেবলা স্নেহের খাদেম ও মুরিদ জয়পুরহাটের জিয়াউল হক রানা চৌধুরীর গাড়িতে দিনরাত ডাক্তারগণ হুজুর কেবলার চেকআপের জন্য আসা-যাওয়া করেছেন। ডাক্তার চকভারুনিয়াতে ও জয়পুরহাটে বোর্ড বসাতেন হুজুর কেবলার আরোগ্যের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার জন্য।

ইংরেজি ১৬ ই ডিসেম্বর ২০০১ হিজরী ১৪২২, ২৬ রমজান দিনগত রাত অর্থাৎ লাইলাতুল কদর রাত্রিতে ইসলামের ঝান্ডাবাহী এই বীর সেনাপতি তামাম আত্মীয়-স্বজন মুরিদ মোতাকেদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে এহধাম ত্যাগ করে আল্লাহ পাকের দরবারে রওয়ানা হলেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)১২ ডিসেম্বর ২০০১ সনের শুক্রবার দিন জুমার নামাজ হুজুর কেবলার বড় জামাতা হযরত মুহাম্মদ ফজলুল হক সাহেবের ইমামতিতে সু-সম্পন্ন হয়। হুজুর কেবলার ইচ্ছা মোতাবেক তার প্রতিষ্ঠিত খানকা শরীফ এর দক্ষিণ পার্শ্বে আসরের নামাজের পূর্বেই তাকে দাফন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় উত্তরবঙ্গের ধর্মপ্রচারক এক মহাপুরুষের বর্ণাঢ্য কর্মযজ্ঞ।