খবর প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম
‘বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ানো ভালো লাগার একটি বিষয়। তাই সময় পেলেই বেরিয়ে পড়ি’। এমনটাই বলেন রোকেয়া হায়দার। রোকেয়া হায়দার, যার কর্মজীবনের চার দশক কেটেছে ভয়েস অব অ্যামেরিকার বাংলা বিভাগে। বাংলা ভাষায় সংবাদ উপস্থাপনা করে পেয়েছেন তুমুল খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা। শুধুমাত্র তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ ও আবিষ্ট ভিওএ ‘ফ্যান ক্লাব’র করেছেন অগণিত বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতাদের। নিউ ইয়র্ক বাংলা ডটকম এর চট্টগ্রাম বুরো প্রধান ও বাংলাদেশের অন্যতম শ্রোতা ক্লাব নেতা যুবরাজ চৌধুরীর একক আয়োজনে ২৪শে ফেব্রুয়ারি শনিবার বাংলাদেশ স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জীবনের গল্প’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানে তিনি তুলে ধরেন তাঁর কর্মময় জীবনের কিছু অংশ। বলেন, কিভাবে একটি রেডিও’র সংবাদ, তাদের পরিবেশনা, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা সব কিছু একটি ‘ফ্যান ক্লাব’ তৈরি করে তোলে তা সাধারণের জন্য অনেক বড় একটি বিষয়। এই ফ্যান ক্লাব আবার বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের সাথেও জড়িত। নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কাজ করেন এর সদস্যরা। সেসব খবর শ্রোতাদের কাছে প্রচার করতেন রোকেয়া হায়দার। তাঁর সাবলীল ও প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আজো শ্রোতা হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে।
১৯৮৪ সালের মে মাসে ঝিনাইদহে ফ্যান ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রথমবারের মতো এই ক্লাবের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হন বলে জানান কিংবদন্তী এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। বলেন, ফ্যান ক্লাব তাঁর কাছে একটি পরিবারের মতো। তাই যখনই বাংলাদেশে এসেছেন তাঁর সাথে দেখা করতেন ক্লাব সদস্যরা। তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগার কথা জানাতেন তাঁকে। গল্পের ফাঁকে তুলে ধরেন এই ক্লাবের একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আকবর হায়দার কিরনের কথা। বর্তমানে নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ও ভয়েস অব অ্যামেরিকার সাবেক নিউ ইয়র্ক সংবাদদাতা। বাংলাদেশে থাকতে ফ্যান ক্লাবের হয়ে কিভাবে কাজ করেছেন এবং বর্তমানে প্রবাসী হয়েও কাজ করে যাচ্ছেন তাই তুলে ধরেন তিনি।
কবে থেকে যুক্ত হলে গণমাধ্যমে, এমন প্রশ্নের উত্তরে রোকেয়া হায়দার বলেন, ‘শুরুটা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে চট্ট্রগ্রাম বেতারে ‘স্থানীয় সংবাদ’ পড়ার মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে পার্টটাইম খবর পড়ার সাথে যুক্ত হই। আগে নাটক, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করলেও সেসবে সময় বেশি দিতে হতো, তাই খবর পড়াকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নেই’। সংবাদ পাঠিকা ছাড়াও তাঁর আরো পরিচয় আছে। রিপোর্টং করতে পছন্দ করতেন তিনি। বিশেষ করে স্পোর্টস রিপোর্টার হিসেবে অনেক বড় বড় ইভেন্ট কাভার করেছেন গুণী এই মানুষটি। খেলাধূলা ছাড়াও, ভিওএ’র হয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অনেক বড় বড় ব্যক্তির। যাদের মধ্যে অন্যতম মাদার তেরেসা। কলকাতায় ১৯৮৭ সালের অগাস্টে মাদারের সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
বিখ্যাত এই মানুষটির সান্নিধ্য তাকে আজও বিমোহিত করে। এটি তাঁর জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বলে উল্লেখ করেন রোকেয়া। কথার কথায় নিজের সম্পর্কেও বলেন রোকেয়া হায়দার। বলেন, শুধুমাত্র কণ্ঠস্বর চিনে অনেকেই কথা বলতে আসতেন এমনকি এখনো আসেন, যা তাকে সব সময়ই আনন্দ দেয়। এই উপলক্ষে আকবর হায়দার কিরনের বিশেষ ভিডিও ম্যাসেজ ছিলো বিশেষ আকর্ষণ এবং সেলিব্রেটি ফটো সাংবাদিক রফিকুর রহমান রেকুর উপস্থিতি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে তাঁর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আয়োজক যুবরাজ চৌধুরী এবং সাথে ছিলেন আরেক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব তানবীর সিদ্দিকী। এর আগে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় বিশিষ্ট এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে।