NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

হিজাব, মাহসা আমিনির মৃত্যু, এবং আন্তর্জাতিক কন্যা দিবসের প্রহসন -পামেলিয়া রিভিয়ের


খবর   প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:৩৫ এএম

হিজাব, মাহসা আমিনির মৃত্যু, এবং আন্তর্জাতিক কন্যা দিবসের প্রহসন -পামেলিয়া রিভিয়ের

ইরানের নৈতিকতা পুলিশ হিজাব নিয়ে নারীদের আর ‘বিরক্ত’ করবে না, নতুন প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আজ, আমি এটা দেখে খুবই আনন্দিত যে ইরানি নারীরা তাদের পছন্দের পোশাক পরার অধিকারের জন্য দাঁড়িয়েছে এবং তারা তা অর্জন করেছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি সেই সমস্ত মহিলাদের জন্য সুসংবাদ, যারা তাদের পিতামাতা, পুরুষ ভাইবোন, স্বামী, তথাকথিত নৈতিক পুলিশ বাহিনী এবং পশ্চাদপদ রাষ্ট্রীয় নীতি দ্বারা হিজাব, নেকাব এবং বোরখা পরতে বাধ্য হয়। আমি মাহসা আমিনীর মৃত্যুর জন্য প্রতিবাদ করেছিলাম এবং কেঁদেছিলাম। যখন আমার ইরানি বন্ধুরা প্রতিদিন আমাকে আন্দোলনে নির্যাতিত নারীদের ছবি, আর মাহসা আমিনীর মৃত্যুর ছবি পাঠাতো আমি অসহায় বোধ করতাম! কারণ আমি কাউকে বাঁচাতে পারিনা বলে!  আমার কষ্ট কমানোর একমাত্র উপায় ছিল তার নির্মম মৃত্যুর কথা লেখা। তাই আমি 2022 সালে কন্যা দিবস উপলক্ষ্যে,ইরানের নৈতিক পুলিশ, একজন নিষ্পাপ, সুন্দর একটি শিশু, একটি অল্প বয়স্ক মেয়ে মাহসা আমিনীর মৃত্যুর এবং বিতর্কিত হিজাব পরা বিষয় নিয়ে ইংরেজিতে দুটি নিবন্ধ লিখেছিলাম । আজ তার অনুবাদ প্রকাশ করছি শুভ সংবাদ নিয়ে ইরানি নারীদের জন্য! শান্তিতে থাকুন, মাহসা আমিনী!   মহিলাদের মাথা ঢেকে রাখা ছিল পুরনো ঐতিহ্য, যা সৌদি আরব, পারস্য, এশিয়া এবং ইউরোপে প্রচলিত ছিল; এই প্রথা মুহাম্মদের আগেই আরবদের মধ্যে ছিল। হার্ভার্ডের ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক রেজা আসলান মনে করেন যে "পর্দা বিষয়টি চমকপ্রদ, কিন্তু কুরআনে কোনো মুসলিম নারীর উপর এটি চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।"  তবে, "হিজাবের আয়াত" সাধারণ মহিলাদের জন্য প্রকাশ করা হয়নি; এটি কেবল নবীর স্ত্রীদের জন্যই ছিল। এতে বলা হয়েছে, "বিশ্বাসীগণ, নবীর ঘরে প্রবেশ করো না...যদি না তোমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এবং যদি তোমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়...তবে দেরি করো না। এবং যখন তোমরা নবীর স্ত্রীদের কাছে কিছু চাও, তা পার্থক্য রেখে এবং পর্দা করে চাও। এটি তোমাদের হৃদয় এবং তাদের হৃদয়ের পবিত্রতা নিশ্চিত করবে” (৩৩:৫৩)।  সেই সময় নবীর ঘর ছিল ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনের কেন্দ্র, যা একটি সম্প্রদায়ের মসজিদ ছিল, তাই এই সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল। আসলান দাবি করেন যে পর্দা কেবল মুহাম্মদের স্ত্রীর জন্য প্রযোজ্য ছিল; পর্দা করার শব্দ "দারাবাত আল-হিজাব" মুহাম্মদের স্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সমার্থক এবং পরিবর্তনযোগ্য ছিল।  এই কারণে, নবীর সময় অন্য কোনো উম্মাহর নারী হিজাব পালন করতেন না। এটি নির্ধারণ করা কঠিন যে ঠিক কখন মুসলিম নারীরা নবীর স্ত্রীদের অনুসরণ করেছিলেন, তবে এটি সম্ভবত নবীর মৃত্যুর পর ছিল। তবে হিজাব পরার জন্য নারীদের নিয়ম অন্যান্য পণ্ডিতরাও নির্ধারণ করেছিলেন। রেজা আসলান লেইলা আহমেদের উদ্ধৃতি দেন, যিনি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, "পুরো কুরআনে মুহাম্মদের স্ত্রীদের ছাড়া অন্য কোনো নারীর জন্য হিজাবের কথা বলা হয়নি।"  যদি আমরা ইতিহাসের দিকে তাকাই, আমরা দেখব যে সম্মানিত এবং মর্যাদাপূর্ণ নারীদের প্রতীক হিসাবে খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতকেও মাথা ঢাকার প্রথা প্রচলিত ছিল। তবে প্রাচীনকালে এই আসিরীয় নিয়ম দাস এবং পতিতাদের উপর আরোপিত হয়নি।

গ্রিক, রোমান, জরাথ্রুস্টিও, ইহুদি এবং পৌত্তলিক আরবদের মধ্যেও পর্দার ব্যবহার ছিল। ভারত এবং বাংলাদেশেও মহিলারা ইসলাম পূর্ব সময়েও সম্মানিত নারীদের চিহ্ন হিসাবে মাথা ঢেকে রাখতেন। ইংল্যান্ডের চিকিৎসা শিক্ষার পরিচালক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এম আমির সারফরাজ তার প্রবন্ধে 'হিজাবের ধারণা' বর্ণনা করেছেন যে, "ভারতের কিছু হিন্দু বর্ণের নারীরা হিজাবের একটি রূপ পালন করতেন, যা ইসলাম পূর্বকালেও প্রচলিত ছিল, যা 'ঘুঙট' নামে পরিচিত।" ইহুদি ঐতিহ্যে, অভিশপ্ত ছিলেন সেই স্বামী, যদি কারো স্ত্রীর চুল দেখা যেত, কারণ এটি বিশ্বাস করা হতো যে এতে বাড়িতে দারিদ্র্যের আমন্ত্রণ ঘটে। একইভাবে, খ্রিস্টান ঐতিহ্যে, একজন নারী মাথা ঢেকে না রাখলে তার নিজের মাথাকে অসম্মান করতেন, যা "তার চুল কামিয়ে ফেলার সমতুল্য ছিল।"  এম আমির সারফরাজ আরও উল্লেখ করেন যে, "মধ্যযুগ পর্যন্ত, ইউরোপীয় রাজকীয় পরিবার এবং অভিজাতরা মাথার পোশাক বা পর্দা পরতেন। ব্রিটিশ ইতিহাস জুড়ে, অভিজাত শ্রেণীর শিষ্টাচারের অংশ হিসাবে টুপি ও ফ্যাসিনেটর প্রচলিত ছিল। মাথার পোশাক সামাজিক অবস্থানও নির্দেশ করে।

পশ্চিমা, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু খ্রিস্টান গোষ্ঠী এখনও এটি পালন করেন। বেশিরভাগ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসিনীরাও এখনও 'হিজাব' পরেন।"   বেশিরভাগ পণ্ডিতরা একমত যে হিজাবের বিধান নবীর স্ত্রীদের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য প্রকাশ করা হয়েছিল। নবী তার স্ত্রীদের পুরো শরীর পর্দা বা চাদর দিয়ে ঢাকতে বলেছিলেন, যাতে তারা সাধারণ জনগণ থেকে আলাদা থাকে (যেহেতু নবীর কথা কুরআনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল) এবং জনগণকে অনুমতি ছাড়া তার ঘরে প্রবেশ করতে না বলা হয়েছিল এবং দরজায় কড়া নাড়তে বলা হয়েছিল।   নবী মুহাম্মদের শাসনকালে, নবী মসজিদে, তার ঘরে এবং উঠোনে জনসাধারণ ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করতেন। ফলে তার স্ত্রীরা খুব কমই ব্যক্তিগত সময় পেতেন।  

কুরআনের আয়াতগুলো স্পষ্টভাবে নবীর ঘরে মানুষের প্রবেশের কথা বর্ণনা করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে নবীর বিশ্রামের সময় দিনে বা রাতে পুরুষ বা বহিরাগতদের তার ঘরে প্রবেশের একটি সীমারেখা থাকা উচিত।   এটি সত্য যে পবিত্রতা ও ধার্মিকতা বজায় রাখার জন্য কুরআন পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ের জন্য তাদের পোশাক, প্রজনন অঙ্গ, বিশেষ করে বাহ্যিক অঙ্গ, এবং অন্যদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সুপারিশ করেছে। নারীদের জন্য, বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে তারা তাদের সৌন্দর্য অপরিচিত পুরুষদের সামনে প্রকাশ করবে না, স্বামী এবং নিকট আত্মীয়দের (বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য আত্মীয়দের) ব্যতীত, এবং বাইরে গেলে তাদের বক্ষ একটি চাদর বা ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখবে। মনে রাখতে হবে যে আরবের পুরুষ ও নারী মরুর অভাব জনিত কারণে মাথায় আভরণ পড়তে হয়. যা পুরুষ ও নারীরা এখনো পরিধান করে!

মাথার কাপড়ের অংশ বিশেষকে  বক্ষে ঝুলিয়ে দেবার কথা বলা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়! কুরআনের আয়াত অনুসারে, মুসলিম নারীদের তাদের উপরিভাগে একটি অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে ঢাকা ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল, বিশেষ করে বক্ষ ঢাকার জন্য (নেকাব নয়), যাতে তারা মুসলিম নারী হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং রাস্তার খারাপ পুরুষদের দ্বারা হয়রানি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।   হাদিস এইভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে: নিয়মিত ধর্মীয় সভায়, নতুন মুসলিম নারীরা নবীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন কীভাবে তারা জাহেলিয়াতের যুগের দুষ্ট পথচারীদের থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।  এটি সম্ভব যে নবীর পরামর্শ মুসলিম পুরুষ ও নারীদের প্রভাবিত করেছিল, যারা পরকালের বেশি পুরস্কারের আশায় নারীদের প্রতি পর্দা/হিজাব প্রয়োগ করেছিলেন। তবে কুরআনের আয়াত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে হিজাব ও নেকাব, বা মুখ ও তালু ঢাকার নিয়ম মুসলিম নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।  

একজন মুসলিম নারীর জন্য এটি তার পছন্দ/ব্যক্তিগত ইচ্ছা, যদি তিনি নবীর স্ত্রীদের জন্য করা সুপারিশ অনুসরণ করতে চান, কারণ এটি সুন্নাহর অংশ (সুন্নি মুসলিমরা নবীর জীবদ্দশায় তিনি যা করেছেন তা অনুসরণ করে)। তবে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, নেকাব, হাতের মোজা , এবং হিজাব (মাথার পোশাক পরিধানের একটি কাপড়) ইত্যাদি পরা মুসলিম নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।   সুতরাং, হিজাব ইসলামে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নয়, কারণ এর কোনও ধর্মীয় তাৎপর্য নেই। এটি মুসলিম মহিলাদের উপর নৈতিক মূল্যবোধ হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।  আমাদের দায়িত্বশীল হতে হবে নারীদের পর্দা/চাদর এবং হিজাব/নেকাব পরা এবং হাতের মোজা ব্যবহারের অর্থ বোঝাতে, কারণ এটি এমন একটি মুহূর্ত যা নারীদের তাদের সমান মানবাধিকার ফেরত দেওয়ার এবং নারীদের ক্ষমতায়িত করার সুযোগ, যাতে তারা তাদের জীবনে কী চায় তা বেছে নিতে পারে।

  আমাদের জ্ঞানের আদান-প্রদান করতে হবে, যাতে অজ্ঞতার পর্দা সরানো যায় এবং ইসলামিক ও অ-ইসলামিক চিন্তার মধ্যে ফারাক কমানো যায়, বিশেষত নারীদের ও ইসলামের প্রতি ক্ষতিকর তথ্যগুলু ।  অমর্ত্য সেন, বিখ্যাত সামাজিক বিজ্ঞানী এবং নোবেল বিজয়ী, উল্লেখ করেছেন যে "মানুষ সর্বদাই দলভুক্ত হয়ে বাস করেছে এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবন প্রায়শই দলগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করেছে। কিন্তু দলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ্যালেঞ্জ বিশাল হতে পারে, বিশেষ করে দলীয় সদস্যদের বিভিন্ন স্বার্থ ও উদ্বেগ থাকলে। তাহলে কীভাবে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত?"  আমার ভাবনা হলো, বিশেষ করে মুসলিম নারীদের হিজাব পরার প্রসঙ্গে কীভাবে এই দলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত?  দলীয় আচরণ বা সামাজিক পছন্দকে প্রায়শই অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোচিত করা হয়, যেখানে এটি প্রজ্ঞাময় দার্শনিক চিন্তার সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু যখন আমরা ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে একটি সামাজিক পছন্দ বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করি, তখন এটি শুধুমাত্র একটি জাগতিক সমস্যা নয়, বরং এটি ব্যক্তির বিশ্বাসের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত হয়ে পড়ে। তবে এটি মূলত নারীর সামাজিক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের বিষয়, যা মাহসা  আমিনির মৃত্যুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।   একজন নারীকে তার পরিধেয় বস্ত্র, যেমন একটি মাথার স্কার্ফ সরে যাবার ঘটনার জন্য জন্য শাস্তি বা মৃত্যুদন্ড দেওয়া যায় না।   কোনো রাষ্ট্রের অধিকার নেই নারীদের পোশাক বা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বা কঠোর নিয়ম করার, যা ২১ শতকে নারীদের শাসন করবে।  ইরানের সামাজিক আন্দোলন পরিষ্কারভাবে দেখায় যে এটি মুসলিম নারীদের নিজেদের পছন্দ হওয়া উচিত। তাই আমাদের উচিত আমাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা, মুসলিম নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা এবং তাদের হিজাব পরতে বাধ্য না করা কিংবা নতুন কোনো ফতোয়া জারি করে নারীদের শ্বাসরোধ করে হত্যা না করা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানের জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকারকে সমর্থন করছে, যা বন্ধ করা উচিত!

 ইরানিদের সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশের সীমিত সুযোগ রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের হয়ে কণ্ঠস্বর হওয়া, তাদের কন্যাদের এবং ইরানের মানুষকে রক্ষা করা। একটি টেকসই কন্যাদিবস উদযাপন করতে এবং মায়েদের, সমস্ত নারীদের জন্য শান্তি আনতে, আমাদের—বিশ্বব্যাপী মায়েদের—কণ্ঠ তুলতে হবে এবং মাহসা  আমিনির উপর করা জঘন্য কাজের নিন্দা জানাতে হবে।  ইরানি নারীরা সামাজিক আন্দোলনে মাথার পর্দা পুড়িয়ে, ছুড়ে ফেলে এবং ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গেছে। কিন্তু এই বিশৃঙ্খলার মাঝেই আমরা আন্তর্জাতিক কন্যাদিবস উদযাপন করছি। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক কন্যাদিবস উদযাপন করা কি উপহাস নয়?  সম্প্রতি বাংলাদেশে, ঐতিহ্যবাহী বাঙালি পোশাক না পরার কারণে অশান্ত জনতা অনেক নারীকে লাঞ্ছিত করেছে। তারা কারখানা ও বাড়িঘরসহ মন্দির ও মসজিদ ধ্বংস করে।

মাত্র এই বুধবার সারাদেশে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তিনজনকে, গতকাল রাজশাহী রেলস্টেশনে ছাত্র দাবি করে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তথাকথিত সহিংস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছাড়েনি এক মানসিক অসুস্থ যুবক তুফাজ্জলকে।  তারা হিন্দু ও জাতিগত সম্প্রদায়ের ওপরও হামলা চালায়। এসব ঘটনা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অশুভ সংকেত বহন করে। কারা এই খুন বা অগ্নিসংযোগে ইন্ধন দিচ্ছে? নারীকে লাঞ্ছিত করেছে। এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।   এটা দুঃখজনক যে আমরা শুধুমাত্র ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদের কন্যাদের জীবন রক্ষা করতে পারিনি। আমরা কি ধর্মীয় ফতোয়া থেকে আমাদের কন্যাদের রক্ষা করতে পারব, যা ইসলামিক রাষ্ট্রগুলো প্রয়োগ করছে? যদি বিশ্বজুড়ে নারীরা, মায়েরা সংগঠিত না হতে পারে এবং সংহতি দেখাতে না পারে, তাহলে তারা কীভাবে তাদের কন্যাদের রক্ষা করবে? আর এই ক্ষেত্রে পিতাদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?  লেখক: পামেলিয়া রিভিয়ের, পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাবিদ্যা এবং বিজ্ঞানের মাধ্যমে শান্তি ও সংঘর্ষ শিক্ষার একজন বিশেষজ্ঞ!  অনুবাদক: ফাহমিদা ফাইরুজ নাদিয়া, শিক্ষার্থী, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ।