NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

মিয়ানমার সংকট নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতকে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র


খবর   প্রকাশিত:  ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

মিয়ানমার সংকট নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতকে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমার সংকট নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতকে সতর্ক করল যুক্তরাষ্ট্র ডোনাল্ড লু মিয়ানমারের চলমান সংকট আরো তীব্র হতে পারে বলে বাংলাদেশ ও ভারতকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু মিয়ানমার নিয়ে ওই আশঙ্কার কথা জানান। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও ভারতকে মিয়ানমার সংকটের সম্ভাব্য প্রভাব বিষয়ে সতর্ক করেন।  যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে মার্কিন পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা দপ্তর ও জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ ও ভারতের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে কথা বলেন।  

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডোনাল্ড লুর আশঙ্কা, রোহিঙ্গা সংকট ও মিয়ানমারে চলমান অস্থিরতার কারণে যে নিরাপত্তাঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, তা আরো খারাপ হবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে এর প্রভাব অব্যাহত থাকবে। লুর মতে, মিয়ানমার পরিস্থিতির শিগগিরই উন্নতি হচ্ছে না। এ কারণে বাংলাদেশ ও ‘সম্ভবত ভারতের জন্যও’ যে শরণার্থী সংকট ও নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে, যা সামনে আরো গভীর হতে পারে।  ডোনাল্ড লু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে যে দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দেখভাল করেন সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত অন্যতম।   এমন এক সময় তিনি মিয়ানমার নিয়ে সতর্ক করলেন, যখন দেশটির সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশ ও ভারতে নতুন মাত্রায় পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অনেক এলাকা বিদ্রোহী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। আবার অনেক এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই চলছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।  

ইউএসআইপির আলোচনায় ডোনাল্ড লু ভারতসহ অন্য অংশীদারদের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে সফল কৌশলের উদাহরণ হিসেবে শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সম্প্রতি মালদ্বীপ সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন লু। তিনি জানান, মালদ্বীপ কর্তৃপক্ষকে তিনি বলেছেন যে চীন যদি অন্যদের কাছ থেকে সত্যিকারের প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় এবং বেইজিং তা জানতে পারে, তবেই চীন কোনো দেশের ভালো অংশীদার হবে।  ডোনাল্ড লু ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের নেতৃত্বের কথা স্বীকার করেন। চীনা ঝুঁকির দিকে ইঙ্গিত করে লু বলেন, শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তার সার্বভৌমত্বের পক্ষে আমাদের সবার দাঁড়ানোর সত্যিকার অর্থে প্রয়োজন ছিল।   এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীকে প্যাট্রল বোট দিচ্ছে। আফ্রিকার উপকূলীয় রাষ্ট্রগুলোতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার বিষয়েও ইঙ্গিত দেন লু। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মতানৈক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ডোনাল্ড লু ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক ও জোরালো সংঘাতের’ কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, মিয়ানমার পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি যথেষ্ট সময় ব্যয় করেছিলেন।

 লু বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ, সেখানে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বার্মায় (মিয়ানমারে) অস্থিরতা এই অঞ্চলের জন্য কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে অনেক সময় ব্যয় করেছি।’ তিনি বলেন, ‘এক মিলিয়নেরও বেশি লোকের জন্য ঢাকা যে উদারতা দেখিয়েছে তার সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজ করেছে। অনন্য এই উদারতা দেখার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবির কক্সবাজার পরিদর্শন করার সুযোগ আমার হয়েছিল। আমি এসব শরণার্থীকে ঘরে ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাও প্রত্যক্ষ করেছি।’  ডোনাল্ড লু বলেন, “বার্মার (মিয়ানমারের) পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। এর উদ্বেগের কারণ হলো বাংলাদেশ ও ‘সম্ভবত ভারতের জন্যও’ যে শরণার্থী সংকট ও নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে, যা সামনে আরো গভীর হতে পারে।”  লু বলেন, ‘আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং এই অঞ্চলে আমাদের অংশীদারদের, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতকে সমর্থন করতে হবে, যাতে তারা তাদের দেশের ভেতরে অস্থিতিশীলতা বাড়তে না দিয়ে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারে।’  ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল প্রসঙ্গে ডোনাল্ড লু বলেন, ‘এটি এমন জায়গা যেখানে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ অন্যান্য দেশ নিজেদের প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা করছে। আমরা আরো ভালো প্রস্তাব দেওয়ার মাধ্যমে জয়ী হব।’